ফেসবুকে সারাদিন বিনাকারনে আমরা প্রচুর সময় নষ্ট করি। কিন্তু ফেসবুকে ব্যয় করা এ সময়টুকু ব্যয় করে ঘরে বসেই অনেক বড় ব্যবসা গড়ে তোলা সম্ভব। ঘরে বসেই সম্ভব প্রচুর আয় করা। অনেককেই বিভিন্ন সময় এ ব্যপারে বিচ্ছিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি। ক্রিয়েটিভ আইটিতেও এসইও কোর্স করানোর সময় সবাইকে ওডেস্ক কিংবা অন্যকোন মার্কেটপ্লেসে কাজ না করে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী করার জন্য সোশ্যালমিডিয়াকে ব্যবহার করে নিজের একটি অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে আয় করার জন্য উৎসাহিত করি। এব্যাপারে বিভিন্ন টিপস সবসময় আমার স্টুডেন্টরা পেয়ে এসেছে।
ইতিমধ্যে আমার কয়েকজন নারী স্টুডেন্ট সেই অনুযায়ি কাজ করে সফল হয়েছে। হয়ত এখনও বড় উদ্যোক্তা হতে পারেনি এখনও। তবে বড় উদ্যোক্তা হবে একদিন সেই বিশ্বাসটা আমার রয়েছে। সেইরকম কিছু টিপস নিয়ে আমার আজকের এ আর্টিকেলটি। চেষ্টা করেছি, চেকলিস্টের মত করে লেখার।
ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা প্রচার করার বিষয়ে আমার অন্য একটি আর্টিকেল রয়েছে। সেটিও পড়তে পারেন।
লিংকঃ http://genesisblogs.com/tutorial-2/638
ফেসবুকের মাধ্যমে যে ব্যবসা তাকে, এফ কমার্স বলে। টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে। শুধুমাত্র ফেসবুকে একটি পেজ খুলেই ব্যবসা শুরু করা যাবে। ইতিমধ্যে দেশে অনেকেই করছেন এরকম কিছু। বাংলাদেশে এখন পযন্ত যে কয়টি আমার চোখে পড়েছে, সেই অনুযায়ি বলতে পারি, এখন পযন্ত রাজশাহীর খাটি আম, সুন্দরবনের খাটি মধু, জামদানী শাড়ি, বিভিন্ন গিফট আইটেম, ড্রেস সম্পর্কিত প্রোডাক্ট নিয়ে অনেকে ব্যবসা শুরু করেছেন। এ এফ কমার্স ব্যবসা করার জন্য খরচও করার প্রয়োজন হয়না।
ফেসবুক ফেসবুকে ব্যবসা সম্পর্কিত একটি পেজ তৈরি করতে হবে। পেজের নামটি হবে ব্যবসার নাম। লং টাইম ব্যবসা করার টার্গেট করেই নামটা ঠিক করতে হবে।
ব্যবসা সম্পর্কিত একটি সুন্দর লোগো ডিজাইন করে নিতে হবে। যাকে দিয়ে লোগোটি ডিজাইন করাবেন, তাকে দিয়ে একটি থিম ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
সুন্দর এবং অবশ্যই প্রফেশনাল একটি ফেসবুক কভার ডিজাইন করিয়ে নিন।
ফেসবুক পেজটির About পেজটিতে ব্যবসা সম্পর্কিত তথ্যগুলো ভালভাবে পূরণ করুন।
উদাহরণঃ https://www.facebook.com/JamdaniVille/ এ পেজের About পেজটি দেখতে পারেন। আরও ভাল কিছু লিখতে পারেন।
পেজটি প্রস্তুত। উপরের ৪টি ধাপের প্রস্তুতির জন্য সময় ২দিনের বেশি ব্যয় করা মোটেই উচিত হবেনা। তাহলে শুরুতেই আপনার পদক্ষেপ ভুল হবে। ৫ম ধাপটিতে, পেজের মেম্বার বাড়ানো শুরু করতে হবে। সবার প্রথমে নিজের ফ্রেন্ড লিস্টের সবাইকে, নিজের কাছের কোন বন্ধুকে অনুরোধ করে, তার ফ্রেন্ডলিস্টের সবাইকে এ পেজে যুক্ত করে নেওয়ার জন্য ইনভাইট করুন। এ পদ্ধতিতেই চেষ্টা করুন পেজে ১০০০ টা লাইক যুক্ত করার।
এ ধাপটিতে এসেই অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি শুরু করতে হবে। অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি শুরু করলে, পেজ মেম্বারও নিয়মিত বৃদ্ধি পাবে।
মার্কেটপ্লেসের বাইরে গিয়ে অনলাইনে এসব ব্যবসার ক্ষেত্রে, যে ক্রেতা, তার কাছে আপনি (ব্যবসার মালিক) একদম অপরিচিত এবং অবিশ্বস্ত। সুতরাং ক্রেতা কখনও প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার আগে আপনাকে পেমেন্ট করতে সাহস পাবেনা। আবার আপনি নিজেও পেমেন্ট পাওয়ার আগে অপরিচিত একজনকে প্রোডাক্ট দিতে রিস্ক নিবেননা। যদি ক্রেতা আপনার পরিচিত হত, তাহলে ক্রেতা আপনাকে বিশ্বাস করত,সেক্ষেত্রে প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার আগেই পেমেন্ট দিতে তার আপত্তি থাকতনা। তেমনি আপনি নিজেও পেমেন্ট বাকি রেখে তাকে প্রোডাক্ট দিতে হয়ত আপত্তি করবেননা। তাহলে দেখা গেল, পরিচিত হওয়াটাই আসল। অনলাইনের মাধ্যমেই এখন মানুষের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আর এ বন্ধুত্ব তৈরির জন্যই অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধির চেষ্টা করতে হবে। আর অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি হলেই বিশ্বাস এবং আস্থা তৈরি হবে। তখনই ক্রেতা প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার আগেই পেমেন্ট দিতে আপত্তি করবেনা।
কিভাবে এ অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি করবেন, সেটি পরের পর্বে টিউন করব।
এ টিউনটি পড়ার পর আশা করব, কেউ আর বেকার, অনেক গরীব, কাজ নেই, সেই বিষয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে আমাকে নক দিবেননা। এরপরও কেউ বেকার সেটি শুনতে পাওয়াটা দুঃখজনক। আমিতো কষ্ট করে লিখে সবার জন্য উপকার করার চেষ্টা করেছি। যারা পাঠক, তাদের কাছে অনুরোধ টিউনটি পড়ার পর নিজের ওয়্যালে শেয়ার করবেন। তাহলে অনেক মানুষ উপকৃত হবে।
পরের পর্ব আসার আগে অনলাইনে ব্যবসা করে সফল এরকম দুটি প্রতিষ্ঠানের পিছনের গল্প পড়ে অনুপ্রাণিত হোন।
১) জামদানি ভিলের প্রধান ইফাত শারমিনের সাক্ষাৎকারটি পড়ে দেখুন।
২) রাজশাহীর আমের প্রধান জামিল ভাইয়ের সাক্ষাৎকারটি পড়ে শিখবেন অনেক কিছু।
টিউনটি প্রচুর শেয়ার করুন। আর টিউমেন্ট করুন। না হলে পরের পর্বটি টিউন করবোনা। পরের পর্বেই রয়েছে মুল আকর্ষন। কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে লাইক বৃদ্ধি করবেন, কিভাবে পেজে অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি করবেন, সেটি নিয়ে বিস্তারিত গাইড থাকবে।
আর কোন ধরনের সহযোগিতার জন্য আমার ফেসবুক পেজে জয়েন করতে পারেন। নিয়মিত টিপসও পাবেন সেখানে।
ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/ekram07
আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 102 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/
thx