ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী বেশ কিছু আশ্চর্যজনক, শিল্পকলা, ঐতিহ্য ও সৃজনশীল ব্লগতৈরি হয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি ব্লগার তাদের ব্লগকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তাদের সকলেই কি সফল ?
উত্তরটি নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পারছেন। ব্লগ তৈরি করাটা যেমনি সহজ তাকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলা ঠিক ততোটাই কঠিন। ব্লগিং হচ্ছে পাঠকদের স্বার্থে উৎসর্গ করা, কিছু বিসর্জন দেওয়া, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আন্তরিকভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবধ্য থাকা। সফলতা কখনোই আপনার কাছে আপনাআপনি ধরা দেবে না সফলতাকে পরিশ্রমের মধ্যদিয়েই ঘরে তুলতে হয়।
আমরা আজকে এই নিবন্ধের মাধ্যমে জানবো কিভাবে একটি সফল ব্লগ তৈরি করা যায় সে সম্পর্কে কিছু টিপস:
ব্লগের মান উন্নয়ন করুনঃ
একটি সফল ব্লগ তৈরির জন্য প্রথমেই আপনাকে আপনার ব্লগের মানের উপরে নজর দিতে হবে। ব্লগের মান উন্নয়ন না করে অযথা অর্থ উপার্জনের পেছনে ছুটলে কিছুই হবে না। উধারনস্বরুপ গতকাল আমি গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করছিলাম এমন সময় একজন ব্লগার আমার কাছে ফোন করেছিলো সে বলল, সে এডসেন্স একাউন্ট তৈরিতে সাহায্য চায় আমি তাকে বললাম আপনার কি জনপ্রিয় কোন ব্লগ আছে সে উত্তরে বলল না আমি নতুন একটি ব্লগ নিবন্ধন করেছি। আমি তাকে অনেকক্ষণ বোঝানর পরে বুঝতে পারলাম এটা বাঙ্গালী জাতি এখানে ভালো উপদেশের জায়গা নেই তাই আমি তাকে বললাম আপনার যা ভাললাগে তাই করেন বলে লাইনটি কেটে দিলাম। নতুন ব্লগ তৈরি করে এডসেন্স নিয়ে লাফালাফি করবেন না আপনাকে ব্লগ তৈরির পরে তার মান উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। আপনি বাসার বাহিরে গেলে পোশাক আশাক পড়ে নিজেকে ভালভাবে সাজিয়ে বের হন নাকি বিবস্ত্র অবস্থায় বাহিরে যাবার চিন্তা করেন ? তাহলে নতুন ব্লগ তৈরির পরেই কখনো বিজ্ঞাপনা নিয়ে লাফালাফির চিন্তা করবেন না। আপনার ব্লগের মান উন্নয়নে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করুন আপনার ব্লগই আপনাকে বলতে বাধ্য করবে যে এখন বিজ্ঞাপনের সময়। আর নতুন ব্লগ থেকে আপনি কখনোই আয় করতে পারবেন না তাই এডসেন্স কখনোই নতুন ব্লগ এপ্রুভ করে না।
নিজের লিখার দক্ষতা বৃদ্ধি করুনঃ
লিখার দক্ষতার উপরে নির্ভর করে আপনি কিধরনের পর্যায়ে যেতে পারেন একজন সফল ব্লগার তার লিখার মাঝেই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সবকিছু ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাই লিখার ভালো দক্ষতা না থাকলে আপনি ব্লগিং জগতে সফল হবেন না। তাই বলে আমি আপনাকে একেবারেই প্রফেশনাল হতে বলছিনা আমি বলছি আপনার লিখার কোয়ালিটির কথা। সবসময় চেস্টা করুন নিজের লিখার মানকে আরেকটু ভালোপর্যায়ে নিয়ে যাবার।
নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যকঃ
যদিও প্রত্যেক কাজ বা পেশার জন্য নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যক কিন্তু একজন সফল ব্লগারের প্রয়োজনের তুলনায় আরো বেশি সুশৃঙ্খল হতে হবে। আপনি যদি একজন সফল ব্লগার হতে চান তবে আপনার একটি সময় সারণী অনুসারে নিয়মিত কাজ করা উচিত। কারন একজন ব্লগারের কাজ শুধু ব্লগ লিখার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় একজন ব্লগারকে অন্যান্য ব্লগে অংশগ্রহন করা, সামাজিক নেটওয়ার্কে সময় ব্যয় করা, অন্য নিবন্ধের উপর টিউমেন্ট প্রদান করা ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করতে হয় নিয়মিত। অন্যথায় আপনি কখনোই জনপ্রিয়তা পাবেন না।
একজন সফল ব্লগারকে সবসময় নতুন কিছু শিক্ষার মানসিকতা থাকতে হবেঃ
আমি সবসময় নতুন কিছু শিখতে প্রস্তুত এধরনের মানসিকতা আপনার মাঝে থাকতে হবে। অর্থাৎ একজন সফল ব্লগারও নিয়মিত শিক্ষার্থীর ভুমিকা পালন করে থাকে। আমি ব্লগিং করার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ছোট, মাঝারি বড় বিভিন্ন ব্লগারদের ব্লগ পড়ে থাকি এবং প্রতিনিয়ত তাদের কাছ থেকে নতুন কিছু শিখছি এর ফলে আমার যেমন অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি ব্লগিং সেক্টরেও আমি বেশ ভালো ভুমিকা পালন করতে পারছি।
মনে রাখবেন জ্ঞানের বিকল্প কিছু নেই। এই আকাঙ্ক্ষার সুপ্ত বীজটি যদি আপনি জাগ্রত করতে পারেন তবে আপনি সহজেই সফলতার স্বাদ পাবেন এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।
লিখার মাঝে ভালবাসা থাকতে হবেঃ
আপনি কি লিখতে ভালোবাসেন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট। লিখার মাঝে অন্যরকম একধরনের ক্ষমতা থাকে। যারা লিখতে ভালবাসে তাদের লিখার মাঝেই তা বুঝতে পারা যায় যদি আপনার লিখার উপরে ভালবাসা না থাকে তবে আপনি পাথকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না অর্থাৎ আপনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটিতে গেরে যাবেন। তাই আমি সবসময় সকলকে পরামর্শ দেই যে আপনি আপনার শুধুমাত্র পছন্দের বিষয়ের উপরে ব্লগ তৈরি করুন নইলে আপনার লিখা পাঠকের কাছে অবহেলিত হবে। তাই আপনি ভালবাসেন কিছু বিষয়ে লিখুন, অন্যথায় আপনার লেখার মাঝে কোন আবেগ দেখাবে না।
উদাহরনস্বরূপ, আপনি যদি বই পড়তে ভালোবাসেন তবে বিভিন্ন বই নিয়ে ব্লগ লিখতে পারেন।
সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নের চেস্টা করতে হবেঃ
বর্তমানে সামাজিক মিডীয়াগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। আপনি যদি একজন সফল ব্লগার হয়ে চান তবে ব্লগিগ্ন এর পাশাপাশি সামাজিক সাইটগুলোতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তুলতে হবে। আমার সামাজিক সাইটগুলোতে প্রায় ১ লক্ষের মত সামাজিক বন্ধু রয়েছে। এই সামাজিক বন্ধুদের সাথে আমি প্রায় চেস্টা করি তাদের সমস্যা সমাধানের এতে করে তাদের সাথে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও তা নিয়ন্ত্রন করা আমার পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
আপনাকে সৃজনশীল ব্যক্তি হতে হবেঃ
প্রত্যেক ব্লগারকে সৃজনশীল ব্যক্তি হতে হবে এমন কোন প্রয়োজনীয়তা নেই, কিন্তু এটা অবশ্যই আপনার জন্য একটি সুবিধাজনক রাস্তা হবে যদি আপনি আপনার সৃজনশীলতার পরিচয় দিতে পারেন। মনে রাখবেন সৃজনশীলতা লিখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ক্রিয়েটিভ নিবন্ধ সবসময় পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
নির্বোধের মত ভুল করবেন নাঃ
আমার লিখিত শব্দের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত কিন্তু আমি এক বাংলাদেশি নতুন ব্লগারকে চিনি যিনি নির্বোধের মত আজেবাজে তথ্য দিয়ে ব্লগিংকে দুষিত করছেন। যদিও ভুল মানুষকে শিক্ষা দেয় কিন্তু একই ভুল যখন সে বারবার করে তখন তাকে নির্বোধ বলা হয়। তাই আপনি এদিকটাতে সতর্ক থাকবেন। আপনি যদি সফলতার স্বাদ পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং আগামীতে যেন এধরনের সমস্যা না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
অনুভুতি নিয়ন্ত্রনঃ
মাঝে মাঝে আপনি আপনার ব্লগ থেকে নেতিবাচক টিউমেন্ট পেতে পারেন এটাকে খুব স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করা উচিত এবং এর জন্য বিতর্কে জরিয়ে পড়া উচিত নয়। আপনি ব্লগিং জগতে অনেক ধরনের টিউমেন্টের সন্মুখিন হতে পারেন তাই বলে আপনি থেমে যাবেননা। কারন সমস্যার সৃষ্টিই হয় সমাধানের লক্ষে।
পরিশেষে, যদিও একটি পাতায় পুরো বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব নয় তাই বিশেষ বিশেষ পয়েন্টগুলো আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম আগামীতে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবো আশা করি তবে এই বিষয়গুলোর উপরে যদি আপনি গুরুত্ব দেন তবে আমি নিশ্চিন্তে বলতে পারি আরেকটি সফলতার গল্প সিগ্রই তৈরি হচ্ছে।
আমি আশরাফুল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, আমি "আশরাফুল ইসলাম"। আমি বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ বাংলা প্রযুক্তির সোসিয়াল নেটওয়ার্কের এর সাথে যুক্ত হয়েছি। আমি আপনাদের দারুন আর মানসম্মত টিউন নিয়মিত উপহার দিতে পারব বলে আশা করি।
helpful post. thnx bhaia