ফেসবুক-টুইটার এমনকি ইউটিউব যখন ছিল না তখনও ব্লগিং ছিল। অন্য কথায় ব্লগ ব্যবহার করে মানুষ শখ পুরন করত কিংবা নিজের বক্তব্য তুলে ধরত ব্লগের মাধ্যমে। বাস্তবে ফেসবুক-টুইটারকে বলা হয় মিনি ব্লগ, যার অর্থ সেখানে অল্প কয়েক লাইন লেখা যায়। ব্লগে লেখা যায় ইচ্ছেমত। গুগলের ব্লগার কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস এবং আরো অনেকগুলি সাইট বিনামুল্যে ব্লগ তৈরীর সুযোগ দেয়। আপনি হয়ত শখ করে ব্লগ তৈরী করলেন, কয় দিন পর মনে হল সেটা সময়ের অপচয়। সেটা বন্ধ করে দিলেন। কারো কারো ক্ষেত্রে সেটা হতেই পারে। বাস্তবে যারা পেশাদার ব্লগার তারা একদিন শখ করেই শুরু করেছিলেন। তারপর সেটা পছন্দ করতে শুরু করেছেন, একসময় তাকেই মুল কাজ হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
ব্লগিং শখ থেকে পেশা হওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু বৈশিষ্ট প্রয়োজন হয়। আপনি এমন করতে পারেন যা আপনি পছন্দ করেন। ব্লগিং এর ক্ষেত্রে এ কথা পুরোপুরি সত্যি। আপনি যদি কোন বিশেষ বিষয়ে আগ্রহি না হন, সেই বিষয়ে আলোচনা করার প্রবল ইচ্ছে না থাকে তাহলে ব্লগ চালানো কঠিন।
আপনি যদি পেশাদার হন, আপনার পেশাকে যদি ভালবাসেন তাহলে আপনার ভাল ব্লগার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। যদি ফ্রিল্যান্সিং আপনার পেশা হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি সুবিধে পেতে পারেন ব্লগ থেকেই। আরো নির্দিষ্ট করে বললে ।
** আপনাকে যদি নিয়মিত লিখতে হয় তাহলে লেখার উন্নতি ঘটাতে পারেন এর মাধ্যমে।
** নিজের পরিচিতি, ভাল কাজগুলি অন্যের সামনে তুলে ধরতে পারেন এর মাধ্যমে।
** ব্লগের মাধ্যমে সারা বিশ্বের নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হোয়া যায়, ফলে সহজে ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়।
এখনো যদি ব্লগ না করে থাকেন তাহলে একবার চেষ্টা করে দেখুন। আপনার প্রয়োজন সামান্য প্রস্তুতি। কোন বিষয়ে ব্লগ তৈরী করবেন সেটা ঠিক করা। ফেসবুকে-টুইটারে যদি লিখতে পারেন তাহলে ব্লগে লিখতে সমস্যা হওয়ার কথা না। ব্লগ থেকে আয় করা সহজ। হয়ত শখ থেকে একসময় এটাই পেশা হতে পারে। কিভাবে পেশা হতে পারে তা জানার জন্য একটু কষ্ট করে নীচে পরুন এবং আরও কিছু সময় দেন।
ব্লগিং করে আয়ঃ ইন্টারনেটে আয় বিষয়ে আলোচনার মুলত দুটি অংশ। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এবং ব্লগ তৈরী করে সেখান থেকে আয়। ব্লগ থেকে আয় সম্পর্কে সবসময়ই বলা হয় এভাবে আয় তুলনামুলক সহজ "ফ্রিল্যান্সারের মত কোন বিশেষ বিষয়ে পারদর্শী হতে হয় না" এবং এই আয়ের পরিমান বিপুল। যাদের এই কাজের সাথে তেমন পরিচিতি নেই তাদের নিয়মিত কিছু প্রশ্ন থাকে।
এক কথায় উত্তর দিলে বলতে হয়, যায়। সাথে এ কথাও উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই বিষয়ে অনেক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেতে পারেন। ব্লগিং শুরু করে সেখান থেকে লক্ষ ডলার আসতে শুরু করবে এ কথা ধরে না নেয়াই ভাল। কিছুটা বাস্তবমুখি দৃষ্টিতে দেখলে ব্লগিং লাভজনক ব্যবসা। ব্লগিং করে আয়ের সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা............
অর্থ উপার্জন বিষয়ক ব্লগ ভাল করবে এমন কথা নেইঃ টাকা আয় বিষয়ক ব্লগ এবং অন্য ব্লগ একই সাথে পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে টাকা আয় বিষয়ক ব্লগ থেকে বেশি আয় হবে এমন কোন প্রমান নেই। বরং অনেক সফল ব্লগই অন্য বিষয়ে। সাধারন ভাবে মানুষ পছন্দ করে এমন বিষয় নিয়ে। এ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে, ইন্টারনেটে টাকা আয় বিষয়ে খোজ করে এমন ব্যক্তির চেয়ে অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহ দেখানো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।
বেশির ভাগ ব্লগার পুরোপুরি ব্লগিং এর ওপর নির্ভর করতে পারেন নাঃ সাম্প্রতিক এক জড়িপে দেখা গেছে অর্ধেকের বেশি সংখ্যক ব্লগার ব্লগ থেকে মাসে ৫০০ ডলারের কম আয় করেন। ১ হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার আয় করে ৯ ভাগ, ১০ হাজার ডলারের বেশি আয় করেন ৪ ভাগ। এটা মনে রাখা প্রোজন এই জড়িপে যারা অংশ নিয়েছেন তারা তুলনা মুলক নতুন ব্লগার। প্রতিদিনই নতুন ব্লগারের তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন বহু মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে ব্লগিং এর সাথে জড়িতদের ফল পৃথক হওয়া স্বাভাবিক। সহজ কথায়, যারা ব্লগ পরিচালনা করেন তাদের বেশিরভাগ পর্যাপ্ত আয় করেন না।
ব্লগিং থেকে আয় করতে হলে সময়ের প্রয়জনঃ যারা ব্লগ থেকে যথেষ্ঠ পরিমান আয় করেন তাদের ৮৫ ভাগ ব্লগিং এর সাথে জড়িত আছে ৪ বছরের বেশি সময় ধরে। অনেকে প্রথম দুবছর উল্লেখ করার মত আয় করেন না।
ব্লগিং এর জন্য পরিশ্রম করতে হয়ঃ ব্লগ তৈরী করে বসে থেকে আয় হওয়ার উদাহরন নেই। যারা বেশি আয় করেন তারা নিয়মিত ব্লগের পেছনে সময় ব্যয় করেন। যারা ১০ হাজার ডলারের বেশি আয় করেন তারা পুরোপুরি ব্লগের পেছনেই সময় কাটান। ভাল ব্লগ অর্থ এমন কিছু যেখানে উপকারী, নিজস্ব, নতুনত্ব, আকর্ষনীয় তথ্য থাকে। কাজটি হঠাৎ করে হয় না। দীর্ঘদিন চেষ্টা করে গড়ে তুলতে হয়।
পরিশেষে এইটুকু বলতে হয়, ব্লগ থেকে যথেস্ট আয় করা যায় কি-না? যায়। এজন্য পরিশ্রম করতে হয়। দীর্ঘদিন ধৈর্য্য ধরে কাজ করে যেতে হয়।
আমি কামাল হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 53 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সময় পরিবর্তনের সাতে সাতে জীবন জীবীকার ধারনাটা ও পরিবর্তন হয়। বর্তমান সময় তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যাবহার করে আমাদের দেশের তরুণরা খোঁজ করে নিচ্ছে নিজেরদের ভাগ্য পরিবর্তন এর চাকা। আর সেটা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে সম্ভহব হরচ্ছে।
আমি কি আমার ব্লগে Chitika এড এর পাশাপাশি Amaderad ব্যাবহার করতে পারবো ??