আউটসোর্সিং কিংবা ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু

আউটসোর্সিং কিংবা ফ্রিল্যান্সিং যাই বলুন না কেন,অনেকের কাছেই বিষয়টি যেমন নতুন তেমনি রহস্যময়। কেউ এটা নিয়ে বিশাল সম্ভাবনার কথা বলছেন,একই সময়ে অনেকে একে সন্দেহের চোখে দেখছেন। কেউ বলেন এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সফল হওয়া তো বটেই,সমাজের এবং দেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হতে পারে। সেটা হয়েছে অনেক দেশে। ভারতের কথা মনে আসতে পারে শুরুতেই। একই সময়ে এপথে সম্ভাবনা আদৌ আছে কিনা,এমনকি এগুলি আদৌ সত্য কিনা এধরনের প্রশ্নও করছেন অনেকে। আসলে সত্য কোথায় ?

আগেই বলা হয়েছে বাস্তবে এটা সম্ভব হয়েছে কাজেই একে অস্বিকার করার কোন উপায় নেই। ভারতের মোট জাতিয় আয়ের বড় একটি অংশ আসে আইটি খাত থেকে,অন্যভাবে বললে আউটসোর্সিং খাত থেকে। অনেকে যখন বলছেন বাংলাদেশেও সেটা সম্ভব তখন তারা আউটসোর্সিং শব্দটিই ব্যবহার করছেন। আসলে বিষয়টি কি সেটা নিজেরা বোঝেন কিনা সে বিষয়েই সন্দেহ করেন অনেকে।

আউটসোর্সিং বিষয়টি কি স্বল্প কথায় ব্যাখ্যা করা যাক। এপলের কথাই ধরুন। এপলের এপ্লিকেশন ষ্টোরে (এপ ষ্টোর)বিক্রি হচ্ছে কয়েক লক্ষ সফটঅয়্যার। সাধারনভাবে তাদের যা করার কথা ছিল তা হচ্ছে এজন্য হাজার হাজার প্রোগ্রামার নিয়োগ দেয়া,তাদের দিয়ে কাজ করানো। এতে একদিকে খরচ বেড়ে যেত অনেক বেশি, অন্যদিকে কাজের চাপ বাড়ত এবং মোট ফল কমে যেত। একই কোম্পানীর পক্ষে লক্ষ লক্ষ সফটঅয়্যার তৈরী বিষয়টি অকল্পনীয়।

কাজেই সমাধান হচ্ছে,যারা নিজেরা সফটঅয়্যার তৈরী করেন তারা নিজেরাই তৈরী করবেন (ব্যক্তি অথবা প্রতিস্ঠান),তাদের (এপলের)কাছে পাঠাবেন,তারা সেগুলি যাচাই করবেন,পছন্দ হলে নিজের সাইটে রেখে বিক্রি শুরু করবেন। বিক্রি থেকে যা আয় হবে সেটা ভাগাভাগি হবে এপল এবং নির্মাতার মধ্যে।

এই পদ্ধতির ফল হচ্ছে, সফটঅয়্যার তৈরী নিয়ে তাদের আদৌ মাথা ঘামাতে হচ্ছে না, এক টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না। বসে থেকে তারা উচুমানের সফটঅয়্যার পাচ্ছে, সেগুলি বিক্রি করে সেখান থেকে টাকা পাচ্ছে।

আর নির্মাতার সুবিধে হচ্ছে নিজের স্বপ্ন পুরন করে সটঅয়্যার তৈরীর দিকে মনোযোগ দেয়া। বিক্রি নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। একবার এপলের অনুমোদন পাওয়ার অর্থ হচ্ছে নিশ্চিত লক্ষ লক্ষ ডলার পাওয়ার সুযোগ তৈরী হওয়া। এটা এক ধরনের আউটসোসিং।

আরেক ধরনের আউটসোর্সিং হতে পারে যখন কোন কোম্পানী তাদের কাজ অন্যদের দিয়ে করিয়ে নেন। টেন্ডার বিষয়টি সকলেই কমবেশি বোঝেন। অনেকটা একই পদ্ধতি। তারা যা করতে চান সেটা কোন মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যারা সেই কাজ করতে আগ্রহি তারা টেন্ডার জমা দেন। এজন্য প্রয়োজন হয় নিজেদের দক্ষতার এবং অভিজ্ঞতার পরিচিতি তুলে ধরা, কি কি সুযোগ (যন্ত্রপাতি থেকে জনবল) আছে সেগুলি জানানো এবং প্রতিযোগিতামুলক দাম উল্লেখ করা। যার কাজ তিনি একদিকে কাজ ঠিকভাবে করার যোগ্যতা আছে কিনা যাচাই করবেন অন্যদিকে কমদামে কাজটি করানোর চেষ্টা করবেন। আপনি এই দুই শর্ত পুরন করলে কাজ পাবেন।

ব্যক্তিগতভাবে এধরনের কাজ করা সহজ। কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে সবসময় এধরনের হাজার হাজার কাজের উল্লেখ থাকে। মুলত কম্পিউটারে করা যায় এমন যে কোন কাজ। ফ্রিল্যান্সার, ওডেস্ক ইত্যাদি এধরনের সাইট। ব্যক্তিগত পর্যায়ে আপনি কাজ করতে চাইলে তাদের সাইটে গিয়ে বিনামুল্যে সদস্য হয়ে পছন্দমত কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। সারা বিশ্বেই বহু মানুষ একাজ করছেন। ডাটা এন্ট্রি থেকে সফটঅয়্যার তৈরী সব ধরনের কাজ করা যায় এসব সাইট থেকে।

আর যদি বড় ধরনের কাজে হাত নিতে চান (দেশের প্রেক্ষিতে যেকথা বলা হচ্ছে) তাহলে আপনার প্রয়োজন প্রতিস্ঠান। ফ্রিল্যান্সারে কাজের জন্য আপনার নিজের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা উল্লেখ করতে হয়। প্রতিস্ঠান হিসেবে কাজ পাওয়া তারথেকে কঠিন। প্রতিস্ঠানের কাজের অভিজ্ঞতা, লোকবল ইত্যাদি উল্লেখ করে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। কাজ হাতে নিয়ে কোন কারনে সেটা সময়মত করতে পারবেন না সেটা হবে না। অনেক ক্ষেত্রেই সেজন্য জরিমানা দিতে হয়।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে এধরনের কাজের সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ। যদি দক্ষতা নাও থাকে কোন বিষয় বেছে নিয়ে কয়েকমাস কিংবা কয়েক বছরের চেষ্টায় নিজেকে সেই পর্যায়ে নিতে পারেন। প্রতিস্ঠান হিসেবে আপনাকে দীর্ঘদিন কাজ করে সেই পরিচিতি লাভ করতে হবে। আপনি যখন সহজেই ভারতের সাথে তুলনা করছেন তখন নিজেকে একটি প্রশ্ন করুন, ভারতের অনেকগুলি কোম্পানীর আন্তর্জাতিক খ্যাতি রয়েছে। বাংলাদেশের কোন কোম্পানীর নাম কি করতে পারেন ?

আউটসোর্সিং (ব্যক্তিগতপর্যায়ে ফ্রিল্যান্সিং বলতে পারেন) কাজ লাভজনক এতে সন্দেহ করার কোন কারন নেই। প্রশ্নবিদ্ধ বিষয় হচ্ছে এজন্য প্রস্তুতি। যদি ৫ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয় তাহলে এখন শুরু করে ৫ বছর পর সেটা পাবেন, ১০ বছরের অভিজ্ঞতা পাবেন ১০ বছর পর। আর ১০ বছর পর শুরু করলে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা পাবেন ২০ বছর পর। কারন তখনও আপনার ঝুলি শুন্য।

আউটসোর্সিং অথবা ফ্রিল্যান্সিং যাই বলুন না কেন,যদি ফল পেতে চান তাহলে কথা না বলে কাজে হাত দিন।

এর আগে আমার ব্লগে প্রকাশিত হয়। আমার টিউন ভাল লাগলে আমার ব্লগ থেকে গুরে আসার অনুরধ রইলো । আর ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে অ্যাক্টিভ থাকুন।

Level 0

আমি Md Kamal Hossain। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 15 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

সময় পরিবর্তনের সাতে সাতে জীবন জীবীকার ধারনাটা ও পরিবর্তন হয়।বর্তমান সময় তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যাবহার করে আমাদের দেশের তরুণরা খোঁজ করে নিচ্ছে নিজেরদের ভাগ্য পরিবর্তনএর চাকা।আর সেটা ইন্টারনেট এর মারধহমে সম্ভহব হরচ্ছে।যার মারধহমে এমন একটি ব্যাপার আমাদের দেশে ঘটে যাচ্ছে,তা আদুর ভবিষ্যৎ এ পোশাক শিল্পের বৈদেশিক মুদ্রার আয়কে ছড়িয়ে যাবে...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

valo laglo .. amader deshe internet er somossa theke suru kore nanan somossa jar karone kono lav hoce na ..

কাজ জানা থাকলে আয় নিশ্চিত। কাজ জানা না থাকলে ২৪ ঘন্টাও পরিশ্রম করা বৃথা , ধন্যবাদ