ইউটিউব থেকে আয় করার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। ইউটিউব ক্রিয়েটরদের জন্য আয়ের উৎস হিসেবে বেশ কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। নিচে প্রধান পদ্ধতিগুলো দেওয়া হলো:
১. ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (YPP):
ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দিলে আপনি ভিডিওতে বিজ্ঞাপণ দেখানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
যোগ্যতা:
১, ০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।
গত ১২ মাসে ৪, ০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম অথবা ১০ মিলিয়ন শর্টস ভিউস।
কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।
বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে আয়ের উৎস:
Display Ads
Overlay Ads
Skippable & Non-skippable Video Ads
Bumper Ads
২. চ্যানেল মেম্বারশিপ:
আপনার দর্শকরা মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে চ্যানেলের সদস্য হতে পারে। মেম্বারশিপের মাধ্যমে তারা বিশেষ সুবিধা পায়, যেমন:
কাস্টম ইমোজি।
এক্সক্লুসিভ ভিডিও বা কনটেন্ট।
৩. মার্চেন্ডাইজিং:
আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করতে পারেন। ইউটিউব আপনাকে মার্চেন্ডাইজ শেলফ ফিচার দিতে পারে।
৪. সুপার চ্যাট এবং সুপার স্টিকার:
লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সময় দর্শকরা আপনাকে অর্থ দিতে পারে সুপার চ্যাট বা সুপার স্টিকারের মাধ্যমে।
৫. ইউটিউব শর্টস ফান্ড:
ইউটিউব শর্টস কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আলাদা ফান্ড তৈরি করেছে। জনপ্রিয় শর্টস ভিডিওর জন্য ইউটিউব থেকে ইনসেন্টিভ পাওয়া যায়।
৬. স্পন্সরশিপ এবং ব্র্যান্ড ডিল:
আপনার চ্যানেল যদি জনপ্রিয় হয়, তবে বিভিন্ন ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপের প্রস্তাব দিতে পারে। তারা আপনার ভিডিওতে তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারণা করতে চাইবে।
৭. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং:
আপনার ভিডিওতে অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে আপনি আয় করতে পারেন। কেউ যদি সেই লিংকের মাধ্যমে কিছু কেনে, তবে আপনি কমিশন পাবেন।
৮. অনলাইন কোর্স বা ই-বুক বিক্রি:
আপনার দক্ষতা বা জ্ঞান শেয়ার করে অনলাইন কোর্স, ই-বুক বা টিউটোরিয়াল বিক্রি করতে পারেন।
৯. লাইসেন্সিং কনটেন্ট:
আপনার ভিডিও যদি অন্য মিডিয়া বা কোম্পানি ব্যবহার করতে চায়, তবে তারা আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
১০. ক্রাউডফান্ডিং বা ডোনেশন প্ল্যাটফর্ম:
Patreon বা Buy Me a Coffee এর মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দর্শকদের কাছ থেকে সরাসরি ডোনেশন গ্রহণ করতে পারেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করুন।
নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন।
দর্শকদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশন বজায় রাখুন।
নির্দিষ্ট একটি নির্দিষ্ট নিস বা বিষয়বস্তুর উপর ফোকাস করুন।
আপনার চ্যানেলের আকার ও দর্শকদের পছন্দ অনুযায়ী উপরের পদ্ধতিগুলোর এক বা একাধিক ব্যবহার করে আয় বাড়ানো সম্ভব।
ইউটিউব থেকে আয়ের আরও কিছু কার্যকর পদ্ধতি এবং কৌশল রয়েছে। এগুলো আপনার চ্যানেলের বিষয়বস্তু এবং দর্শকদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। নিচে আরও কিছু পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:
১১. অনলাইন ওয়ার্কশপ বা সেমিনার আয়োজন করা:
আপনার চ্যানেল যদি শিক্ষামূলক বা বিশেষ কোনো বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে হয়, তাহলে আপনি অনলাইন ওয়ার্কশপ বা লাইভ সেমিনার আয়োজন করতে পারেন।
টিকিট বিক্রির মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
সরাসরি আপনার দর্শকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন হবে।
১২. কো-ব্র্যান্ডিং কনটেন্ট তৈরি করা:
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করে বিশেষ কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।
ব্র্যান্ডের পণ্য বা সেবা প্রচার করুন।
কো-ব্র্যান্ডিং ভিডিও থেকে সরাসরি অর্থ উপার্জন সম্ভব।
১৩. ইউটিউব প্রিমিয়াম রেভিনিউ:
যদি দর্শক ইউটিউব প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইবার হয়, তবে তারা আপনার ভিডিও দেখতে গেলে ইউটিউব থেকে আপনি রেভিনিউ পাবেন।
এটি মূলত বিজ্ঞাপনমুক্ত দর্শকদের জন্য কার্যকর।
১৪. অনলাইন কনসালটেশন সেবা:
আপনার যদি বিশেষ কোনো দক্ষতা থাকে, যেমন: ডিজিটাল মার্কেটিং, ফিটনেস, ফটোগ্রাফি, বা ব্যক্তিগত উন্নয়ন, তবে দর্শকদের জন্য কনসালটেশন সেবা দিতে পারেন।
ভিডিওর মাধ্যমে এই সেবা প্রচার করুন।
সরাসরি বুকিং বা অ্যাপয়েন্টমেন্টের মাধ্যমে আয় করুন।
১৫. রেফারেল প্রোগ্রাম:
অনেক কোম্পানি তাদের পণ্য বা সেবা প্রচারের জন্য রেফারেল প্রোগ্রাম চালায়।
আপনি রেফারেল লিংক শেয়ার করতে পারেন।
দর্শকরা লিংকের মাধ্যমে কিনলে আপনি কমিশন পাবেন।
১৬. পডকাস্ট তৈরি করা:
ইউটিউবে পডকাস্ট কনটেন্ট বেশ জনপ্রিয়।
আপনি স্পনসর পেতে পারেন।
পডকাস্টের মাধ্যমে নতুন দর্শক ও আয়ের উৎস তৈরি হবে।
১৭. গেইমিং চ্যানেল থেকে আয়:
যদি আপনি গেইমিং কনটেন্ট তৈরি করেন, তবে স্পন্সরশিপ, সুপার চ্যাট, এবং মেম্বারশিপ ছাড়াও Twitch বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে দর্শকদের টেনে নিতে পারেন।
গেইমিং গিয়ার রিভিউ।
গেইমিং ইভেন্ট বা টুর্নামেন্ট আয়োজন।
১৮. কোর্স প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্তি:
এই প্ল্যাটফর্মগুলো আপনাকে নির্দিষ্ট কমিশন প্রদান করবে।
১৯. অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট বা সফটওয়্যার বিক্রি:
আপনার চ্যানেলের দর্শকদের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো অ্যাপ বা টুল তৈরি করে সেটি বিক্রি করতে পারেন।
ভিডিওর মাধ্যমে এর ব্যবহার দেখিয়ে প্রচার করতে পারেন।
২০. ইভেন্ট স্পন্সরশিপ:
যদি আপনার চ্যানেলের একটি বড় দর্শকগোষ্ঠী থাকে, তবে কোনো ইভেন্ট বা ফেস্টিভ্যাল স্পন্সর করতে পারেন।
আপনার ভিডিওতে ইভেন্ট প্রচার করে আয় করুন।
২১. ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে ট্রাফিক:
ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে দর্শকদের নিয়ে আসতে পারেন।
ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা ই-কমার্স চালিয়ে আয় করা সম্ভব।
২২. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি:
ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেমন:
প্রিসেট (ফটোগ্রাফি বা ভিডিও এডিটিং)।
টেমপ্লেট।
ডিজাইন প্যাক।
এগুলো বিক্রি করতে পারেন।
২৩. ফ্রিল্যান্স সার্ভিস প্রচার:
আপনার দক্ষতা যদি ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য প্রাসঙ্গিক হয় (যেমন: গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং), তবে আপনার ভিডিওতে আপনার সেবা প্রচার করতে পারেন।
২৪. ভিডিও সিরিজ বা ফিল্ম প্রোডাকশন:
বড় আকারের প্রোডাকশন যেমন: ওয়েব সিরিজ, শর্ট ফিল্ম বা ডকুমেন্টারি তৈরি করে স্পন্সর এবং দর্শকদের কাছ থেকে অর্থ আয় করতে পারেন।
২৫. ইউটিউব এনালিটিক্সের ব্যবহার:
আপনার দর্শকদের পছন্দ-অপছন্দ বুঝে কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি ঠিক করুন।
কোন ভিডিও বেশি ভিউ পাচ্ছে।
কোন দেশ বা অঞ্চলের দর্শক বেশি সক্রিয়।
ইউটিউবে সফলভাবে আয় করতে ধৈর্য এবং সঠিক পরিকল্পনার প্রয়োজন। নিয়মিত ভালো কনটেন্ট তৈরি এবং দর্শকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুললে আপনি ক্রমাগত সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
আমি বিমল দাস। Owner, Seba computer centre, Faridgonj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 দিন 8 ঘন্টা যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।