চ্যাটজিপিটি (ChatGPT):
ChatGPT বা Chat Generative Pre-trained Transformer হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট (AI) এর এক নব্য ও অনবদ্য সংযোজন। এটি একটি Large Language Model (LLM), যা Deep Learning algorithm-এর ভিত্তিতে তৈরি। ChatGPT Generative AI বৈশিষ্ট্যমন্ডিত একটি Chatbot। চ্যাটজিপিটি প্রদত্ত প্রশ্নের বা নির্দেশার প্রতিক্রিয়া মানুষের কথোপকথনের অনুরূপ প্রদান করতে সক্ষম, যাকে Chat response বলে।
একটি সাধারণ চ্যাটবোট হতে চ্যাটজিপিটি অনেক বেশি দক্ষ। সাধারণ চ্যাটবোট যেখানে কেবল পূর্বনির্ধারিত প্রতিাক্রিয়া সীমিত ক্ষেত্রে প্রদানে সক্ষম, সেখানে চ্যাটজিপিটি অপেক্ষাকৃত বিস্তৃত পরিসরে মানুষের ভাষা বুঝতে ও সেই অনুসারে response প্রদান করতে সক্ষম। চ্যাটজিপিটি তার Learning Model বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে নিজেকে train করতে পারে যা সাধারণ চ্যাটবোটে অনুপস্থিত। আরেকটি উল্লেখ যোগ্য পার্থক্য হলো চ্যাটজিপিটি তার মডেলে থাকা বিশাল ডেটাসেট থেকে নিজেকে নিজেই প্রশিক্ষিত করতে পারে, অন্যদিকে সাধারণ চ্যাটবোটের ডেটাসোট ছোট হওয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য মানুষের প্রত্যক্ষ সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
চ্যাটজিপিটির কার্যপ্রক্রিয়া (Process of ChatGPT):
একজন ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটি এর text box এ তার প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা লিখে, যা ChatGPT Prompt হিসেবে পরিচিত। চ্যাটজিপিটি উক্ত prompt ইনপুট হিসেবে LLM-এ প্রবেশ করায়। LLM বা Large Language Model একটি জটিল অ্যালগরিদম যা transformer model ব্যবহার করে prompt এর প্যাটার্ন ও ভাষার গঠন নির্ধারণ করে থাকে। পরবর্তীতে উক্ত প্যাটার্ন prompt কে বুঝতে সাহায্য করে এবং সে অনুসারে প্রদত্ত/জিজ্ঞাসিত ভাষায় response generate করে। Prompt Interpretation প্রক্রিয়ায় চ্যাটজিপিটি তার চ্যাট হিস্ট্রি এবং অতীত ভুলত্রুটি ও অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগায়।
চ্যাটজিপিটির ব্যবহার ক্ষেত্র (Applications of ChatGPT): ChatGPT বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল। ChatGPT 3.5 ভার্সনের বেশ কিছু ক্ষেত্রগত সীমাবদ্ধতা থাকলেও, ChatGPT Plus যা ChatGPT 4 নামে পরিচিত, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ব্যবসায়-বাণিজ্য, সাহিত্য, দর্শন, অর্থনীতিসহ বহুবিধ ক্ষেত্রে বিচরণে সক্ষম। নিম্নে চ্যাটজিপিটি এর কিছু ব্যবহার ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলোঃ
চ্যাটজিপিটির সীমাবদ্ধতা (Drawbacks of ChatGPT): পৃথিবীর কোন কিছুই পুরোপুরি নিঁখুত নয়, ChatGPT ও এর ব্যতীক্রম নয়। এটি অনেক শক্তিশালী টুল হলেও অনেক সময় এটি বিভ্রান্ত হতে পারে এবং ভুল তথ্য জেনারেট করতে পারে। নিম্নে ChatGPT এর কিছু সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হলো:
চ্যাটজিপিটির প্রতিক্রিয়ার মালিকানার স্বরূপ (Ownership of ChatGPT Prompt): চ্যাটজিপিটির প্রতিক্রিয়া বা preompt এর মালিকানা বলতে prompt এ দেওয়া ইনপুটের বিষয়বস্তু এবং উদ্ভাবিত প্রতিউত্তর বা response এর মালিকানাকে বুঝায়। চ্যাটিজিপিটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান Open AI এর শর্তাবলী অনুসারে, prompt এ দেওয়া সকল input এবং response এর মালিকানাক ব্যবহারকারী নিজে। তবে –
নৈতিকতা ও চ্যাটজিপিটি (Ethics and ChatGPT): AI প্রযুক্তির সুচনা হতেই নৈতিকতার বিষয়টি মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। AI প্রযুক্তি যেহেতু মানুষের মতো আচরণ, দেখা, শব্দ উৎপন্ন করা এবং বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারে, সেহেতু এটির আচার-আচরণকেও মানুষের ন্যয় একটি নিয়মের অধীন রাখা বাঞ্ছনীয়। চ্যাটজিপিটি যেহেতু prompt এবং response হতে নিজেকে প্রতিনিয়ত পুন:প্রশিক্ষিত বরে, সেহেতু এর অনৈতিক ব্যবহার একে অনৈতিক বিষয় শিক্ষা দিতে ও প্রতিক্রিয়া উৎপন্নে উদ্বুদ্ধ করতেদ পারে। যা সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে।
আর তাই চ্যাটজিপিটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের ডেটা দ্বারা উত্তম রূপে প্রশিক্ষিত করতে হবে।
উপসংহার (Conclusion): পরিশেষে বলা যায়, বর্তমান প্রযুক্তিগত অঙ্গনে চ্যাটজিপিটি এক বিশাল অগ্রগতির সূচনা করেছে। অদূর ভবিষ্যতে এটি মানুষের জীবন-যাত্রা, পেশা, সমাজ সবকিছুকে বদলে দিবে। আর তাই এর উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে এবং নৈতিকতার বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনায় আনতে হবে।
আমি মোহাম্মদ আলীনূর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।