সারা সপ্তাহ, মাস কিংবা বছর জুড়ে একই রিুটিন মাফিক কাজ করে আমরা মাঝে মাঝেই আমরা বিরক্ত হয়ে যাই, এই বিরক্তি দূর করতে ভ্রমনের বিকল্প কিছুই নেই। একটি আনন্দ ভ্রমন যে শুধু আমাদের মনকেই প্রভাবিত করে তা কিন্তু নয়। এটি আমাদের শরীরকেও পরবর্তী কাজের জন্য উদ্যমী করে তোলে। ভ্রমন হতে পারে একা বা দলভিত্তিক কিন্তু যেমনই হোকনা কেন একটি সফল আনন্দ ভ্রমনের জন্য চাই একটি ভালো পরিকল্পনা। আসলে পরিকল্পনা ছাড়া আপনি কোন কাজই সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন না। আজ আমি কিছু গুরুত্বপূর্ন টিপ্স আলোচনা করব যা আপনার ভ্রমনকে আরো নিখুত ও আনন্দময় করে তুলবে।
মনস্থির করা, জায়গা ও সময় নির্ধারন করা : কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই মনকে স্থির করতে হবে যে আপনি যাবেনই। কারন দোটানায় থেকে কোন পরিকল্পনা করলে দেখা যায় যে তা বেশিরভাগ সময়ই করা হয়না আর হলেও তা হয় অগোছালো। মনস্থির করার পর আপনি কোন জায়গায় যেতে চান তা ঠিক করুন। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি একা যান তাহলে আপনি যে জায়গা পছন্দ করবেন পরিবার নিয়ে কিন্তু আবার তেমন জায়গায় চলে যেতে পারবেন না। আর যদি ছোট বাচ্চাকে সাথে নিয়ে যান তো আপনাকে জায়গা নির্ধারনে কিছুটা ছাড় দিতেই হবে। তা ছাড়া জায়গা নির্ধারনে আপনাকে সময়কেও বেশ গুরত্ব দিতে হবে। যেমন ধরুন আপনি ছুটি নিয়েছেন ৩ দিনের। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি একদিনের দূরত্ব এমন জায়গা নির্ধারন করেন তো আপনার ভ্রমন আনন্দের চেয়েও বেশি ঝামেলার হয়ে যাবে। আবার ধরুন যে সময়ে যাচ্ছেন এই সময়ে কোথায় গেলে সাচ্ছন্দ্যে ঘুরাফেরা করতে পারবেন তাও মাথায় রাখতে হবে।
বাজেট নির্ধারন করা:ভ্রমনের ক্ষেত্রে আরো একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় হলো বাজেট নির্ধারন। আপনাকে অবশ্যই এমন একটি বাজেট নির্ধারন করতে হবে যাতে এই ভ্রমন আপনার কোন অর্থনীতিক টানাপোড়েনের কারন না হয়। ত্র জন্য আপনাকে অবশ্যই যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার খরচ, গাড়ি ভাড়া, খাওয়া খরচ, চিকিৎসা বাবদ একটি সঠিক এমাউন্ট সাথে নিতে হবে। তাছাড়াও বাড়তি কিছু টাকা আপনি সিকিউরিটি মানি হিসেবেও রাখতে পারেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখুন:মোটামুটি দূরে কিংবা অনেক দূরে ভ্রমনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ভিসা, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি সাথে নিতে হবে। অতিরিক্ত সচেতনতা হিসেবে এসব কাগজপত্র ফটোকফি করে রাখতে পারেন যেন হারয়ে গেলেও অন্তত সমস্যয় না পড়েন। এ ছাড়া আপনার বা আপনার সঙ্গীদের মোবাইল, চার্জার, পাওয়ারব্য্ক ইত্যাদি নিয়েছেন কিনা নিশ্চিত করুন।
অতিরিক্ত ব্যাগ বা মালপত্র পরিহার করুন:বেড়াতে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো একটা ভালো সময় কাটানো। তাই অতিরিক্ত পোশাক বা সাজগোজের জিনিস বহন করে নিজের ব্যাগ ভারি করবেন না। কারন একটা ভারি ব্যাগ বহন করতে গিয়ে আপনার ভ্রমন বিষাদময় হয়ে যেতে পারে। বুদ্ধিমানের কাজ হলো সহজেই বহনযোগ্য একটি ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গুছিয়ে নেওয়া এবং ফিরে আসার সময় যেনো কিছু থেকে না যায় তার জন্য সব জিনিসের একটি লিস্ট ও সাথে রাখা।
পোষাক নির্বাচন:পোশাক নির্বাচন অবশ্যই ভ্রমনের একটি গুরত্বপূর্ন অংশ। যে জায়গায় যাচ্ছেন সে জায়গার পরিবেশ ও আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে পোশাক নির্বাচন করুন। অতিরিক্ত গরমে ভারী কোন পোশাক যেমন পরিধান করতে পারবেন না তেমনি ঠান্ডা আবহাওয়ায় পাতলা পোশাকে ঘুরে বেড়ালে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। তাই পোশাক নির্বাচনের সময় এসব মাথায় রাখুন। তাছাড়া যেসব জিনিস অবশ্যই প্রয়োজন যেমন রোদ চশমা, টুপি বা জুতা অবশ্যই সাথে নিবেন।
আরামদায়ক যাতায়ত মাধ্যম:আপনি যেখানেই ভ্রমন করবেন আপনাকে কোন না কোন যানবাহন ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সবচেয়ে আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী বাহনটি নির্বাচন করতে হবে। এতে আপনার যাওয়া কিংবা আসার ক্লান্তি আপনাকে গ্রাস করবেনা।
প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র সাথে রাখুন:বেড়াতে যাওয়ার সময় কখনোই প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র নিতে ভুলবেন না। তাছাড়া তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, জীবানুনাশক সাথেই রাখবেন। যেনো যে কোন ছোটখাট সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। খাবার স্যালাইন, বমির ট্যবলেট বা মাথাব্যথার ট্যবলেট সাথেই রাখুন। যে কোন সমস্যায় মনোবল না হারিয়ে শক্ত থাকুন।
খাবার গ্রহনে সতর্কতা:ভ্রমনের গুরত্বপূর্ন একটি অংশ হলো খাওয়াদাওয়া। অবশ্যই এমন খাওয়াদাওয়া করা উচিত যা স্বাস্থ্যসম্মত। তাছাড়া যেকোন পরিবেশের খাবার গ্রহন যেমন উচিত নয় তেমনি মানসম্মত খাবার বাচাই করাও গুরত্বপূর্ন। সারাদিন ক্লান্তিমুক্ত ও সতেজ রাখবে এমন খাবারই গ্রহন করা উচিত। তা ছাড়া সেই এলাকায় কোন ট্রেডিশনাল খাবার থাকলে অবশ্যই তা খাওয়া উচিত।
ভ্রমন আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষামূলকও যেনো হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। যে কোন বিপদ হলে তা মোকাবিলা করার বিকল্প চিন্তা রাখতে হবে। এবং অবশ্যই আপনাকে সকল নিয়ম কানুন মেনে ভ্রমন সম্পন্ন করতে হবে।
আমি রৌশন আরা ইয়াছমিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।