আসসালামু আলাইকুম। আমরা সবাই জানি অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের মানসিক শান্তি এবং শারীরিক স্বাস্থ্যও নষ্ট করে। আপনি কীভাবে অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করতে পারেবেন বা কিভাবে এটাকে কমাতে পারবেন তা নিয়ে আজকে আলোচনা করব।
অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি প্রথমে হয়ত বুঝতেই পারবেন না, তবে এটা আমাদের বড় ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিঃসরণ করতে বাধ্য করে। অত্যধিক কর্টিসল নিঃসরণ উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং এর শারীরিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে দ্রুত হৃদস্পন্দন, শুষ্ক মুখ, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেশী ব্যথা ইত্যাদি। এটির জন্য মানসিক অসুস্থতার সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য আপনাকে অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে বা এটি হ্রাস করার অনুশীলন করতে হবে। নিচে কিছু সহজ উপায় বা অভ্যাস এর কথা বলব যা আপনি প্রতিদিন অনুসরণ করতে পারেন এবং অতিরিক্ত চিন্তা করা বন্ধ করতে পারেন.
১। হাঁটা
আপনার মন বা ব্রেনকে ব্যস্ত রাখতে হলে আপনাকে শারীরিক কার্যকলাপে মনোনিবেশ করতে হবে। আপনি হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, নাচ বা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত হওয়ার অনুশীলন করতে পারেন। এটি অবশ্যই একটি পুনরাবৃত্তিমূলক কর্ম হতে হবে যা আপনার মনকে অতিরিক্ত চিন্তা থেকে দূরে রাখতে পারে। হাঁটার উপর বেশি জোর দেওয়া হয় কারণ এটি আমাদের শরীর ও মনকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। প্রতিদিন হাঁটার জন্য একটি রুট বা কিছু কিলোমিটার সেট আপ করুন। এই পুনরাবৃত্তিমূলক কার্যকলাপ আপনার উদ্বিগ্ন বোধ করার সম্ভাবনা হ্রাস করবে। চলুন জেনে নেই হাঁটার উপকারিতা। হাঁটা কর্টিসলের নিঃসরণ হ্রাস করে এবং স্ট্রেস কমাতে এবং আপনার মেজাজ উন্নত করতে এন্ডোরফিন নিঃসরণকে উত্সাহিত করে। এটি আপনার ঘুমের চক্রকে উন্নত করতে পারে, যা অতিরিক্ত চিন্তা এবং চাপ দ্বারা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া নিয়মিত হাঁটা আপনার আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক সুস্থতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করে।
২। প্রকৃতির শরনাপন্ন হওয়া
যখনই আপনি চিন্তা এবং উদ্বিগ্ন বোধ করেন, প্রকৃতির কাছে যান, ঘর থেকে বাইরে যান। একটু বাগানে হাঁটুন বা নদীর ধারে বসুন। এটি আপনার স্নায়ুকে শান্ত করবে এবং আপনার চিন্তাগুলিকে সংগঠিত করতে সাহায্য করবে। প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য হাইকিং বা ট্রেকিং একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। প্রকৃতির সৌন্দর্য আপনার মনকে নেতিবাচক চিন্তা থেকে বিক্ষিপ্ত করবে। এটি আপনার রাগ, ভয় এবং চাপ কমাতে পারে। অক্সিজেন গ্রহণ আপনার মনে ভালো মানসিক পরিবর্তন আনতে পারে। আপনি যখনই পারেন প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর অভ্যাস করুন।
৩। নিজেকে ভালোবাসুন
অতিরিক্ত চিন্তা মোকাবেলা করার জন্য আপনাকে নিজের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে, নিজেকে সময় দিতে হবে। বিরতি দিন এবং আত্ম-সচেতনতা অনুশীলন করুন। যদি মনে করেন জায়গা পরিবর্তন করলে ভালো লাগবে তাহলে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন, বাইরে যান কেনাকাটা করুন। যখনই আপনি কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছেন বা চাপ দিচ্ছেন সেই বিষয়টি খেয়াল করুন, বিরতি নিন এবং এটিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুন। একটি গভীর শ্বাস নিন, দেখবেন অনেক টা হালকা অনুভব করবেন।
৪। ডায়েরি লিখুন
প্রতিদিন আপনার অবসর সময়ে ‘ডায়েরি’ লিখতে শুরু করুন। সময় বের করা এবং একটি কাগজে আপনার মনের কথাগুলো লিখতে একটু কঠিন লাগতে পারে। প্রথমদিকে কঠিন মনে হলেও সময়ের সাথে সাথে, আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করার উপর এর প্রভাব বুঝতে পারবেন।
৫। ধ্যান বা মেডিটেশন
এটি যে কেবল আপনার মনকে শান্ত করে শুধু তাই না মেডিটেশন আপনার মন এবং শরীর উভয়কে শিথিল করে। ধ্যান আমাদের মন এবং শরীরের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। যদি আমরা এটিকে একটি অভ্যাস করে তুলি, তাহলে আমরা আমাদের মনের নতুন দিকগুলি অন্বেষণ করতে পারি এবং কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তাও কমিয়ে দেয়। আপনার ব্যস্ত সিডিউলের মধ্যে থেকে ৫ মিনিট সময় ব্যয় করুন ধ্যানের জন্য। ফলাফল দেখতে আপনাকে ধারাবাহিক হতে হবে, সময় লাগবে তবে অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনি ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
এই অভ্যাসগুলি অনুশীলন করার পরে, আপনি বুঝতে পারবেন যে অতিরিক্ত চিন্তা করা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব। আমি আশাকরি আপনি এই আর্টিকেল থেকে উপকৃত হবেন।
আমি রফিক মেহফুজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।