Walton Primo HM7 Review: দুর্দান্ত বাজেটে অলরাউন্ডার স্মার্টফোন!

সাশ্রয়ী দামে সেরা স্মার্টফোন বলতে আমাদের চোখে এখন যে ব্র্যান্ডটির নাম ভেসে ওঠে, সেটি হচ্ছে ওয়ালটন। দেশের বাজারে এন্ট্রি লেভেল স্মার্টফোনের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হচ্ছে ওয়ালটন। ওয়ালটন তাদের স্মার্টফোন উৎপাদনের শুরু থেকেই  প্রিমো সিরিজের অধীনে প্রতিনিয়তই বাজারে দারুণ দারুণ মডেলের নানান সব স্মার্টফোন নিয়ে আসছে।

কিছুদিন আগেই ওয়ালটন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে টিজার প্রকাশ করেছিল যে, তারা তাদের এইচএম সিরিজের নতুন স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসছে। অবশেষে তারা স্মার্টফোনটি বাজারে উন্মোচন করেই ফেলল; ওয়ালটনের নতুন এই স্মার্টফোনটি হচ্ছে প্রিমো এইচএম৭।

এই আর্টিকেলে আমরা প্রিমো এইচএম৭ স্মার্টফোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

একনজরে প্রিমো এইচএম৭ স্মার্টফোন,

  • ৬.৫২৮ ইঞ্চি ইন্সেল আইপিএস ডিসপ্লে প্যানেল
  • ৩ জিবি র‍্যাম, ৩২ জিবি রম
  • ট্রিপল ক্যামেরা সেটাপ
  • গর্জিয়াস ডিজাইন
  • Unisoc Tiger T610 চিপসেট, Mali- G52 জিপিইউ
  • Widevine L1 সাপোর্ট
  • অ্যান্ড্রয়েড ১১

ফোনটির বক্সের ভেতর আপনি যা যা পাবেনঃ প্রিমো এইচএম৭ ডিভাইস, একটি সিম ইজেক্টর পিন, একটি ট্রান্সপারেন্ট ব্যাক কভার, চার্জিং অ্যাডাপ্টার, ইউএসবি কেবল, প্রোটেকশন গ্লাস এবং কিছু পেপার ওয়ার্কস।

ডিসপ্লে এবং ডিজাইন

প্রিমো এইচএম সিরিজ বিখ্যাত বড় ডিসপ্লের জন্য, এইচএম৭ ডিভাইসটিতেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। স্মার্টফোনটিতে পাবেন ১৬০০*৭২০ পিক্সেল রেজুলেসনের ৬.৫২৮ ইঞ্চি বিগ ডিসপ্লে! যা একটি ইন্সেল আইপিএস প্রযুক্তির ডিসপ্লে প্যানেল। ১৮ঃ৯ আস্পেক্ট রেসিওর এই ডিসপ্লেটির উপরে পাবেন পাঞ্চহোল সেলফি ক্যামেরা।

সর্বপ্রথম আইফোন ৪এস এর মাধ্যমে এই ইনসেল আইপিএস ডিসপ্লে প্রযুক্তির দেখা মেলে। সাধারন আইপিএস ডিসপ্লেতে টাচ প্যানেল এবং ডিসপ্লে দুটি আলাদা লেয়ারে বিভক্ত থাকে। তবে ইনসেল আইপিএস ডিসপ্লেতে দুটি আলাদা লেয়ারের বদলে এখানে একটি সিঙ্গেল লেয়ার থাকে। একারনে ইনসেল আইপিএস ডিসপ্লে অনেক পাতলা এবং এটি অনেক বেশি টাচ রেস্পন্সিভও হয়ে থাকে। সুতরাং প্রায় ৭ইঞ্চির বিগ ডিসপ্লের পাশাপাশি যেহেতু ইনসেল আইপিএস প্যানেল পাচ্ছেন, সে হিসেবে ব্যবহারকারির ভিউইং এক্সপেরিয়েন্স হবে অনবদ্য; আর যদি আপনার কাজ হয় অনলাইন ক্লাস কিংবা অনলাইন মিটিং তাহলে তো বড় ডিসপ্লে আপনার অবশ্যই লাগবে!

স্মার্টফোনটি বাজারে পাওয়া যাবে দারুণ দুটি কালারে, দাম হিসেবে ডিজাইনের দিক দিয়ে স্মার্টফোনটি মোটেও আপনাকে নিরাশ করবে না। দারুণ এই ফোনটিতে পেয়ে যাবেন ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট! যা দিয়ে চার্জিং থেকে শুরু করে ডাটা ট্রান্সফারিং সব দিক দিয়েই এই ফোনে পাবেন দুর্দান্ত পারফর্মেন্স।

ক্যামেরা

স্মার্টফোনটির অন্যতম বিশেষ ফিচার এর ক্যামেরা। ফোনটির পেছনে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশসহ ১.৮ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ এআই ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ। যার প্রধান সেন্সরটি ১৩ মেগাপিক্সেলের। পাশাপাশি রয়েছে ২ মেগাপিক্সেলের পোর্টরেইট লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো সেন্সর। আকর্ষণীয় সেলফির জন্য ফোনটির সামনে রয়েছে ২.০ অ্যাপারচারের ৮ মেগাপিক্সেল মিডল পাঞ্চহোল ক্যামেরা। উভয় ক্যামেরায় ফুলএইচডি রেজ্যুলেশনের ভিডিও ধারণ করা যাবে।

ক্যামেরার বিশেষ ফিচারের মধ্যে রয়েছে পিডিএএফসহ অটোফোকাস, এআই ফেস ডিটেকশন, নরমাল মোড, প্রোফেশনাল মোড, পোরট্রেইট, ডিজিটাল জুম, বিএসআই, এইচডিআর, সেলফ টাইমার, টাচ ফোকাস, টাচ ক্যাপচার, ফিংগারপ্রিন্ট ক্যাপচার, ভলিউম ক্যাপচার, মিরর রিফ্লেকশন, স্লো মোশন, টাইম-ল্যাপস, প্যানোরামা, ফিল্টার, নাইট, বিউটি মোড, ইত্যাদি।

বাজেটে দারুণ হার্ডওয়্যার পারফর্মেন্স

স্মার্টফোনটিতে থাকছে Unisoc Tiger T610 SoC চিপসেটর। এটি ১২ ন্যানোমিটার প্রযুক্তির একটি চিপসেট, এটি ১ দশমিক ৮ ক্লক স্পিডের একটি অক্টাকোর চিপসেট। এই Unisoc Tiger T610 SoC এর সাথে ডিভাইসটিতে গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট থাকছে Mali- G52 GPU জিপিইউ। এই বাজেটে সাধারণত এই হার্ডওয়্যার স্পেক্স মানানসই, অনলাইন ক্লাস, দৈনন্দিন নিয়মিত অনলাইন সার্ফিং, এবং টুকটাক গেমিং এর মত নিয়মিত কার্যকলাপ এর জন্য এই স্পেক্স দারুনভাবে চলনসই।

স্মার্টফোনটির সিস্টেম ব্যাকআপ দিবে এতে থাকা ৩ জিবি র‍্যাম, পাশাপাশি এতে ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে ৩২ জিবি তো থাকছেই! তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার, যদি আপনার অতিরিক্ত স্টোরেজ প্রয়োজন হয়, তবে দুইটি সিমের পাশাপাশি এতে আপনি ১২৮ জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।

স্মার্টফোনটির এনটুটু বেঞ্চমার্ক অ্যাপে স্কোর এসেছে ১৭০০৩২। গিকবেঞ্চে সিঙ্গেল কোরে এসেছে ৩৪৩ এবং মাল্টিকোরে এসেছে ১১৪১। স্মার্টফোনটি ১০ফিঙ্গার মাল্টি-টাচ সাপোর্টেড।

Widevine L1 সাপোর্ট

বর্তমান সময়ে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন ওটিটি প্লাটফর্ম। নেটফ্লিক্স, এমাজন প্রাইমের মতন দারুণ সব ওটিটি প্লাটফর্মের কনটেন্ট ফুল এইচডিতে উপভোগ করার জন্য আপনার দরকার Widevine L1 সাপোর্ট। আর প্রিমো এইচএম৭ স্মার্টফোনটি এই Widevine L1 সাপোর্ট করে। সুতরাং নেটফ্লিক্সের মতন ওটিটি প্লাটফর্মের ভিডিওগুলো ফুল এইচডিতে উপভোগ করতে পারবেন এই স্মার্টফোনে খুব অনায়াসে!

পরিশেষে

ফোনটিতে সিকিউরিটি ফিচার হিসেবে পেয়ে যাবেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এবং ফেস আনলক সুবিধা। ফোনটিতে রয়েছে বিশেষ পকেট মোড, যেখানে পকেটে ফোন রাখলে আপনার ফোন একাই একাই বেশি সাউন্ডে রিংটোন দেবে এবং তুলনামুলক বেশি ভাইব্রেশন প্রদান করবে। দারুণ এই স্মার্টফোনটির বাজার মূল্য ১০৪৯৯ টাকা। বাজেট ফোন হলেও এতে পেয়ে যাবেন ৪৯০০ এমএইচ বিগ ব্যাটারি, যেটি দিয়ে ২ দিন পর্যন্ত ব্যাকআপ পেয়ে যাবেন অনায়াসে।

স্মার্টফোনের সাথে পেয়ে যাবেন রেগুলার ১ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি সহ ওয়ালটনের অন্যান্য সকল সুবিধা। দারুণ এই ফোনটি কিনতে পারবেন ওয়ালটনের যেকোনো প্লাজা থেকে; কিংবা অনলাইন থেকে কিনতে পারেন ওয়ালটনের নিজস্ব ইকমার্স প্লাটফর্ম ওয়ালকার্ট থেকে।

Level 12

আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস