জানি না কি ভাবে দেখতে দেখতে একশতটি টিউন করে ফেলেছি আজ এই একশত নম্বার টিউনে আপনাদের জানাবো কি ভাবে আমি টেকটিউনসে আসি।গত বছরের কথা কোন এক খবরের কাগজে দেখলাম টেকটিউনস নামের একটি সাইটে টিউন ফিকশন ২০০৮ নামে সাইন্স ফিকশন গল্প লিখার প্রতিযোগীতা হবে এবং সেরা গল্প গুলো একুশে বই মেলায় বের হবে।তখন প্রথম টেকটিউনসে আমার লেখা গল্প জমা দিতে আসি এবং সেই থেকেই টেকটিউনসের সাথে আছি।যেহেতু টেকে আমার আসার কারণ সাইন্স ফিকশন গল্প ছিল তাই আজ আমার একশত টিউনে আমার লেখা সেই সাইন্স ফিকশন গল্পটি আপনাদের সামনে টিউনের মাধ্যমে দিতে চাই আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আর হ্যা আগামী একুশে বই মেলায় আমার লেখা প্রথম সাইন্স ফিকশন গল্পের বই বের হচ্ছে আশা করি সেটাও আপনাদের ভাল লাগবে।
রুইসান বিস্বয়ে সামনের দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে। স্ব”ছ জলের নিচ থেকে যেন ফুটে উঠছে লেখাগুলো। অন্ধকার ঘরের মধ্যের সামনের দেওয়ালে শুধু কথাগুলো জ্বলজ্বল করছে। -
ফিরে চলুন ১৯৭১ এর সেই ভয়াবহ স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং হত্যা করুন-সেই রাজাকারদের এবং মেলেটারিদের।
আপনি যে সেক্টরে যুদ্ধ করতে চান সেখানেই নিয়ে যাব।
আপনি রাজাকারটিকে বা মেলেটারিকে গুলিবিদ্ধ করে স্বাধীনতা বিজয়ের আনন্দ লাভ করুন।
লেখাগুলোর দিকে তাঁকিয়ে টিনেজার রুইসানের চোখ দুটো আনন্দে জ্বলজ্বল করে ওঠে। (কারণ মুক্তিযুদ্ধের গল্পের বই পড়ে রাজাকার ও মেলেটারির ওপর ওর ঘৃণা জন্মেছে।) খুশির ঝলকে গলা বুঝে আসে তার ডান হাতটা আপনা থেকেই সামনে চলে আসে ডান হাতের ১০,০০০ টাকার চেকটা ডেস্কের পিছনে বসা লোকটার দিকে এগিয়ে দেয় রুইসান। একটু পরে দ্বিধাম্বিত গলায় বলে ওঠে রুইসান,
অতীতের এই যুদ্ধ থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার দ্বায়িত্ব নিচ্ছেন আপনারা?
- না সেসব কোন দায়িত্ব নিই না। শুধু আপনি যে অতীত দিনে ফিরে গিয়ে যুদ্ধ দেখতে পাবেন সেটুকু দেখানোর দ্বায়িত্ব আমাদের। - কর্মচারিটি বলে উঠে।
দেখুন সামনে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তিনি হচ্ছেন মি: জিসান। উনি আপনার অতীত সফরের গাইড উনি বলবেন কখন কাকে গুলি করবেন। মনে রাখবেন মি: জিসান যদি বলেন, “গুলি করবেন না, গুলি করা বন্ধ রাখবেন।” এসব আমাদের কঠিন নিয়ম। নিয়ম না মানলে ১০,০০০ টাকা ফাইন দিতে হবে তারওপরে গভর্ণমেন্টের জরিমানা বা শাস্তি সে তো থাকবেই। পরিস্কারস্বরে নিয়ম-কানুন জানিয়ে দিয়ে কর্মকর্তাটি বলে আসুন এই চুক্তিপত্রে সই করুন। ফর্মটি হাতে নিয়ে দেখল রুইসান তাতে লেখা -
৭১ এর মেলেটারিদের হাতে মারা পড়লে বা কোন বিপদে পড়লে কম্পানী বিন্দুমাত্র দ্বায়ি থাকছে না। পাকিস্তানি মেলেটারিরা যেমন হিংস্র তেমন ভয়াবহ। কারণ দশটি বাঙালী মরলে একটি মেলেটারী মরেছে। সামান্য ভুল মানেই মৃত্যু।
রুইসান রাগে রাঙ্গা হয়ে ওঠে। চিৎকার করে বলে -
১০,০০০ টাকা কবুল করে এখন ভয় দেখাচ্ছেন। যাতে অতীত দিনের যুদ্ধ দেখতে না যাই?
মশাই কথাটা ১ম অংশ সত্য না হলেও ২য় অংশ সত্য। আমরা মশাই সবকিছুই পরিস্কার করে বলতে চাই। মুখের কথায় যারা ভয় পায় তাদের অতীতে না যাওয়াই ভাল। আমাদের কাজ শুধু অতীতের জগতে নিয়ে যাওয়া। যুদ্ধ দেখে বা করে যে উত্ত্বেজনাটুকু পাবেন এটাই আপনার। শেষ মুহূর্তে একবার ভেবে নিন, আপনি যাবেন কি না? বিপদ আছে আবার বিজয়ের আনন্দও আছে। এই নিন আপনার চেকটা। ঠকবাজি করা আমাদের কোম্পানীর কাজ নয়।
রুইসান চেকটার দিকে সিঁদুর হয়ে তাকিয়ে থাকে। ডান হাতের মুঠোটা কয়েকবার খুলে ও বন্ধ করে উত্ত্বেজনা চাপাতে চায়। শেষে বলে -
ঠিক আছে যাওয়া যাক।
যাত্রা শুভ হোক মি: রুইসান বলে কর্মচারীটি।
...........................................................................................................................................................
রুইসান আয়নাতে নিজেকে দেখছে রুপালী রঙ্গের ধাতব পোশাক পরা। হাতে বিশেষ আলোক রশ্মিযুক্ত রে-গানটি।
জিসান বলে উঠল - সাবধান বন্দুকটি বে-হাত করবেন না।
চারকোণা ঘরের মত দেখতে টাইম মেশিনের ভিতরে সবাই ঢুকে পড়ল। চালু হল টাইম মেশিন। একটা দিন পিছনে ফিরে গেল রুইসানরা, তারপর একমাস, তারপর একটা বছর তখনও মেশিন চলছে গমগম শব্দ করে। তারা ফিরল ২০০০ সাল তারপর আরও অতীতে ১৯৮০ সালে অবশেষে ৭১ এ ।
জিসান বলল - আমরা চলে এসেছি দ্রুত অক্সিজেনের হেলমেটটা মাথায় চাপিয়ে নিন। মনে রাখবেন কোথাও কোথাও মেলেটারীরা একা থাকে না। ব্যাকআপ হিসেবে কয়েকজন সাথে থাকে। বিশেষ নজর রাখবেন এবং আশেপাশে লক্ষ্য করে গুলি করবেন। মি: রুইসান আমরা এখন অতীতের সময়ে ফিরেছি। এখন বাংলার রাস্তাঘাটে যুদ্ধের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়েছে। জিসানের কথার সাথে মাথা নেড়ে সায় দিল সফরের অন্য সঙ্গীরা। টাইমমেশিন ধাতব গলায় বলে উঠল, আপনারা এখন নামতে পারেন। শুভ হোক আপনাদের ৭১ এর যাত্রা। জিসান টাইমমেশিনের ধাতব রাস্তা দেখিয়ে বলে, মি: রুইসান এই রাস্তা দিয়ে আমরা ৭১ এর যুদ্ধ শুরু করবো। এই ধাতব রাস্তা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৬ ইঞ্চি উঁচুতে ঝুলে আছে। মধ্য বিকর্ষনে যুক্ত হওয়ায় এই ধাতব রাস্তা মধ্য আকর্ষন প্রতিহত করে ঝুলে আছে। রুইসান অবাক গলায় প্রশ্ন করে এটাই কি ৭১ এর চেহারা? হ্যাঁ এটাই ৭১ এর ঢাকা। ২০০ বছরে পাল্টে গেছে এই ঢাকা। তাই আপনার কাছে অচেনা মনে হচ্ছে। এই রাস্তা ধরে আপনি ইচ্ছামত ঘোরাফেরা করতে পারেন। শুধু সাবধান রাস্তা থেকে কিছুতেই মাটিতে পা দেবেন না। অতীতের গাছপালা, পশুপাখী এমনকি ইঁদুরও মারবেন না অথবা ধরবেন না। এইভাবে সাবধান করলেন জিসান।
কিন্তু কেন মি: জিসান? আমার একটা ইঁদুর মারায় পৃথিবীর কি ক্ষতি হবে জেদ ধরে প্রশ্ন করল রুইসান।
জিসান বলল - ইঁদুর খেয়ে বেঁচে থাকে খরগোশ, খরগোশ খেয়ে বনশিয়াল, শিয়াল খেয়ে হিংস্র জীবজন্তু বাঘ, সিংহ বেঁচে থাকে। একটি ইঁদুর মারার ফলে ধীরে ধীরে খাদ্যের অভাবে কমতে থাকল পশুপাখী। এই যে একে অন্যকে জীবন দিয়ে খাদ্যের যোগান দেয় এটাই তো পরিবেশের ভারসাম্যের মূল কথা।
রুইসান - মি: জিসান তাহলে মেলেটারী মারব না?
জিসান - নিশ্চয় মারবেন আর এজন্যই তো আপনি ১০,০০০ টাকা দিয়েছেন। যাকে মারবেন তার গায়ে লাল চিহ্ন দেয়া হয়েছে।
সে কি? প্রশ্ন করল রুইসান
জিসান - কারণ যাদের গায়ে লাল চিহ্ন দেয়া আছে অতীতে তাদের ঐ সময় মৃতু হয়।
ধাতব রাস্তা দিয়ে কিছুদূর এগুতেই দেখতে পেল কিছু মেলেটারী ও রাজাকার।তাদের সামনে বেশ কিছু লোক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। মেলেটারীরা এক এক করে সারিবদ্ধ লোকদের গুলি করে মারছে। তারমধ্যে একটি ১০/১২ বছরের ছেলে ছিল। মেলেটারী অফিসার ছেলেটিকে ছেড়ে দিল।
তখনই রাজাকারটি বলে উঠল - স্যার সাপের বচ্চাও বড় হয়ে সাপ হয়, একেও মেরে ফেলুন।
তখনই মেলেটারী বাচ্চাটিকে গুলি করল। রুইসান আর নিজেকে সামলাতে পারল না। সে তার রে-গানটি তুলে রাজাকারটিকে গুলি করল। আর তখনই র“ইসানের চোখ আলোয় ঝলসে উঠল কারণ-সে লাল চিহ্ন ছাড়াই গুলি করেছে। রুইসানের যখন জ্ঞান ফিরল তখন সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। হাতের কাছেই খেয়াল করল একটি পত্রিকা যার শিরোনামে লেখা বাংলাদেশ বিশ্বের ধনী দেশগুলোর একটি। রুইসান বুঝতে পারল তার একটি ভুলেই এই পরিনতি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
বিঃদ্রঃ - গল্পটি এখানে ছোট করে দেওয়া হয়েছে কেমন লাগলো মন্তব্য জানান .......
আমি মঈনুল হক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 159 টি টিউন ও 299 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সব সময় নতুন কিছু শিখতে চেষ্টা করি ..........
অভিনন্দন মঈন ……………….. আশা করি তুমি আমাকেও ছাড়িয়ে যাবে।