ধরুন আপনি একজন স্বপ্নচারী মানুষ। আপনার বিভিন্ন বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা বা কাজ রয়েছে। আপনি একজন বড় নেতা হতে চান কিংবা একজন উচ্চমানের লেখক হতে চান। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আপনার সেই স্বপ্নের পথে আপনি নিজেই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে আছেন কারন আপনি কোথাও গুছিয়ে কথা বলতে পারছেন না, এমনকি আপনার চাকুরীর ইন্টাভিউতে প্রশ্নকর্তার প্রশ্নে সঠিক উত্তর ঠিক দিতে পারছেন না। আপনার অভ্যাস নেই নিজেকে উপস্থাপন করার, নিজের কথাগুলোকে নিজের মনের মত সুচারুভাবে প্রকাশ করার। আপনার সংকোচ হচ্ছে, নানা ধরনের জড়তায় উত্তর গুলো গুলিয়ে ফেলছেন। আপনার এই অক্ষমতার জন্য দায়ী হচ্ছে আমদের সমাজ ব্যবস্থায় একটি বিষয় বা শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা আসলে কথা বলতেই ভুলে গেছি। বির্তক একটি অনন্য শিল্প আদিকাল থেকেই, সে গ্রীক সভ্যতা থেকে মানুষের মধ্যে বির্তকের উৎপত্তি। মানুষ জম্ম থেকে মেনে নিতে চায় না, সে প্রতিবাদী ও যুক্তি দিয়ে প্রতিটি বিষয়কে নিরীক্ষা করতে ভালোবাসে।
একটি শিশুর জীবন কিভাবে শুরু করলে আমরা একটি উৎকৃষ্ট বুদ্ধিভিত্তিক ফল লাভ করতে পারি সে বিষয়ে ভাবি! একটা সময় ছিলো যখন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় টেলিভিশনে প্রচুর বির্তক প্রতিযোগিতা হতো। সেখানে দুটি পক্ষ থাকত, একটি নিদিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হতো, শত শত যুক্তি ও প্রমান দিয়ে বির্তকটি একটি পরিপূর্ণতা লাভ করত। এখন আর সেইভাবে আমরা বির্তক দেখতে পাই না। কারন আমরা যেন বির্তক থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছি বা আমাদের সময়টাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, যেখানে এখন আর এই শিল্পটির কদর নেই। এই ইউটিউব ও ফেসবুকের যুগে আমাদের সন্তানদের বুদ্ধি ও চিন্তার উতকর্ষতার বিষয়টি ভুলেই যেতে বসেছি। তবুও ফেসবুকে ইদানিং দ্বীমত দেখা যায়, পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হয়। আমরা যদি বলতে না শিখি, তাহলে ত জানতে পারবো না। অদূর ভবিষ্যৎতে একটি যুক্তিহীন সমাজ বা শুধু পুথিগত বিদ্যার উপর নির্ভরশীল সমাজ বা সভ্যতা পেতে পারি। আর এজন্যই আমাদের সমাজে মোসাহেবদের লেহন আজ জনপ্রিয়, যে কোন উন্নতির পিছনে বুঝে না বুঝে হ্যাঁ বা সম্মতি দেওয়া লোকগুলো এগিয়ে আছে। যদি কোন সচেতন মানুষ বা সমাজের শিক্ষিত শ্রেনী তার সময়কে কোন সংশধোন বা সংস্কার করার প্রয়োজনবোধ করে না, তবে সে সমাজ অতি দ্রুতই একটি অন্ধকার সমাজে পরিবর্তন হবে। আমাদের উচিত প্রতিটি বিষয়কে যুক্তি-খন্ডন দিয়ে বিচার করা। সমাজের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট আইন খুঁজে বের করা, যেন আমরা একটি মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। সমাজের প্রতিটি স্থরে বির্তকের ব্যবস্থা করে সমাজের মানুষকে একটি গঠনমূলক বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে সৎ ও মানবিক মানুষকে গড়ে তুলতে হবে।
‘বির্তক’ কে যদিও তর্কের বিপরীত শব্দ বলা হয়। কিন্ত এর বিপরীতে রয়েছে অনেক যুক্ত, তথ্য ও দার্শনিক চিন্তা ধারা যার মাধ্যমে একজন বির্তাকিকে বির্তক করতে হয়। শুধু তাই ই নয়, এজন্য প্রয়োজন অনেক পড়াশোনা, তথ্য সংগ্রহ ও সমসাময়িক জ্ঞান। এই ধারাকে বাংলাদেশে আবারো প্রতিষ্ঠিত করা উচিত, কারন আমরা একটি জবাবহীন জাতি থেকে একটি পরিনত জবাবদিহিতামূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। যেখানে প্রতিটি কাজের অত্যন্ত একটি কারন ও বাস্তবিক যুক্তি থাকতে হবে। প্রতিটি পাড়া মহল্লা, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিবেটিং ক্লাব গড়ে উঠুক। মানুষ তার সৃষ্টিশীলতা দিয়ে মানুষের সমাজকে তুলে ধরুক অন্যন্য উতকর্ষতায়।
আমি মোঃ আল আমীন। COO, Utpadok.com, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি লেখালিখি করতে ভালবাসি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড করে থাকি। আমি পত্রিকা, সামাজিক মাধ্যমে ও ব্লগে লেখালিখি করি। আমি বই পড়তে খুব ভালবাসি। এছাড়াও আমার নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে। আমি সেই ব্যবসার সাথে দীর্ঘ দিন যুক্ত আছি।