সফেদা বা "সবেদা" ইংরেজি :Sapodilla, বৈজ্ঞানিক নাম:(Manilkara Zopota) এক প্রকার মিষ্টি ফল। সফেদা গরম কালের ফল। তবে ফলটি সারা দেশে পাওয়া গেলেও এটি আমাদের দেশী ফল নয়। এই ফলের উৎপত্তি স্থান হচ্ছে মেক্সিকোর দক্ষিণাংশ, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারাবীয় অঞ্চলে। আমাদের প্বার্শবর্তী দেশ ভারতেও সফেদার চাষ হয়, সেখানে এটি "চিক্কু" নামে পরিচিত। সফেদা শুধু স্বাদ ও গন্ধের জন্য পরিচিত নয় এতে রয়েছে অনেক রকমের পুষ্টি উপাদান। তাই আজকে এই বহুমুখী গুণ সমৃদ্ধ ফলটির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
প্রতিটি সফেদায় শক্তি আছে ৮৩ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৯.৯ গ্রাম, ডায়াটরি ফাইবার ৫.৩। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। এতে আরো আছে মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ট্যানিন এবং পলিফেনলিক যৌগ যা আমাদের দেহকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
ভেষজ গুণ:-
(১)সফেদায় ভিটামিন "এ", ক্যালসিয়াম, আয়রণ ও ফসফরাস আছে যা চোখ, ত্বক ও হাড়ের জন্য খুবই উপকারি। এটি হাড়ের গঠন মজবুত করে এবং রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায়।
(২)এই ফলের শরবত জ্বর নাশক হিসাবে কাজ করে।
(৩)এতে রয়েছে ভিটামিন "সি" যা সর্দি, কাশি উপশম করতে সাহায্য করে এবং ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এটি ফুসফুসকে ও ভালো রাখে।
(৪)সফেদায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য আশঁ রয়েছে যা বদহজম এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদন থাকায় এটি গ্যাসট্রিটিস ও দূর করতে পারে।
(৫)এটি একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, তাই প্রাকৃতিক জোলাপ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
(৬)সফেদা পানিতে ফুটিয়ে রস বের করে খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়।
(৭)এই ফলটি কোলেস্টেরলের মাএা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা হার্টের জন্য খুবই উপকারি। তাছাড়া এটি কিডনি ভালো রাখতে ও সাহায্য করে।
(৮)সফেদায় চর্বি না থাকায় ডায়টিং-এর জন্য ও খুব ভালো। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
(৯)এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ ও আছে যা শরীরে শক্তি যোগায়।
(১০)মানসিক রোগ, অনিদ্রা, উদ্বেগ এবং বিষন্নতা রোগ নিরাময়ে সফেদা খুবই কার্যকারি। এটি স্নায়ু শান্ত রাখার এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য বিশেষ ক্ষমতা সমৃদ্ধ একটি ফল।
(১১)সফেদার খোসা শরীরের ত্বক ও রক্তনালি দৃঢ় করে রক্ত ক্ষরণ বন্ধে সাহায্য করে। তাছাড়া সফেদা গাছের পাতা ছেঁচে সদ্য ক্ষত হওয়া স্থানে লাগালে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়।
ত্বকের যত্নে সফেদা:-
সুস্থ ত্বক ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সফেদার কার্যকারিতা অনেক।
(১)এতে বিদ্যমান ভিটামিন ও মিনারেল কোষের ক্ষয় পূরণ করে ও নতুন কোষ উৎপাদনে সাহায্য করে।
(২)তাছাড়া এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং বয়সের ছাপ পড়া থেকেও রক্ষা করে।
(৩)এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "এ", "সি" ও "ই" আছে যা ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল রাখে।
(৪)সফেদার বীজের তেল ত্বকের ইনফেকশন দূর করে এবং ছএাকের আক্রমণ রোধেও সহায়তা করে এবং ভাইরাস জনিত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি ফলমূলও রাখা খুব দরকার। পুষ্টিকর ফল হিসাবে সফেদা রাখতে পারেন নিয়মিত খাদ্য তালিকায়। আর এটি যেহেতু এই মৌসুমে সহজলভ্য ও।
আসুন এই বর্ষামৌসুমে বাড়ির আঙিনায় বা জায়গা কম থাকলে ছাদে সফেদা গাছের চাষ করি। জ্যৈষ্ঠ থেকে শ্রাবণ মাস চারা রোপণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। ফলের বীজ থেকেও চারা উৎপাদন করে গাছ রোপণ করা যায়। থাই সফেদা ফল দিবে ১২ মাস।
আমি তুহিন আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।