ওয়ালটন বাজারে বেশ কিছু মাস আগে লঞ্চ করে তাদের বাজেট রেঞ্জে দারুন একটি স্মার্টফোন প্রিমো এইচএম৫। যারা ১০ হাজারের নিচের বাজেটে একটি স্মার্টফোন চাচ্ছিলেন, যেটিতে মাল্টি টাস্কিং করা যাবে, গেমিং করা, তাছাড়াও করা যাবে অন্য সবরকম কাজ যা একটি স্মার্টফোনে করতে হয়, তাদের জন্য প্রিমো এইচএম৫ ছিল অনবদ্য। আর আজকের আর্টিকেলে আমি প্রিমো এইচএম৫ এর ৪ জিবি র্যাম ভার্সন নিয়ে আলোচনা করব। প্রিমো এইচএম৫ এর ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি রম ভার্সনের বাজার মূল্য ৯৪৯৯ টাকা।
আনবক্স করলে ফোনটির ভেতরে যা যা পাবেনঃ
বাজেট ডিভাইস হলেও প্রিমো এইচএম৫ এর ডিজাইন দারুন। স্মার্টফোনটি একটি প্লাস্টিক ইউনি-বডি ডিজাইনে তৈরি। নিচে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট এর একপাশে স্পিকার এবংঅন্যপাশে মাইক্রোফোন, ডানপাশে পাওয়ার এবং ভলিউম পোর্ট, উপরে অডিও পোর্ট এবং বামপাশে একটি সিম ডেডিকেটেড এসডি কার্ড ট্রে পাবেন। স্মার্টফোনটির তিনটি কালার ভেরিয়েন্ট বাজারে পাওয়া যাবে, আর এগুলো হলঃ ব্ল্যাক, ব্লু(মিডনাইট সায়ান) এবং পার্পেল। ব্ল্যাক কালার ভেরিয়েন্টে রিয়ার প্যানেল গ্লিটার এর মত চিকচিক করবে। আর বাকি দুই কালার ভেরিয়েন্ট রিয়ার প্যানেলে আপনাকে গ্র্যাডিয়েন্ট কালার ফিনিস দেবে। স্মার্টফোনটির ফিনিসিং গ্লসি, তাই কিছুটা পিচ্ছিল লাগতে পারে। তবে একহাতে স্মার্টফোনটিকে খুব সহজে ব্যবহার করা যাবে।
স্মার্টফোনটিতে পাবেন ৬.১ ইঞ্চি উপ্লাস আইপিএস ডিসপ্লে। পুরো ব্রাইটনেসে সূর্যের সরাসরি আলো ব্যাতিত আর তেমন সমস্যা হবেনা। আর ডিসপ্লের কালার-কনট্রাস্ট লেভেল গুলোও চলনসই। ডিসপ্লেটির এস্পেক্ট রেশিও ১৯ঃ৯। আর এই ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ১৫৬০*৭২০ পিক্সেল। স্মার্টফোনটিতে ভিউইং এঙ্গেলও যথেষ্ট ভালো এবং কালার শিফটিং একদম নেই বললেই চলে।
স্মার্টফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১০ পাই এডিশন। আর এর কাস্টম রমটি পুরোপুরি স্টক, আর ইউআই ট্রানজেকশনও যথেষ্ট স্মুথ। আপনি স্টক লাভার হয়ে থাকলে আশা করি ফোনটি ব্যবহার করে পুরো স্টক রম এর মজাটি পাবেন।
প্রিমো এইচএম৫ ডিভাইসকে হার্ডওয়্যার এর দিক দিয়ে ব্যাকআপ দিবে মিডিয়াটেক এর ১২ ন্যনোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি হেলিও এ২০ চিপসেট। এটি একটি ১.৮ গিগাহার্জ ক্লকস্পিডের কোয়াড কোর সিপিইউ।
স্মার্টফোনটিকে সিস্টেম ব্যাকআপ দিবে একটি ৪ জিবি র্যাম। এর সাথে ডিভাইসটিতে ইন্টারনাল স্টোরেজ পাওয়া যাবে ৬৪ জিবি। স্মার্টফোনটিতে পাবজি এবং ফ্রিফায়ারের মত গেমস খেলা যাবে দারুন ভাবে। আর ইন্টারনাল স্টোরেজ বেশি হবার কারনে মাল্টিটাস্কিং এও স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে শান্তি পাবেন। এর ডেডিকেটেড স্লটে স্মার্টফোনটিতে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রিমো এইচএম৫ স্মার্টফোনটির অনন্য একটি ফিচার বলা যেতে পারে এর ক্যামেরা সেকশনকে। কেননা ফোনটিতে প্রাইমারি সেন্সর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সনির ১৩ মেগাপিক্সেল সেন্সর। স্মার্টফোনটির ক্যামেরা অনেক মিড বাজেট শক্তিশালী স্মার্টফোনের ক্যামেরার সাথেও টেক্কা দিতে সক্ষম। কালার, শার্পনেস, ডিটেইলস দাম হিসেবে দারুন। তবে আলো কমে গেলে এর পারফর্মেন্স একটু কমে আসতে শুরু করে এবং ছবিতে হালকা নয়েস চলে আসে, তবে স্বাভাবিক আলোতে স্মার্টফোনটি দিয়ে দারুন সব ছবি ধারন করা যায়। আর এই ক্যামেরা দিয়ে ১০৮০ পিক্সেল রেজুলেসনে ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন। আর ক্যামেরার দিক দিয়ে এই বাজেট সেকশনে সবচেয়ে সেরা স্মার্টফোন ক্যামেরার কথা বলা হলে সেখানে প্রিমো এইচএম৫ থাকবে।
স্মার্টফোনটির ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরাও সেলফি লাভারদের নিরাশ করবে না। আর ফ্রন্ট সেলফি ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি ফোন কোন রিটাচ করবে না, একদম Raw ছবিটিই উঠবে। আর স্টেবলভাবে ফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুললে আপনি খুব ভালো শার্পনেস যুক্ত ছবি ধারন করতে সক্ষম হবেন।
ওয়ালটনের অন্যসকল স্মার্টফোনের মতই এই ‘প্রিমো এইচএম৫’ এও পাবেন ১ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি এবং ৩০ দিনের রিপ্লেস্মেন্ট গ্যারান্টি।
অবশ্যই প্রশ্ন আসবে, ওয়ালটন প্রিমো এইচএম৫ স্মার্টফোনটি কেমন? ৯৪৯৯ টাকায় ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি রম এক কথায় অসাধারন! স্মার্টফোনটির সামনে এবং পিছে দুটোতেই ক্যামেরা কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো। এক হাতে স্মার্টফোনটি ব্যবহার করতে পারবেন খুবি সহজে, আর ৪৯০০ এমএএইচ ব্যাটারি থাকার ফলে ফুল চার্জে ২ দিনের মত ব্যাটারি ব্যাকআপও পেতে পারেন। আর এই বাজেট এর ভেতর যদি আপনাকে স্মার্টফোন কিনতে হয়, তবে নিঃসন্দেহে ওয়ালটন প্রিমো এইচএম৫ আপনার সেরা পছন্দ হতে পারে।
আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।