রিভারাইন, মার্বেল এবং ভেঞ্চুরি সিরিজের মডেলের এসি দিয়ে বাজারে বেশ সাফল্য অর্জনের পর বেভেলিন নামক নতুন একটি এসি সিরিজ নিয়ে এসেছে দেশীয় ইলেকট্রনিকস জায়ান্ট ওয়ালটন। সম্প্রতি ওয়ালটন বেভেলিন সিরিজের অধীনে 'ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার' প্রযুক্তি সম্বলিত একটি নতুন ১৮০০০ বিটিইউ তথা ১.৫ টনের একটি এসি বাজারে এনেছে, যার দাম রাখা হয়েছে মাত্র ৬৩, ০০০ টাকা৷
বেভেলিন এসিটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তি। ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি সাধারন ইনভার্টার এসি থেকে অনেক বেশি কার্যকর। নন-ইনভার্টার এসি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অন-অফ হওয়ার মাধ্যমে। এখানে এসি পূর্ণ শক্তিতে চালু হওয়ার পর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক অবস্থায় এলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হয়ে যায়। আবার ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গেলে, তখন চালু হয়। এভাবে বারবার এসি চালু ও বন্ধ হওয়ার কারণে, এসি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়।
অন্যদিকে ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে রুমের পরিবেশের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটি শক্তি খরচ কমিয়ে নিয়ে আসে। এভাবে কম শক্তিতে চলার কারণে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে। ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিটিতে ব্রাসলেস ডিসি মোটর ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে এটি খুবই স্মুথ এবং নিঃশব্দের সাথে কাজ করতে সক্ষম। এতে করে রাতে ঘুমানোর সময় এই এসি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন কোন যান্ত্রিক শব্দ আসবে না, যা আপনার ঘুমকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই এই এসিটি তার নিজের কাজ খুব ভালোভাবে করে যাবে একদম নিঃশব্দে পূর্ণ দক্ষতার সাথে। আর ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির ফলে কম্প্রেসর এর নিয়ন্ত্রণ এই এসিটিতে অনেক পরিকল্পিত, যা এসিটিকে অন্যসব ইনভার্টার এসির থেকে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করেছে।
বেভেলিন ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার এসিটি মাল্টি ডাইরেকশনে বাতাস প্রবাহ করতে সক্ষম। বহু এসি শুধু সিঙ্গেল ডাইরেকশনে বাতাস প্রবাহ করে, যার ফলে যারা কেবল এসির সামনে অবস্থান করে তারাই বাতাস পায়, ঘরের কোনায় কিংবা অন্য কোন স্থানে থাকা ব্যক্তি বাতাস পায় না। তবে বেভেলিন এসির মাল্টি ডাইরেকশনে বাতাস প্রবাহ করার সক্ষমতার ফলে সব দিকেই সমানভাবে শীতল বাতাস প্রবাহিত হবে।
বেভেলিন ইন্টেলিজেন্ট স্মার্ট এসিতে আপনি পাবেন ১৬ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত টেম্পারেচার মোড। বাজারের বহু এসিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাওয়া যায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে এতে সর্বনিম্ন ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পাবেন।
আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের জন্য আর৪১০এ হল একটি মানসম্মত রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, আর ৩২ তার থেকেও পরিবেশসম্মত গ্যাস। আগে আর২২ ব্যবহার করা হত যা ছিল অজোন স্তর জন্য খুবই মারাত্তক।
যেহেতু গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর মত বৈশ্বিক সমস্যার জন্য অন্যতম দায়ী এসির মত ইলেকট্রনিক্স এপ্লায়েন্স, তাই এসিতে সঠিক এবং পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তাও বিবেচনার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস এর আরেকটি নিয়ামক মাত্রা হল GWP, তথা গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়াল মান। GWP মান যত কম হবে এসিটি বাতাসে তত কম তাপ উৎপন্ন তথা কার্বন ছাড়বে। R-410A রেফ্রিজারেন্ট এর GWP মান ২০৯০। এবং R-32 রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, এটির GWP মান ৬৭৫।
বাংলাদেশের মত দেশে এসির মত হাই ইলেকট্রিসিটি কনজিউমিং ডিভাইসের ক্ষেত্রে এটি কতটা বিদ্যুত সাশ্রয়ী তা বিবেচনা করা খুবই জরুরী। বেভেলিন এসিটির ইনপুট পাওয়ারও তুলনামূলকভাবে কম, আর এসিটি ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির হওয়ার ফলে, তুলনামূলকভাবে অনেকটা বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।