এসি কেনা মোটেও সহজ কোন কাজ নয়। এসিটি কতটা বিদ্যুৎ, ঘর আদৌ কতটা ঠাণ্ডা করবে সব কিছুই ভাবার বিষয়। আপনি ছোটো ঘরের জন্য ইয়া বড় চিলড এসি কিনবেন তাতেও কিন্তু হবেনা খাজনার চাইতে বাজনা বেশি হবে। আপনার ঘর যদি ১২১ থেকে ১৫০ স্কয়ার ফিটের ভেতর হয় তাহলে আপনি অনায়াসেই ১টনের এসি ব্যবহার করে আপনার কাজ চালিয়ে নিতে পারছেন।
আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে রিভারাইন মডেলের নতুন ইনভার্টার প্রযুক্তির ১২০০ বিটিইউ তথা ১ টন ক্যাপাসিটির স্মার্ট এসি WSI-RIVERINE-12A [Smart]। এসিটির বাজার মূল্য ৪৭, ৫০০ টাকা।
বিটিইউ | ১২০০০ |
কুলিং ক্যাপাসিটি (ওয়াট) | ৩৫১৭ |
ইনপুট পাওয়ার | ১১৭০ |
রেফ্রিজারেন্ট | আর-৩২ |
ফিচার | টাইমার, স্লিপ, চাইল্ড লক, ওয়াইফাই কন্ট্রোল, এলসিডি ডিসপ্লে, অটো রিস্টার্ট |
দাম | ৪৭, ৫০০ |
রিভারাইন [স্মার্ট] হল একটি আইওটি (ইন্টারনেট অফ থিংস) প্রযুক্তি সুবিধাসম্পন্ন এসি। যার ফলে আপনি এটিকে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইস, যেমন স্মার্টফোন দিয়ে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। আপনি এই এসিকে ‘গুগল হোম’ এর মতো স্মার্ট হোম কন্ট্রোলার ডিভাইস এর সাথে যুক্ত করেও নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। এর সাথে আসা একটি মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে এই এসিটি আপনি স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
যেহেতু এসিটি আপনার ওয়াইফাই এর সাথে যুক্ত থাকতে সক্ষম, তাই আপনি এটিকে অ্যাপস এর মাধ্যমে এসির কাছে না থাকলেও, অন্য যেকোনো জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। চিরচলিত এসির রিমোর্ট সবসময় হয়ত হাতের কাছে থাকে না, তবে মুঠোফোন সবসময়ই আমাদের সাথে থাকে, একারণে এসি নিয়ন্ত্রন হবে আরও স্মার্ট। আপনি একের অধিক এসি, এই একটি সিঙ্গেল অ্যাপস বা অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন। এর পাশাপাশি অ্যাপস থেকে এসির দৈনিক পাওয়ার কন্সামপশন রিপোর্ট, স্ট্যাটিস্টিক রিপোর্ট, পারফর্মেন্স ডাটা ইত্যাদি তথ্য পাবেন।
রিভারাইন একটি ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি। নন-ইনভার্টার এসি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অন-অফ হওয়ার মাধ্যমে। এখানে এসি পূর্ণ শক্তিতে চালু হওয়ার পর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক অবস্থায় এলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হয়ে যায়। আবার ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গেলে, তখন চালু হয়। এভাবে বারবার এসি চালু ও বন্ধ হওয়ার কারণে, এসি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়।
অন্যদিকে ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে রুমের পরিবেশের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটি শক্তি খরচ কমিয়ে নিয়ে আসে। এভাবে কম শক্তিতে চলার কারণে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে। ইনভার্টার প্রযুক্তির এসিটিতে ব্রাসলেস ডিসি মোটর ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে এটি খুবই স্মুথ এবং নিঃশব্দের সাথে কাজ করতে সক্ষম। এতে করে রাতে ঘুমানোর সময় এই এসি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন কোন যান্ত্রিক শব্দ আসবে না, যা আপনার ঘুমকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই এই এসিটি তার নিজের কাজ খুব ভালোভাবে করে যাবে একদম নিঃশব্দে পূর্ণ দক্ষতার সাথে।
ঘর কতোটা এবং কত দ্রুত ঠাণ্ডা হবে তা নির্ভর করে এসির ভিতর থাকা ফ্যান এর অপর। এই ফ্যান যত বেশি বড় হবে, এই এসিকে এর ফলে তত বেশি কার্যকর বলা যাবে। এই এসিটিতে থাকছে তুলনামূলক বড় ক্রস ব্লো ফ্যান। আর এর ফলে বাজারের অন্য সব এসির চাইতে এই এসিটির কুলিং স্পিড হবে বেশি তাড়াতাড়ি। আর এই ক্রস ব্লো ফ্যানটি অতো বেশি নয়েসি নয়, খুবই সাইলেন্টলি এর কাজ করে যায়।
এই এসিটি মাল্টি ডাইরেকশনে বাতাস প্রবাহ করতে সক্ষম। অনেক কেবল এসি এক দিকেই বাতাস প্রবাহ করে, যার ফলে যারা কেবল এসির সামনে থাকে তারাই বাতাস পায়, ঘরের কোনায় বা অন্য কোন স্থানে থাকা কেউ বাতাস পায় না। তবে রিভারাইন এসি মাল্টি ডাইরেকশনে বাতাস প্রবাহ করার ফলে সব দিকেই প্রায় সমান শীতল বাতাস প্রবাহিত করা যাবে।
রিভারাইন এসিতে আপনি পাবেন ১৬ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বাছাই করার রেঞ্জ। অনেক এসিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাওয়া যায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে এতে সর্বনিম্ন ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পাবেন।
আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের জন্য আর৪১০এ হল একটি মানসম্মত রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, আর ৩২ তার থেকেও পরিবেশসম্মত গ্যাস। আগে আর২২ ব্যবহার করা হত যা ছিল অজোন স্তর জন্য খুবই মারাত্তক।
যেহেতু গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর মত বৈশ্বিক সমস্যার জন্য অন্যতম দায়ী এসির মত ইলেকট্রনিক্স এপ্লায়েন্স, তাই এসিতে সঠিক এবং পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তাও বিবেচনার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস এর আরেকটি নিয়ামক মাত্রা হল GWP, তথা গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়াল মান। GWP মান যত কম হবে এসিটি বাতাসে তত কম তাপ উৎপন্ন তথা কার্বন ছাড়বে। R-410A রেফ্রিজারেন্ট এর GWP মান ২০৯০। এবং R-32 রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, এটির GWP মান ৬৭৫।
এসি কতোটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে এই বিষয়টি বিবেচনা করা খুব জরুরী। বিদেশের সাথে বাংলাদেশ এর ইলেক্ট্রিসিটির মাত্রা একই নয়, আর সে এসিগুলো তাদের দেশের জন্য উপযোগী করে বানানো, তো সেই সব এসি আমাদের জন্য ভালো হচ্ছে কিনা তা কেনার আগে বোঝার উপায় থাকে না। আর এই কারনে পরে গিয়ে ফাঁকিতে পড়তে হয়।
এসির মত উচ্চ ওয়াটএর যন্ত্রের ক্ষেত্রে কোইফিসিয়েন্ট অফ পারফর্মেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি এসির কোইফিসিয়েন্ট অফ পারফর্মেন্স পয়েন্ট যত ভালো হবে, এসিটি ঠিক তত কর্মদক্ষতা সম্পন্ন এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে। আর এই দিক থেকেও রিভারাইন এসিটি সঠিক অবস্থানে আছে।
রিভারাইন [স্মার্ট] এসিটি দেখতে এবং অন্যসব এসির সাথে তুলনা করতে আপনি এখনি চলে যেতে পারেন আপনার কাছের ওয়ালটন প্লাজায়। ওয়ালটন এসিতে রয়েছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। ওয়ালটন এসির কম্প্রেসরে আপনি পাবেন সর্বোচ্চ ১০ বছরের ওয়ারেন্টি। আরো পাবেন ৩ বছর পর্যন্ত ফ্রি বিক্রয়োত্তর সুবিধা। বর্তমানে সারা দেশে আইএসও সনদপ্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কর্তৃক পরিচালিত ৭২টি সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। যেখানে যেকোনো সমস্যায় খুব সহজেই সেবা পেয়ে যাবেন।
আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।