হ্যাকারের লুকোচুরি পার্ট-১
হ্যাকিং জগতের অন্যতম নাম মাফিয়া বয়। আর সেই মাফিয়া বয় হলো রাফি। পুরো নাম রাকিবুল ইসলাম রাফি। সে একজন হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার।
হ্যাকার তিন ধরনের হয়ে থাকে। ১. হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার ২. ব্লাক হ্যাট হ্যাকার ৩. গ্রে হ্যাট হ্যাকার।
হোয়াইট যারা তারা শুধু ভাল কাজ করে। খারাপ হ্যাকিং বন্ধ করে। ব্লাক যারা তারা শুধু খারাপ কাজ করে। বিভিন্ন ব্যাংক লুট করে, কোম্পানির টাকা মেরে খায়, এই সব। আর যারা গ্রে তারা দুইটাই করে।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে রাফি আসলে ভাল হ্যাকার। আর ভালো মানুষো বটে। সে বিভিন্ন ভাবে সমাজে সাইবার সমস্যা নিয়ে কাজ করে। নিজ উদ্যোগে। অবৈধ কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করে। অনলাইনে কোনো সমস্যা হলে কেউ তার কাছে আসলে সে খুব দ্রুত কোন ফিস ছাড়াই ঠিক করে দেয়। মাঝে মাঝে পুলিশকেও সাহায্য করে গোপনে। এগুলো অবশ্য কেউ জানে না।
হ্যাকিং জগতে যারা আছে তারাই শুধু জানে মাফিয়া বয় কতটা ভয়ংকর। কতটা পারদর্শী। যেখানে মাফিয়া বয় যায় সেখানে কোনো হ্যাকার কিছু বলার সাহস পায় না। কারন তারা জানে, তারা যাই করুক না কেনো মাফিয়া বয় সব খবরই রাখে, সবটাই জানতে পারবে।
কিন্তু রাফিকে কেউ চিনে না। সাধারন একটা ছেলে। নম্র ভদ্র একটা ছেলে। কেউ জানে না এই শান্ত ছেলেটাই ভার্চুয়াল জগতের ডন।
রাফির বাবা মা সারাক্ষন বকাবকি করে, সারাক্ষন ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকে তাই। কিন্তু ছেলে যে এদিকে দেশের ভাল করছে তা কেউ জানে না।
একবার ডিসি সাহেবের মেইল আইডি হ্যাক হয়। তখন সারা সাইবার ডিপার্টমেন্ট সেই আইডি উদ্ধার করতে পারে না। অনেক জল্পনা কল্পনা কিন্তু কিছুতেই সেই আইডি আর ব্যাক আনতে পারছে না। এদিকে আবার অনেক গোপন তথ্য আছে আইডিটাতে।
তখন এক ডিবি এসে বলে স্যার একটা ছেলে আছে হ্যাকার। ওকে দিয়ে একবার চেষ্টা করাবো?
ডিসি- কি বলেন, আমার এত বড় বড় সাইবার ডিপার্টমেন্টের লোক তারা কিছু করতে পারলো না, ও আর কি করবে।
ডিবি- অনেক তো চেষ্টা করা হলো। একবার নাহয় শেষ চেষ্টা।
ডিসি- আচ্ছা ডাকেন আগে, দেখি ছেলেটাকে।
ডিবি রাফিকে ফোন দিল ডিসি অফিসে আসার জন্য। রাফি সাথে সাথে নিজের ল্যাপটপ নিয়ে চলে গেলো ডিসি অফিসে।
ডিসি- তোমার নাম কি?
রাফি- মাফিয়া বয়।
ডিসি- মানে কি? এটা কারো নাম হলো নাকি? ভাল নাম বলো।
রাফি- আমাকে আপনারা যে কাজের জন্য ডাকেন, সেখানে আমার ভাল নাম দিয়ে কোন কাজ নেই, এই নামটাই দরকার।
ডিসি- কথা তো ভালই বড় বড় করো। দেখা যাক কাজ কি করো।
রাফি ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বের করে টেবিলের উপর রাখলো। ডিবি কে জিজ্ঞেস করলো এখন বলেন কি সমস্যা।
ডিবি- ডিসি স্যারের মেইল হ্যাক হয়েছে। ব্যাক আনা যাচ্ছে না।
রাফি- আচ্ছা বুঝছি আর বলতে হবে না। ইমেল আইডিটা বলেন।
ডিবি ইমেল আইডিটা বললো।
রাফি- আপনারা কেন যে পাসওয়ার্ড গুলো এত সহজ করে রাখেন। নিজের বউরের নাম পাসওয়ার্ড রাখার কি দরকার। এই নেন আপনার ইমেল আইডি।
ডিসি- অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ডিবি- দেখছেন বলছিলাম না স্যার এই ছেলেই পারবে।
ডিসি- তুমি এত তারাতারি কি করে করলে।
রাফি- ওগুলো বললেও বুঝবেন না আপনি। তার থেকে আপনার ইমেল পাসওয়ার্ড টা চেঞ্জ করেন। একটু কঠিন কিছু দেন। বউয়ের নাম রাখতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
ব্যাগ গুছিয়ে বাইরে গেল রাফি সাথে আছে ডিবি।
রাফি- স্যারের বউয়ের নাম কি রেহেনা?
ডিবি- নাতো, কেনো?
রাফি- উনার মেয়ের নাম কি?
ডিবি- আরে উনার তো মেয়েই নেই।
রাফি- ওহ তাহলে বুঝছি। যাই ভাল থাকবেন। দরকার হলে ফোন দিবেন।
বলে রাফি বের হয়ে গেলো।
বাসায় যেতেই বারার বকুনি শুরু। একটি মাত্র ছেলে কিন্তু বকুনির বেলায় কমতি নাই।
-
-
এদিকে গভমেন্ট ডিফেন্স সার্ভার থেকে কিছু ক্লাসিফাইড ডাটা কেউ একজন একটা আননোন সার্ভারে সরিয়ে ফেলে। ডাটাগুলো এতটাই গুরুত্বপূর্ন যে এই কয়েকটা ফাইলই দেশের ডিফেন্স সিস্টেম এমনকি সরকারেরও পতন ঘটিয়ে ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ন এই ডাটাগুলো আরো সুরক্ষিত করতে সেগুলোকে মিলিটারী গ্রেড ইনক্রিপশন করে রাখা হয়েছিলো যা ডিক্রিপ্ট না করা পর্যন্ত ডাউনলোড বা কপি করা যাবে না। আর এই এনক্রিপশনকে আনঅথোরাইজড ডিক্রিপ্ট করতে মিনিমাম ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। সাইবার ডিভিশন টপ প্রায়োরিটি দিয়ে সেই আননোন সার্ভার ট্রাক করার চেষ্টা করছে যেন অক্ষত অঅবস্থায় সেই ফাইলগুলো ফেরত আনা যায়। ইতিমধ্যে ২.৩০ ঘন্টা পেরিয়ে যায় অথচো হ্যাকার বা সেই সার্ভারের কোন হদিস মেলাতে পারে না। হঠাৎ করে সাইবার ডিভিশনের লীড হারিয়ে গেল অর্থাৎ হয় আননোন সার্ভারটিকে অফলাইন করে দেয়া হয়েছে অথবা সার্ভারটিকে ডাউন করে দেয়া হয়েছে। এমন অপূরনীয় ক্ষতির কারনে যখন সাইবার ডিভিশনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিলো ঠিক তখন সাইবার ডিভিশনের কাছে একটা মেইল এলো। একটা আইপি এড্রেস, আর তার নীচে লেখা
Knight of My country,
Mafia Boy.
এক্সেস করে দেখা যায় সেই ইনক্রিপ্টেড ডাটাগুলো। সাইবার ডিভিশন ধারনা করলো মাফিয়া বয় নামের কোন দেশপ্রমিক দেশের প্রতিরক্ষাকে ভেঙ্গে পড়তে দেয় নি। কিন্তু কে এই মাফিয়া বয়! পুরো সাইবার ডিভিশন যেখানে ব্যর্থ সেখানে মাফিয়া বয় কিভাবে কাজটা করে ফেললো! এমন হাজারো প্রশ্ন নিয়ে শুরু হলো সাইবার ডিভিশনের নতুন মিশন "কে এই মাফিয়া বয়?"
তারপর ডিফেন্স মিনিস্ট্রি মাফিয়া বয় কে খুজতে থাকে। তখন ডিসি, ডিবিকে দিয়ে খোঁজ লাগায়।
বৃহস্পতিবার
রাত ৯ টা,
ডিবি- রাফি তুমি কাল ফ্রি আছো?
রাফি- কাল তো শুক্রবার, কেনো কোনো ইমার্জেন্সি কেস নাকি?
ডিবি- জানি না। স্যার তোমাকে তার বাংলোতে ডেকেছেন ঠিক সকাল ১০ টায়।
রাফি- তাহলে তো মনে হয় বেশ জটিল কেস।
ডিবি- তা জানি না, কিন্তু আমাকেও যেতে নিষেধ করেছেন তোমার সাথে। তোমাকে একাই যেতে হবে।
আমাকে শুধু তোমাকে ফোন করে জানিয়ে দিতে বললো। তাই ফোন দিয়ে জানিয়ে দিলাম।
রাফি- কি যে বলে আল্লাই জানে। আচ্ছা ভাই আমি পৌছে যাবো।
ফোন রেখে রাফি ভাবছে কি এমন হতে পারে। শহরে কি নতুন কোন সাইবার ক্রাইমের উপদ্রব বেড়েছে নাকি। চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে গেলো।
সকাল ৯ টায় এলার্ম বাজলো
মন্তব্য দিবেন নাহলে সামনে আগাবো না। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
পর্ব- ১
লেখা- শারিক্স ধ্রুব.
আমি রাফিউল আহসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজির প্রতি ভালোবাসা নিয়ে নিজে শিখা এবং মানুষকে ব্লগে লিখালিখি ও ইউটিউবে ভিডিও দেয়ার মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করি। চাইলে আমার IT Rafiul Ahsan ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকতে পারেন।