দেশের বাজেট স্মার্টফোনের বাজারে অন্যতম একটি জনপ্রিয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ওয়ালটন। যেখানে দেশের একটি বিপুল সংখ্যক মানুষের বাজেট ১০ হাজার টাকার নিচে, সেখানে ওয়ালটন বিশেষ করে ঠিক সেইসকল গ্রাহকদের জন্যই দারুন দারুন সকল বাজেট স্মার্টফোন প্রতিনিয়ত নিয়ে আসে। যারা জানেন ওয়ালটনের এইচ সিরিজ শুরু থেকেই প্রশংসিত, এই সিরিজ প্রতিবার সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দারুন দারুন সকল স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে এসেছে। প্রিমো এইচ৮ সিরিজের ব্যাপক সাফল্যের পর, এবার ওয়ালটন বাজারে নিয়ে এসেছে তাঁদের আরেকটি স্মার্টফোন প্রিমো এইচ৯ (Primo H9)। স্মার্টফোনটির দাম রাখা হয়েছে ৮৬৯০ টাকা।
স্মার্টফোনটি পুরোপুরি ৪জি VoLTE সাপোর্টটেড।
বাজেট স্মার্টফোন হওয়া সত্ত্বেও স্মার্টফোনটির রিয়ার প্যানেলে আপনি দারুন শাইনি এবং গ্র্যাডিয়েন্ট ফিনিস পাবেন। স্মার্টফোনটি ৪ জি কালারে বাজারে পাওয়া যাবে, আর প্রতিটি কালারই অনেক আকর্ষণীয়। স্মার্টফোনটির আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এর ব্যাককভার খোলা যাবে। ব্যাককভার বা ব্যাকপার্ট খুললে আপনি একটি ২টি সিম কার্ড স্লট এবং একটি ডেডিকেটেড এসডি কার্ড স্লট পাবেন। প্ল্যাস্টিক বিল্ড হওয়ার ফলে স্মার্টফোনটির ব্যাকসাইডে খুব সহজে স্ক্র্যাচ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই পরামর্শ থাকবে বক্সে থাকা টিপিইউ ব্যাককভার ব্যবহার করার।
রিয়ার প্যানেলে আপনি উপরে পাবেন একটি ডুয়াল ক্যামেরা সেটাপ, তারপরে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেটআপ। আর সবার নিচে পাবেন স্পিকার। ডানপাশে পাবেন স্মার্টফোনটির পাওয়ার এবং ভলিউম বাটনগুলো। উপরের দিকে পাবেন ৩.৫ মিলিমিটার অডিও জ্যাক। নিচে পাওয়া যাবে মাইক্রোফোন এবং মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট। বাজেট এর হিসেবে ডিজাইন এবং বিল্ট কোয়ালিটির দিক দিয়ে স্মার্টফোনটি ব্যবহারকারীর কাছে তেমন কোন সমস্যা হবে না আশাকরি।
স্মার্টফোনটিতে পাচ্ছেন অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড ৯ সহ পাচ্ছেন অ্যান্ড্রয়েড ৯ ভিত্তিক স্টক ইউজার ইন্টারফেস। আপনি ইচ্ছা করলে সেটিংস থেকে এর নচকে লুকিয়ে রাখতে পারবেন।
স্মার্টফোনটির ফ্রন্ট প্যানেলে পাওয়া যাবে ১৯ঃ৯ রেশিও সমৃদ্ধ ৬.১ ইঞ্চি এইচডি+ আইপিএস ডিসপ্লে। আর ডিসপ্লেটির গ্লাসটি উপর থেকে ২.৫ডি কার্ভড। স্মার্টফোনটির উপরে আপনি কোন অতিরিক্ত প্রোটেকশন পাবেননা, তো এইক্ষেত্রে আপনার কাছে সাজেশন থাকবে বক্সের ভেতর থাকা গ্লাস প্রোটেকশন ব্যবহার করবেন। আর বাজেট হিসেবে স্মার্টফোনটির ডিসপ্লে কোয়ালিটিতে কোন সমস্যা হবে না আশাকরি। আউটডোরেও স্মার্টফোনটির ভিজিবিলিটি অনেক ভালই।
স্মার্টফোনটির হার্ডওয়্যারে সেকশনে রয়েছে ১.৬ ইঞ্চি অক্টাকোর প্রসেসর, যার সাথে থাকছে পাওয়ারভিআর জিই৮৩২২ জিপিইউ। সাথে থাকছে ডিডিআর৪ ‘’৩ জিবি র্যাম’’ এবং ৩২ জিবি রম।
স্মার্টফোনটির ডেডিকেটেড এসডি কার্ড স্লটে আপনি ১২৮ জিবি পর্যন্ত এসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। আর বাজেট ফোন হিসেবে স্মার্টফোনটির সাথে ৩ জিবি র্যাম যায়, ৩-৪ টি অ্যাপলিকেশন একসাথে চালানোর ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হবেনা আশাকরি। বেসিক গেমসগুলো স্মার্টফোনটিতে আপনি খুব অনায়াসেই খেলতে পারবেন, সমস্যা হবেনা আশা করা যায়।
রিয়ার প্যানেলে পাবেন ডুয়াল ক্যামেরা সেটাপ। যার একটি প্রাইমারি সেন্সর ১৩ মেগাপিক্সেল এবং সেকেন্ডারিটা ২ মেগাপিক্সেল সেন্সর। প্রাইমারি ক্যামেরাটির এপারচার এফ ২.০। আর ২ মেগাপিক্সেলে এর সেকেন্ডারি ক্যামেরাটি ডেপথ সেন্সিং এর কাজ করবে। আর সাথে একটি ফ্ল্যাশ তো থাকছেই। ক্যামেরা ইউআই চিরাচলিত এন্ড্রয়েন্ড স্টক ইন্টারফেস এর মতই। নরমাল, পোর্টরেইট, কিউট, বিউটি, কিউআর কোড স্ক্যানার এর মত শুটিং মোডগুলো পেয়ে যাবেন। আর বিএসআই সেন্সর হওয়ার ফলে লোলাইট ছবিগুলো হবে তুলনামূলক ভালো। স্মার্টফোনটি দিয়ে কেমন ছবি উঠবে তা আপনি নিচের দারুন ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন। চামেরাটি খুবই শার্প এবং কালারফুল ছবি তুলতে পারে আর ছবির ডিটেইলসকে’ও খারাপ বলা যাবে না।
আর এর ফ্রন্ট প্যানেলে নচ বারের ভেতর পেয়ে যাবেন ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ফেস ডিটেকশন মোড এর পাশাপাশি নরমাল, কিউট, বিউটি, কিউআর কোড স্ক্যানার এর মত শুটিং মোডগুলো পেয়ে যাবেন। আর সেলফি প্রেমিদের এই ক্যামেরা পছন্দ হবে নিঃসন্দেহে, সঠিক আলোতে ক্যামেরাটি আপনাকে বেশ দারুন সব ছবি এবং ভিডিও উপহার দেবে। ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ১০৮০ পিক্সেল পর্যন্ত রেজুলেসনে ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন।
সিকিউরিটির দিক থেকে স্মার্টফোনটিতে প্রাইমারি সুবিধা হিসেবে পাবেন ফিঙ্গার-প্রিন্ট সেন্সর। তবে প্রাইমারি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের স্পিড একদম ফাস্ট বলা যাবেনা, তবে এভারেজ। তবে স্বাভাবিক আলোয় ফিঙ্গারপ্রিন্টের থেকে ফেসআনলক একটু ফাস্ট মনে হবে।
স্মার্টফোনটিতে থাকছে ৩৫০০ এমএএইচ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। আর বেসিক ইউজারদের জন্য স্মার্টফোনটি টানা ২ দিন পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে পারবে। স্মার্টফোনটি ফুল চার্জ হতে প্রায় ২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
স্মার্টফোনটির সাথে পাবেন ৩০ দিনের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি। পাশাপাশি ১০১ দিনের ভেতর কোন সমস্যা দেখা দিলে পাবেন স্পেশাল সাপোর্ট বা প্রায়োরিটি সাপোর্ট। তাছাড়া ফোনের সাথে পাবেন রেগুলার ১ বছরের ওয়ারেন্টি এবং ব্যাটারি, চার্জার এবং ইউএসবি কেবলে পাবেন ৬ মাসের ওয়ারেন্টি।
যাদের দৈনন্দিন জীবনে বাজেট এর ভেতরে দারুন একটি স্মার্টফোন দরকার, তাঁদের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে প্রিমো এইচ৯ (Primo H9) স্মার্টফোনটি নিয়ে একটু ভাবতে পারেন। যাদের মূলত বেশি হার্ডওয়্যার স্পেক্স এর চাইতে বেশি ব্যাটারি লাইফ এবং স্টেবল পারফরমেন্স দরকার, আমি বলব তাঁদের জন্য জন্য এই প্রিমো এইচ৯ (Primo H9) স্মার্টফোনটি সেরা।
আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।