মহাকাশ এবং মহাকাশযান নিয়ে কৌতুহল কম বেশি সবার মনেই রয়েছে।
আদি কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মহাকাশ
নিয়ে গবেষনা করার কোন শেষ নেই। বিজ্ঞানের গবেষনা শুধু পৃথিবীতেই সিমাবদ্ধ নেই।
মানুষ রকেটের মাধ্যমে চাদের মাটীতে পা রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজ্ঞানের বদৌলতে। আমাদের সকলের মনে কৌতুহল জাগতেই পারে কিভাবে রকেট ঊড্ডয়ণ করে? রকেট কি আবার
পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে? নাকি মহাকাশেই
রয়ে যায়? আপনাদের মনের সকল জানা এবং
অজানা প্রশ্নের উত্তর বিশ্লেষন নিয়েই
আজকের আর্টিকেল।
রকেট হলো মূলত জালানির সাহায্যে চালিত ইঞ্জিন যেটা নিউটনের তৃতীয়
সূত্র : প্রত্যেক ক্রিয়ার একটা সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে এই নীতির উপর ভিত্তি করে কাজ করে।
আর স্পেস ক্রাফট বা স্যাটেলাইট হলো মানুষ বা টার্গেট বস্তু বহনকারী যান। স্পেস ক্রাফটে মহাকাশ
যাত্রীদের জন্য সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করা থাকে। আর স্যাটেলাইটে পৃথিবীকে
প্রদক্ষিন করার জন্য এবং পৃথিবী হতে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সব রকমের সুযোগ
সুবিধা দেওয়া থাকে। মহাকাশ স্টেশনের নাম হয়ত অনেকেই শুনেছি।
সেখানে কয়েকজন গবেষক
রয়েছেন যারা স্যাটেলাইট এবং মহাকাশ নিয়ে গবেষনা করেন।
যেকোন স্যাটেলাইটকে মহাকাশে পাঠানো হলে সেটাকে
আবার পৃথিবীতে ফেরত আনা হয় না। স্যাটেলাইটকে পাঠানোর জন্য সাধারণত রকেট ব্যবহার
করা হয়। এই রকেটের সাথে কয়েকটি বুস্টার রকেট লাগানো থাকে যেগুলোর জ্বালানি শেষ
হলে মহাকাশেই আলাদা হয়ে যায় আর মেইন রকেট স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে রেখে তারপর
মহাকাশেই আলাদা হয়ে যায় সেটা আর পৃথিবীতে ফেরত আসে না।
আর স্পেস ক্রাফটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে।
স্পেস ক্রাফট মূলত এক ধরনের ঊডোজাহাজই। এতে বেশ ভালো পরিমানে জ্বালানি মজুদ রাখা
থাকে। স্পেস ক্রাফটে নভোচারীদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা থাকে। স্পেস
ক্রাফটের সাথে একটা মেইন রকেট এবং দুটি বুস্টার রকেট লাগানো থাকে। বুস্টার রকেট
স্পেস ক্রাফটকে পৃথিবীর গ্র্যাভিটি অতিক্রম করে মহাকাশে উড্ডয়নে সাহায্য করে।
বুস্টারগুলো মহাকাশে আলাদা হয়ে যায় তারপর কাজ শুরু হয় মেইন রকেটের। মেইন রকেট
নির্দিষ্ট দুরত্ব পর্যন্ত স্পেস ক্রাফটকে পৌছানোর পর আলাদা হয়ে যায় এবং মহাকাশেই
রয়ে যায় আর পৃথিবীতে ফেরত আসে না। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে যে তাহলে স্পেসস ক্রাফট
কিভাবে চলে আর কিভাবেই বা আবার পৃথিবীতে ফেরত আসবে।
এর উত্তর হলো স্পেস ক্রাফট ঊডোজাহাজের মতোই উডতে
পারে। আর পৃথিবীতে মূলত রকেট নয় স্পেস ক্রাফট ফেরত আসে। নভোচারিদের গবেষনা শেষ
হলে তারা স্পেস ক্রাফটের মাধ্যমে আবার পৃথিবীতে ফেরত আসতে পারে। এখন কথা হলো এই
পরিক্রমনের জন্য এত জ্বালানি বা তাদের থাকার জন্য এত ব্যবস্থা কোথা থেকে আসে?
স্পেস ক্রাফটে তাদের থাকা খাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়
খাদ্য এবং পানীয় এর ব্যবস্থা করা থাকে। আর স্পেস ক্রাফটের জ্বালানি শেষ হলে বা
নভোচারিদের খাবার শেষ হলে কি হবে?
আমি আগেই বলেছি মহাকাশ স্টেশনের কথা। এখান থেকে
স্পেস ক্রাফটের জ্বালানি বা নভোচারিদের খাবার নিতে পারে। এখন কথা হলো স্পেস স্টেশনে এগুলো পায় কোথা থেকে। নাসা স্পেস ক্রাফট বা স্যাটেলাইট পাঠানোর সময়
মহাকাশ স্টেশনে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাঠিয়ে থাকে।
সব শেষে এখন দেখাব কিভাবে স্পেস ক্রাফট আবার
পৃথিবীতে ফেরত আসে?
নভোচারিদের গবেষনা শেষ হলে তারা স্পেস ক্রাফটি
নিয়ে পৃথিবীর চারিদিকে পরিক্রমন করতে থাকে। এভাবে চলতে চলতে তারা পৃথিবীর বায়ু
মন্ডলে প্রবেশ করে। আর পৃথিবীর বায়োমন্ডলে প্রবেশের সময় স্পেস ক্রাফটির সম্মুখভাগ
একটু উচু করে উড্ডয়ন করতে থাকে।
কারন
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বিরুদ্ধে এটি প্রচন্ড
গতিতে উড্ডয়ন করলে ঘর্ষনের কারনে আগুন লেগে যাবে। এই জন্য স্পেস ক্রাফটের নিচের
দিকে তাপ প্রতিরোধী মেটাল লাগানো থাকে।
যেটা ঘর্ষন জনিত তাপ রোধ করে স্পেস
ক্রাফটকে নিরাপদে ল্যান্ডিংয়ে সাহায্য করে। স্পেস ক্রাফটটি যখন পৃথিবী পৃষ্ঠের কাছাকাছি চলে আসে তখন এর গতি রোধ করার জন্য
কত গুলো প্যারাস্যুট লাগানো থাকে যেগুলো একে একে খুলতে থাকে। তারপর বিমান বন্দরের
রানওয়েতে পৌছে এবং এর চাকা উন্মোক্ত করা হয় এবং আরেকটি প্যারাস্যুট মেলানো হয় পেছন
দিক থেকে যেটা স্পেস ক্রাফটটির সম্পূর্ণ গতি রোধ করে নিরাপদ ল্যান্ডিং য়ে সাহায্য
করে। আর স্পেস ক্রাফট পূনরায় ব্যবহার
যোগ্য।
আমারিকায় রকেটকে পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত এনে
ব্যবহার উপযোগি করার জন্য গবেষনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানিটির নাম স্পেস এক্স।
তারা রকেটের সবচেয়ে
দামী অংশ বুস্টার, রকেটটিকে মহাকাশের
অভিমুখে পাঠিয়ে দেওয়ার পর, যাতে আবার নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে এরকম কিছু
প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক বলেছেন, মহাকাশে রকেট পাঠানোর
ক্ষেত্রে এটি একটি বৈপ্লবিক ঘটনা।
ব্যবহৃত একটি রকেট মহাকাশে পাঠানোর পর আটলান্টিক মহাসাগরের উপরে
ভাসমান একটি জাহাজে বুস্টারটি ঠিকমতো ফিরে আসার পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
রকেটটির নাম ফ্যালকন নাইন। প্রায় এক বছর আগে এটি মহাকাশে পাঠানো
হয়েছিলো।
এ সম্পর্কে আরোও বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখুন ঃ https://youtu.be/WoG_BK2pi7s
visit my website : sanzidredoy24.xyz
আমি সানজিদ আহম্মেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 23 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।