‘লাইফ সেভিং ডিভাইস’ অক্সিজেন ভেন্টিলেটর উৎপাদন করছে ওয়ালটন

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ প্রখর।  চায়নায় ব্যাপক প্রলয়ের পর এবার আমেরিকা, ইউরোপের মতন উন্নত বিশ্বের দেশগুলো সহ আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশও মানবসভ্যতা রক্ষা করার জন্য অদৃশ্য এক শক্তির সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে।  এমতাবস্থায় সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা।

করোনা ভাইরাস কোন রোগীর দেহে সংক্রমিত হলে তা প্রথমত রোগীর ফুসফুসে গিয়ে আক্রমণ করে।  এসময় রোগী চরম শ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন।  সেই মুহূর্তে  রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্রের প্রয়োজন হয়।  আর এই কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রের নাম অক্সিজেন ভেন্টিলেটর।  অক্সিজেন ভেন্টিলেটর এক প্রকার যান্ত্রিক মেশিন। এই যন্ত্রটি যেসব রোগী শ্বাস নিতে পাচ্ছেনা বা নিতে কষ্ট হচ্ছে, তাঁদের ফুসফুসে বিশুদ্ধ শ্বাস নেয়ার মত বায়ু প্রবেশ করায়।  বর্তমান অবস্থায় এটি একটি ‘লাইফ সেভিং ডিভাইস’। ইউরোপ এবং আমেরিকার মত দেশও বর্তমানে এই অক্সিজেন ভেন্টিলেটরের সংকটে পরেছে।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে রোগীদের বাঁচাতে পৃথিবীজুড়েই এই মেডিকেল ডিভাইসটি নিয়ে হাহাকার চলছে।  সেইহিসেবে আমাদের দেশের পরিস্থিতি আরো খারাপ, করোনা চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ এ যন্ত্রটি শুধু রাজধানী ঢাকাতেই কিছুসংখ্যক আছে।  বাকি ৬৩ জেলায় সেইভাবে এই ভেন্টিলেশন সুবিধা নেই।  সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে দেশে প্রায় ৪ হাজার ৫১৫টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা গেলেও আমাদের দেশে জীবন বাঁচানো এই ভেন্টিলেটর যন্ত্রটি আছে মাত্র ১২৫০টি।  যার ভেতর ৫০০টি সরকারি হাসপাতালে এবং ৭৫০টি বেসরকারি হাসপাতালে।  এমন এক জরুরি অবস্থায় এগিয়ে এসেছে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।

তবে পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির এই মেডিক্যাল ডিভাইসের পেটেন্ট, সফটওয়্যার, সোর্সকোর্ডসহ সব সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত ওমর ইশরাক।  তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেল করপোরেশন এর চেয়ারম্যান এবং মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মেডট্রনিক’ এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার।  পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ  এই মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরিকারক মেডট্রনিক্সের সহায়তা নিয়েই দেশে ওয়ালটন ভেন্টিলেটর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।  খুবই শিগগিরই ওয়ালটন আন্তর্জাতিক স্পেসিফিকেশন এবং মান বজায় রেখে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগে এই অক্সিজেন ভেন্টিলেটর যন্ত্রটি উৎপাদনে আনবে।

ওয়ালটন সূত্র জানায়, নিজস্ব কারখানায় ওয়ালটন অক্সিজেন ভেন্টিলেশন যন্ত্রসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এসব জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি শুরু করবে ওয়ালটন।  এ ব্যাপারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক বলেন, বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল যন্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের সহায়তায় ওয়ালটন ভেন্টিলেটর তৈরিতে এগিয়ে এসেছে।  স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশে ভেন্টিলেটর উৎপাদন হবে।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, ওয়ালটন সব সময় দেশের মানুষের চাহিদা ও প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। সে জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকারী ভেন্টিলেটর, পিএপিআর (পাওয়ার এয়ার পিউরিফায়ার রেসপিরেটর), অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ইউভি ডিসইনফেকট্যান্ট, সেফটি গগলস, প্রটেকটিভ শিল্ড, রেসপিরেটরি মাস্ক ইত্যাদি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরিতে কাজ করছে ওয়ালটন।

দেশ সহ পুরো বিশ্বের এমন এক সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন তাঁদের সক্ষমতার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে দেশের মানুষের সহযোগিতায় নিজেদের হাত সম্প্রসারিত করেছে।  আর এমন একটি উদ্যোগের জন্য ওয়ালটন সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।

Level 12

আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস