যে কোন ধরনের কম্পিউটারের জন্যই মনিটর কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমরা সকলেই অনুধাবন করতে পারি। কেননা আমরা যে কাজই করি তার সমস্ত ফলাফল কে আমাদের সামনে উপস্থাপন করে থাকে মনিটর। তাই মনিটর খারাপ হলে মুভি দেখা, গান দেখা, গেম খেলা অথবা কোন জরুরী কাজ করা কোনটাই ভাল ভাবে করা যাবেনা। মনিটরের মানের উপরে ভিত্তি করে ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কিভাবে পরিবর্তিত হয় সেটা মনিটর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গুলো ভাল ভাবেই জানে। সেজন্য এই সব প্রতিষ্ঠান গুলো অনেক ধরনের মনিটর প্রস্তুত করে থাকে যাতে ব্যবহারকারী তার চাহিদা ও সাধ্য অনুযায়ী তার জন্য সঠিক মনিটর টি বাছাই করতে পারে। বর্তমানে বাজারে অনেক নামীদামী ব্রান্ডের যেমন Dell, Samsung, LG, HP এর অনেক রকমের মনিটর পাওয়া যায়। কম্পিউটারের জন্য সঠিক মনিটর বাছাই করার সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করা দরকার কারন নিজের কম্পিউটারের জন্য কোন মনিটর টি ভাল হবে এইটা অনেক সময় বুঝতে পারিনা। যদি রেজুলেশনের কথায় চিন্তা করি তাহলেই দেখা যাবে অনেক ধরনের মনিটর রয়েছে এর মধ্যে 4K, 1440P, 1080P ও সাধারন HD মনিটর রয়েছে। এছাড়া রিফ্রেশ রেট, রেসপন্স টাইম সহ আরও কিছু বিষয় রয়েছে।
মনিটর ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে বাজারে অনেক ধরনের মনিটর রয়েছে যেগুলো আশাকরিজীবী রয়েছেন তাদের মনিটরে সব থেকে বেশি দরকার পরে কালারের সঠিক মাত্রা। কারন যারা ওয়েবসাইট ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন অথবা ছবি ও ভিডিও নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য মনিটরে দৃশ্যমান কালার নির্ভুল হওয়া আবশ্যক। তবে যারা একেবারেই সাধারন কাজ কর্মের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন তারা বিষয় মাথায় না রেখে ভাল VA (Vertical Alingment) প্যানেল দেখে কিনতে হবে। এই মনিটরে ছবি ভাল আসলেও এর রেসপন্স টাইম বেশি তাই এই ধরনের মনিটর গেমারদের জন্য উপযুক্ত নয়।
মনিটরের রেজুলেশন
রেজুলেশন সম্পর্কে আমাদের প্রায় সবারই কিছুটা হলেও ধারনা আছে বিশেষ করে স্মার্ট ফোন ব্যবহারের ফলে মনিটরের রেজুলেশন নিয়ে সবাই কিছুটা সচেতন থাকে। একটি মনিটরের রেজুলেশন যত বেশি হবে তার ছবিও তত পরিষ্কার দেখাবে। আর এই রেজুলেশন পরিমাপের একক হচ্ছে পিক্সেল তার মানে মনিটরের পিক্সেল যত বেশি তার রেজুলেশন ও তত ভাল। যেমন ধরেন কোন মনিটরের রেজুলেশন যদি 1920*1080 হয় তার মানে হচ্ছে ওই মনিটরের প্রতি ইঞ্চিতে দৈর্ঘ্য এ ১৯২০ পিক্সেল ও প্রস্থে ১০৮০ পিক্সেল রয়েছে। যেকোনো কাজের জন্যই এখন কমপক্ষে 1920*1080 রেজুলেশনের মনিটর আবশ্যক কারন বর্তমানে যেকোনো মুভি অথবা ভিডিও কন্টেন্টের কোয়ালিটি অনেক ভাল থাকে। এর থেকে আরও ভাল মানের ছবি পেতে চাইলে QHD অথবা 4K কিনতে পারেন।
মনিটরের আকার
মনিটর কেনার সময়ে আকারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে কারন আকার শুধু দেখতে বড় অথবা ছোটর ব্যাপার নয় এর উপর ছবির মান ও নির্ভর করে। পিক্সেলের ঘনত্বের উপরে মনিটরের কোয়ালিটি অনেক খানি নির্ভর করে। কমপক্ষে প্রতি ইঞ্চিতে ১০৯ না হলে সেই মনিটরের ছবির মান চাহিদা অনুযায়ী হবেনা। বড় আকারের মনিটরের ক্ষেত্রে রেজুলেশন কম হলে তার পিক্সেলের ঘনত্ব কম হয়। সাধারন দূরত্ব থেকে দেখার জন্য সব থেকে বেশি হলেও আপনি ৩২ ইঞ্চি কিনতে পারেন। এর থেকে বড় কেনার কোন দরকার হবেনা। এই আকারের অথবা এর থেকে কিছুটা ছোট আকারের মনিটরের রেজুলেশন ভাল হবে এটা দিয়ে অনায়াসেই ভাল মানের মুভি দেখা ছাড়াও বেশি গ্রাফিক্সের গেম ও খেলতে পারবেন। তাই মনিটর কেনার সময় শুধু আকার না দেখে রেজুলেশনের দিকেই বেশি নজর দিতে হবে।
রিফ্রেশ রেট
রিফ্রেশ রেট কে যদি একেবারেই সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় তার মানে দাঁড়াবে প্রতি সেকেন্ডে কতবার মনিটর নতুন তথ্য আপডেট করতে পারে সেটাই রিফ্রেশ রেট। রিফ্রেশ রেট পরিমাপের একক হচ্ছে হার্জ (Hz). মনিটরের রিফ্রেশ রেট যত বেশি হবে তার ছবির মানও তত ভাল হবে। আপনি যদি কম্পিউটার টি গেম খেলার জন্য বানাতে চান তাহলে রিফ্রেশ রেট আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গেমিং কম্পিউটারের মনিটরের রিফ্রেশ রেট কমপক্ষে ৭৫ হার্জ হতে হবে। তবে বর্তমানে বেশির ভাগ গেমিং মনিটরের রিফ্রেশ রেট কমপক্ষে ১৪৪ হার্জ দেয়া থাকে। তবে বেশি রিফ্রেশ রেটের সাথে মনিটরের রেসপন্স টাইম যেন কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারন এই দুইটার কম্বিনেশন ভাল হলেই আপনি ভাল মানের মনিটর পাবেন। যারা গেম খেলেন না শুধুমাত্র সাধারন কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করেন তাদের মনিটরের রিফ্রেশ রেট ৬০ হার্জ হলেই হবে এর বেশি প্রয়োজন হবেনা।
রেসপন্স টাইম
রিফ্রেশ রেট এর উল্টো হচ্ছে রেসপন্স টাইম। রিফ্রেশ রেট যেমন বেশি হলে ভাল অপরদিকে রেসপন্স টাইম কম হলে ভাল হয়। তবে রেসপন্স টাইম সাধারন কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, গেমিং কম্পিউটারের মনিটর এর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। রেসপন্স টাইম বলতে বোঝায় একটি নির্দিষ্ট পিক্সেলের কালো থেকে সাদা হতে অথবা GTG এর ক্ষেত্রে ধূসর থেকে সাদা হয়ে আবার ধুসরে ফিরে আসতে যে সময় লাগে সেটাকে। রেসপন্স টাইম বেশি হলে গেমিং অথবা উচ্চ মানের ভিডিও দেখার সময় কিছুটা ঝাপসা দেখা যেতে পারে। গেমিং মনিটরের ক্ষেত্রে রেসপন্স টাইম সর্বোচ্চ ৫ মিলি সেকেন্ড হতে পারে এর বেশি হলেই গেম খেলতে অসুবিধা হবে। ভাল মানের গেমিং মনিটরে রেসপন্স টাইম সর্বোচ্চ ০.৫ মিলি সেকেন্ড হয়।
মনিটর যে কোন সময়েই পরিবর্তন করা যায় তাই কম্পিউটার কেনার সময় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ যেমন সিপিইউ, জিপিইউ কিনে তারপর মনিটরের দিকে নজর দেয়া দরকার। তারপরেও মনিটর কেনার সময় একটু বুঝে শুনে কিনলে হয়তো খুব তাড়াতাড়ি পরিবর্তন করা লাগবেনা। উপরে উল্লেখিত বিষয় ছাড়াও আরও অনেক ব্যাপার আছে যেগুলো খেয়াল করতে হয়। তবে উপরের বিষয়গুলো সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আশা করি মনিটর কেনার সময় এই গুলো খেয়াল রাখলে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ভাল মনিটর বাছাই করে কিনতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরনের মনিটরের দাম এখান থেকে দেখে নিতে পারেনঃ https://www.startech.com.bd/monitor
আমি রবিউল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অসাধারন পোষ্ট। এই জাতীয় টিউন দেখতে ও লেখতে আমাদের সাইট ভিজিট করুন: https://bd.postpeon.com/