হাঁস পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করূন পর্ব-৩হাঁস পালনের উপকারিতা-সমূহ

  • হাঁস পালন

     

     

    Ø  বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায়অনেক বাড়িতেই হাঁস পালনকরতে খাকে।

    Ø  হাঁসের লালন-পালন খরচ এতইকম এবং ঝামেলা মুক্ত।

    Ø  হাঁসের মাংস স্বাদের দিক থেকেবেশ আগান।

    Ø  হাস রাতে ডিম পারে এবং ডিমআকারে বড়।

  • Ø  হাঁস পালন করলে পরিবারের খাদ্যচাহিদা পূরণ করার পাশাপাশিবাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

    Ø  হাঁসের ডিমের চাহিদা রয়েছে।

    Ø  শহর  এবং গ্রামে উভয বাণিজ্যিক ভিত্তিতে  হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে। বসত বাড়িতে হাঁস চাষ একটিসহজ ও খুবই লাভজনক কাজ।

    Ø  বাড়ির গৃহিনী,  বেকার  এবং ছেলে-মেয়েরা অল্প মূলধন নিয়ে ছোট পরিসরে হাঁসের খামার স্থাপন ওপরিচালনা করতে পারে।

    Ø  পারিবারিক এই খামারে দেশি জাত ছাড়াও উন্নত জাতের হাঁস পালন করা যায়।

    হাঁস পালনের উপকারিতা

  • Ø  হাঁস হাওর-বিল,  ডোবা-নালা ওধানের জমিতে নিজেরা চরিয়ে খেতে পারে।

    Ø  হাঁসের প্রাকৃতিক খাবারের অভাব হয় না।

    Ø  হাঁসের ডিম ও মাংস প্রাণীজ আমিষের অন্যতম উৎস।

    Ø  হাঁসের ডিম ও মাংস বিক্রি করে পরিবারে বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।

    Ø  হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে চলতে পারে।

    Ø  হাঁস ও মাছের চাষ এক সাথে করা যায়।

    Ø  হাঁসের বিষ্ঠা ভালোমানের জৈব সার।

    বাজার সম্ভাবনা

    স্থানীয় বাজার ছাড়াও বড় বড় হাটে-বাজারে হাঁস বিক্রি করা যায়। হাঁস জবাই করে পালক খসিয়ে বাজারে বিক্রি করা যায়। সম্পূর্ণ হাঁস বিক্রি করা তুলনামূলক সহজ। ডিম সরাসরি বাজারে বিক্রি করা যায়।

    হাঁসের  জাত নির্বাচন

     

     

     

    * দেশি হাঁস : নাগেশ্বরী,  মাটিহাঁস,  সাদা হাঁস ও রাজ হাঁস। দেশিহাঁস তুলনামূলক আকারে ছোটএবং ডিমও কম দেয়।

    * উন্নত হাঁস/ বিদেশী জাত: খাকি ক্যাম্পবেল,  চেরীভেলী, জিংডিং হাঁস ও ইন্ডিয়ান রানারডিমের জন্য ভালো।

    *খাকি ক্যাম্পবেল ও চেরীভেলী বছরে ভালো পরিবেশে ২৫০-৩৫০টি পর্যন্ত ডিম দেয়। সাদা পিকিং ভালো। এরা বছরে ৮০-১২০টি ডিম দেয়। এদের মাংস বেশ সুস্বাদু।

    হাঁসের জাত না জানলে ব্যাবসা ভাল হবে না:

  •  হাঁস পালনের ক্ষেত্রে যে কোন একটি জাত বাছাই করতে হবে। একই খামারে একাধিকজাতের হাঁস রাখা কিছুটা কঠিন কারণ বিবিন্ন রকমের যত্ন নিতে হয়। তবে অসম্ভব নয়।

    বেইজিন জাতের হাঁস
    আদিবাস: এ জাতের হাঁসের আদিবাস উত্তরপূর্ব  চীন দেশে। এই হাঁসের আর এক নাম পিকিং সোয়ান।

    বৈশিষ্ট্যঃ

    v দেহের আকার বড়।

    v  রং সাদা।

    v  ডিমে সাদা। .

  • উপকারিতাঃ এ জাতের হাঁস মাংসের জন্য প্রসিদ্ধ।  প্রাপ্ত বয়স্ক (সারে চার মাস) একটি নর হাঁস প্রায় ৫/৬ কেজি এবং একটি মাদি হাঁস ৩/৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। বৎসরে  প্রায় ১০০-১৩০ টি ডিম দেয়।
  • খাকী ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস
    বংস: এই হাঁসের আদিবাস ইংল্যান্ড এদর  বিলেতি হাঁস নামেও পরিচিত।
    বৈশিষ্ট্যঃ

    v  ঠোঁট নীলাভ/কালো-নীল /কালো।

    v  পালকের রং খাকী বিধায় খাকী ক্যাম্পবেল নামকরণ করা হয়েছে।

    v  ডিমের রং সাদা। .

    v  আকারে ছোট।

     

    উপকারি

  • তাঃ  এক কথায় বলা যায় শুধু ডিম-এর উদ্দেশ্যে এ জাতের হাঁস পালন করা হয়। বার্ষিক ডিম উৎপাদন গড়ে ২৬০- ৩০০ টি। বয়ঃ প্রাপ্তদের ওজন ২- ২.৫ কেজি হয়ে থাকে। ১৫০ দিন বয়সে  ডিম দযা শুরু করে
    জিনডিং  জাতের হাঁস
    এদের আদিবাস চীন।

    বৈশিষ্ট্যঃ

    Ø  ঠোঁট নীলাভ/হলদে।

    Ø হাঁসীর পালকের রং খাকীর মাঝে কালো ফোটা এবং হাঁসার কালো ও সাদা মিশ্রিত।

    Ø  ডিমের রং নীলাভ।

  • হাঁসের ঘর তৈরি করার জন্য বাঁশ,  বেত,  শন্,  নল-খাগড়া মাটি ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করা যাবে।

    v  ঘরের উপরের অংশ সবসময় জালি দিয়ে রাখতে হবে। বেড়া দিয়ে আটকে রাখতে হবে। .হাঁসের ঘর ও বেড়া শক্ত হতে হবে।

    হাঁসের খাবার

    Ø হাঁস সবকিছু খেতে পছন্দ করে। তবে হাঁসের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য চালের খুঁদ,  গমভাঙ্গা,  ভুট্টা,  শুটকী মাছের গুঁড়া,  খৈল,  ইপিল-ইপিলের শুকনো পাতা এবং শামুক,  ঝিনুক, গুগলী,  কেঁচো,  কলার মোচা,  সবজির ছাল,  সবজির পাতা  ইত্যাদি দেয়া যায়।

    Ø  হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে।

    Ø  পুরাতন টায়ার,  বাঁশ এবং বাসনপত্রের মধ্যে গ্রামীণ পরিবেশে হাঁসকে খাবার দেয়া যাবে।

     

    ডিম সংরক্ষণ

     

    ডিম সংরক্ষণের কয়েকটি পদ্ধতি আছে

    যেমন:

    ১. ঠান্ডা জায়গায় ঘরের কাঁচা মেঝেতে গর্ত করে মাটির হাঁড়ি বসাতে হবে। হাঁড়ির চারপাশেকাঠ কয়লা ভিজিয়ে দিলে হাড়ির মধ্যে বেশ ঠান্ডা হবে। হাঁড়ির মধ্যে ডিম রেখে মাটির সরাদিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এ পদ্ধতিতে বেশ কিছুদিন ডিম ভালো থাকবে।

    ২.  ১৪০০ ফাঃ তাপমাত্রার গরম পানিতে ১৫ মিনিট ডিম সিদ্ধ করে বেশ কিছুদিন ডিমসংরক্ষণ করা  যাবে

    ৩. ডিমের উপরিভাগের অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র বন্ধ করার জন্য এক মিনিট খাঁটি সরিষারতেলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এ পদ্ধতিতে ডিম বেশ কিছুদিন ভালো থাকলেও এ ডিমেসরিষার তেলের ঝাঁজ পাওয়া যাবে।

     

    চুনের পানিতে ডিম ডুবিয়ে রেখে ডিমের ছিদ্র বন্ধ করা যাবে। এক্ষেত্রে নিচের ধাপগুলোঅনুসরণ করতে হবে:

     

    v  একটি পাত্রে ১ লিটার পানি নিয়ে তার মধ্যে ১০০ গ্রাম চুন গুলে গরম করতে হবে।

    v  লবণ পানি ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ২৫০ গ্রাম চুন ভালোভাবে গুলাতে হবে।

    v  পাত্রটি একদিন রেখে দিলে নিচে তলানি জমবে।

    v  নিচের তলানি না নেড়ে উপরের পরিষ্কার পানি আলাদা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে।

    v  এই পরিষ্কার পানিতে ২০ মিনিট তারের খাঁচায় করে ডিম ডুবাতে হবে।

    v  খাঁচাসুদ্ধ ডিম ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।

     

    রোগবালাই ও চিকিৎসা

    হাঁসকে নিয়মিত ওষুধ ও টিকা দিতে হবে।

    ডাকপ্লেগ,  রানীক্ষেত,  হেপাটাইটিস,  কলেরা,  সালমোনেলোসিস,  মাইকোটক্রিকোসিস সমস্যা এবং ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা এবং ওষুধব্যবহার করতে হবে।

    হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার-পরিছন্ন ভালো ও টাটকা খাবার দিতে হবে। নতুন হাঁস কিনলে কয়েকদিন আলাদা রাখতে হবে। অসুস্থ হাঁসকে চিকিৎসা করার সময় ভালো/সুস্থ হাঁস থেকে আলাদা রাখতে হবে। আয়োসান,  ফিনাইল,  লাইজল ইত্যাদি দিয়ে ঘর ও জিনিসপত্র ধুতে হবেএবং মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে রোগমুক্ত করতে হবে।

     

    হাঁসের খামারের আয়-ব্যয় হিসাব

  • হাঁস পালন পদ্ধতি

    সাধরণত: তিন পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা হয়। যেমন :

     

    সম্পূর্ণ মুক্ত পদ্ধতি :

    v এ পদ্ধতিতে প্রায় সারাদিন হাঁসকে মাঠের মধ্যে চরানো যায় অথবা বিলে ছেড়ে দেওয়া যায়।

    v রাতে ঘরে রাখা হয়।

     

    সম্পূর্ণ আবদ্ধ পদ্ধতি :

    v এ পদ্ধতিতে দিন ও রাত হাঁসকে ঘরের মধ্যে রাখতে হয়।

    v ঘরের মধ্যেই ছোট আকারে পানি ও খাদ্যের ব্যবস্থা থাকে।

    অর্ধ আবদ্ধ-অর্ধমুক্ত পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে রাতে হাঁস ঘরে রাখতে হয়। দিনের বেলা কিছুসময় ঘরে এবং কিছু সময় প্রয়োজন বাইরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়। পানি ও খাদ্যএমনভাবে ভাগ করে দিতে হবে যেন কিছু ঘরে এবং কিছু বাইরে চরে খেতে পারে।

    ডিম ফোটানো: হাঁসীর বয়স ৬ মাস হবার আগেই ডিম দিতে পারে। একটি সাধারণআকারের হাঁসী ১০-১৫টি ডিম নিয়ে ৩০-৩৩ দিন তাপে বসতে পারে। ফোটানোর জন্য ডিমউর্বর কিনা সেটা বাতি দিয়ে দেখতে হবে। ডিমে ১৫ দিন তাপ হলে পরীক্ষা করতে হবে। অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে অথবা টর্চলাইটের মাধ্যমে ডিম পরীক্ষা করতে হবে। ডিম উর্বরহলে সূতার মত পেচানো জাল দেখা যাবে। ডিম অনুর্বর হলে তার কুসুম পরিষ্কার দেখা যাবেএবং কোন ধরনের জাল বা চিহ্ন দেখা যাবে না।

     

     

    Ø  হাঁসের বাচ্চা পালন

    Ø  হাঁসের বাচ্চাকে সবসময় উমে ও  টনটনা শুকনো স্থানে রাখতে হবে।

    Ø  হাঁসের বাচ্চাকে মাটির উপর রাখলে ১-২ সপ্তাহধানের তুষ বা কাটা খড় দিতে হবে। পরবর্তীমেঝের উপর বালি এবং ছাই দিতে হবে। নতুন বাচ্চাকে প্রথমে মিহি খুদি,  ভাত দিতেহবে।

    Ø  কয়েকদিন গেলে অন্যান্য খাদ্য যেমন ছোট কোঁচো,  শামুকের মাংস কাটা এবং সবজির পাতাইত্যাদি দিতে হবে।

    Ø  কাক,  বাজ পাখি, চিল,  বিড়াল,  কুকুর,   বেজী ইত্যাদি আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য বেড়াবা ঝাপি দিয়ে আটকিয়ে রাখতে হবে। ৫/৬ সপ্তাহ বয়স হলে আর আটকাতে হবে না।

     

    আধুনিক পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চা পালন ও ব্যবস্থাপনা

    আধুনিক পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চা পালনের ক্ষেত্রে উন্নতমানের বাচ্চার জাত বাছাই করতেহবে।

     

    ব্রুডার প্যান

    1. হাঁসের ঘরকে কয়েক প্যানে ভাগ করে প্রতি প্যানে ১ ব্রুডার স্থাপন করতে হবে।

    2. ব্রুডারটির পরিধি প্রয়োজনে ছোট/বড় এবং উপরে/নিচে নামানো/উঠানো যায় সেইব্যবস্থা করতে হবে।

    তাপ ব্যবস্থা

    সাধারণত বাল্বের মাধ্যমে অথবা গ্যাস দিয়ে ব্রুডারে তাপ দিতে হবে। ব্রুডারের ভিতরের তাপ ব্যবস্থা

    সপ্তাহ
    তাপমাত্রা
    ১ম
    ৩৫০-২৪০ সে.
    ২য়
    ২৪০-১৮০ সে.
    ৩য়
    ১৮০-১৭০ সে.
    বাইরে চরার ব্যবস্থা থাকলে ২য় সপ্তাহ পরে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক তাপমাত্রা বজায় রাখলেইহবে।

    মেঝের ধরন ও পরিমাপ

    1. মেঝে অবশ্যই পাকা হতে হবে। তাছাড়া ইট বা পাথর দিয়ে শক্ত করে সমতল রাখতে হবে।

    2. বাচ্চার দৌড়াদৌড়ি ও চরার জন্য বয়সানুযায়ী যে পরিমাণ জায়গা লাগবে তা নিচে উল্লেখকরা হলো :

    বয়স:

    সপ্তাহ
    বর্গমিটার (প্রতিটির জন্য)
    ১-২.০৯
    ২-৩.১৩
    ৩-৪.১৯
    ৪-৫.২৩
    ৬-৮.৩৭
    খাবার ও পানির ব্যবস্থা

    ১. খাবার ও পানির পাত্র প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি করতে হবে।

    ২. সুষম ও মানসমৃদ্ধ খাবার যেমন,  পিলেট অথবা গুড়ো খাবার দিতে হবে। পচা,  বাসি ওছাতাধরা খাবার দেয়া যাবে না।

    ৩. খাবার পাত্রের মধ্যে অথবা মেঝেতে ছিটিয়ে দিতে হবে।

    ৪. হাঁসের বাচ্চাকে পানির পাত্রে পরিষ্কার পানি দিতে হবে।

    হাঁসের ঘর

    v  হাঁসের ঘর হবে সাধারণ এবং একদিক খোলা থাকতে হবে।  শাক-সবজির গাছ,  শস্য, পুকুরের পানি ইত্যাদি যেন হাঁস নষ্ট করতে না পারে

    v  ১/২ মি.´৫ মি.´১ মি. মাপের একটি ঘরে ৪০-৫০টি বড় হাঁস রাখা যাবে।

    v  হাঁসের ঘরটি শুকনা থাকবে এবং ঘরে তুষ,  খড় অথবা বালি দিতেহবে।

    v  হাঁসের ঘর তৈরি করার জন্য বাঁশ,  বেত,  শন্,  নল-খাগড়া মাটি ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহারকরা যাবে।

    v  ঘরের উপরের অংশ সবসময় জালি দিয়ে রাখতে হবে। সেজন্য কে বেড়া দিয়ে আটকে রাখতে হবে। .হাঁসের ঘর ও বেড়া শক্ত হতে হবে।

    হাঁসের খাবার

    Ø হাঁস সবকিছু খেতে পছন্দ করে। তবে হাঁসের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য চালের খুঁদ,  গমভাঙ্গা,  ভুট্টা,  শুটকী মাছের গুঁড়া,  খৈল,  ইপিল-ইপিলের শুকনো পাতা এবং শামুক,  ঝিনুক, গুগলী,  কেঁচো,  কলার মোচা,  সবজির ছাল,  সবজির পাতা ইত্যাদি দেয়া যায়।

    Ø  হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে।

    Ø  পুরাতন টায়ার,  বাঁশ এবং বাসনপত্রের মধ্যে গ্রামীণ পরিবেশে হাঁসকে খাবার দেয়া যাবে।

     

    ডিম সংরক্ষণ

     

    ডিম সংরক্ষণের কয়েকটি পদ্ধতি আছে

    যেমন:

    ১. ঠান্ডা জায়গায় ঘরের কাঁচা মেঝেতে গর্ত করে মাটির হাঁড়ি বসাতে হবে। হাঁড়ির চারপাশেকাঠ কয়লা ভিজিয়ে দিলে হাড়ির মধ্যে বেশ ঠান্ডা হবে। হাঁড়ির মধ্যে ডিম রেখে মাটির সরাদিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এ পদ্ধতিতে বেশ কিছুদিন ডিম ভালো থাকবে।

    ২.  ১৪০০ ফাঃ তাপমাত্রার গরম পানিতে ১৫ মিনিট ডিম সিদ্ধ করে বেশ কিছুদিন ডিমসংরক্ষণ করা যাবে

    ৩. ডিমের উপরিভাগের অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র বন্ধ করার জন্য এক মিনিট খাঁটি সরিষারতেলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এ পদ্ধতিতে ডিম বেশ কিছুদিন ভালো থাকলেও এ ডিমেসরিষার তেলের ঝাঁজ পাওয়া যাবে।

     

    চুনের পানিতে ডিম ডুবিয়ে রেখে ডিমের ছিদ্র বন্ধ করা যাবে। এক্ষেত্রে নিচের ধাপগুলোঅনুসরণ করতে হবে:

     

    v  একটি পাত্রে ১ লিটার পানি নিয়ে তার মধ্যে ১০০ গ্রাম চুন গুলে গরম করতে হবে।

    v  লবণ পানি ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ২৫০ গ্রাম চুন ভালোভাবে গুলাতে হবে।

    v  পাত্রটি একদিন রেখে দিলে নিচে তলানি জমবে।

    v  নিচের তলানি না নেড়ে উপরের পরিষ্কার পানি আলাদা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে।

    v  এই পরিষ্কার পানিতে ২০ মিনিট তারের খাঁচায় করে ডিম ডুবাতে হবে।

    v  খাঁচাসুদ্ধ ডিম ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।

     

    রোগবালাই ও চিকিৎসা

    মড়কের হাত থেকে বাঁচাতে হাঁসকে নিয়মিত ওষুধ ও টিকা দিতে হবে।

    ডাকপ্লেগ,  রানীক্ষেত,  হেপাটাইটিস,  কলেরা,  সালমোনেলোসিস,  মাইকোটক্রিকোসিস সমস্যাএবং ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা এবং ওষুধব্যবহার করতে হবে।

    হাঁসকে সবসময় পরিষ্কার-পরিছন্ন ভালো ও টাটকা খাবার দিতে হবে। নতুন হাঁস কিনলেকয়েকদিন আলাদা রাখতে হবে। অসুস্থ হাঁসকে চিকিৎসা করার সময় ভালো/সুস্থ হাঁস থেকেআলাদা রাখতে হবে। আয়োসান,  ফিনাইল,  লাইজল ইত্যাদি দিয়ে ঘর ও জিনিসপত্র ধুতে হবেএবং মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে রোগমুক্ত করতে হবে।

     

    হাঁসের খামারের আয়-ব্যয় হিসাব

    মূলধন : হাঁস পালন শুরু করার জন্য ২০, ০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। মূলধন সংগ্রহেরজন্য ঋণের প্রয়োজন হলে নিকট আত্মীয়-স্বজন,  সরকারী ও বেসরকারী ঋণদানকারীব্যাংক(সোনালী ব্যাংক,  জনতা ব্যাংক,  রূপালী ব্যাংক,  অগ্রণী ব্যাংক,  বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক) বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (আশা,  গ্রামীণ ব্যাংক,  ব্রাক,  প্রশিকা) -এর সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান(এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।

    হাঁসের উৎপাদন খরচ

    * আনুমানিক ব্যয়

    ৩০০ টি হাঁসের ঘর তৈরি বাবদ খরচ
    ৬৫৫০ টাকা
    হাঁসের বাচ্চা/ডিম ক্রয় বাবদ খরচ
    ৫৪০০ টাকা

  • রোগবালাই/খাদ্য

    ২০০০ টাকা

    ২০০০০ টাকা

    মোট=৩৩৯৫০ টাকা
    আনুমানিক আয়

    হাঁস থেকে ১০০০০টি ডিম পাওয়া যায়

    ডিমের দাম
    ৬০০০০ টাকা
    হাঁস বিক্রি বাবদ আয়
    ৭৫০০০ টাকা
    মোট=১৩৫০০০ টাকা
    লাভ

    মোট আয়
    ১৩৫০০০ টাকা
    মোট খরচ
    ৩৩৯৫০টাকা
    মোট=১০১০৫০ টাকা /প্রায় এক লক্ষ টাকা

  •  প্রশিক্ষণ

    হাঁস পালন করতে হলে এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে হাঁস পালনের বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। হাঁস পালন সংক্রান্ত কোন তথ্য জানতে হলে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে পশু কর্মকর্তা অথবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করা যেতেপারে। এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্ধারিত ফি এর বিনিময়ে পশু পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

    হাঁসের মাংস এবং ডিম জনপ্রিয়। পারিবারিক খামারে অল্প মূলধন নিয়ে ছোট পরিসরে হাঁসের খামার স্থাপন ও পরিচালনার মাধ্যমে হাঁস পালন করলে পরিবারের খাদ্য চাহিদাপূরণ করার  পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।

  • বিস্তারিত দেখতে ক্লিক করূন

Level 0

আমি রায়হান আহমেদ জয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস