গত সপ্তাহে আমার এক ফ্রেন্ড একটি নতুন স্মার্ট টিভি কিনেছে। কিন্তু গতকাল সে আমাকে কল দিয়ে তার একটি সমস্যার কথা শেয়ার করল। সমস্যাটি হলো সে তার টিভিতে নতুন কোনো apps ডাউনলোড করতে পারছেনা। আমি তার বাসায় গিয়ে টিভিটি দেখলাম এবং তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে টিভিটি কোনখান থেকে কিনেছে এবং দোকানদার তাকে কি কি বলেছে!
তখন আমার ফ্রেন্ড বললো যে সে একটি স্টোডিয়াম মার্কেট থেকে কিনেছে এবং দোকানদার তাকে স্মার্ট টিভি বলে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে দোকানদার আমার ফ্রেন্ড কে স্মার্ট টিভি বলে ইন্টারনেট টিভি বেঁচে দিয়েছে। সে যদি টিভি দুটির মধ্যে পার্থক্য জানতো তাহলে আর এমন ভুল হতনা। তাই আমি এই বিষয়টি নিয়েই আজ আলোচনা করবো।
সহজ কথায় বলতে গেলে ইন্টারনেট টিভি হচ্ছে এমন একটি টিভি যার মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন ঠিকই কিন্তু সেটা স্মার্টলি হ্যান্ডেল করতে পারবেন না। যেমন ধরেন আমরা একটি বাটন মোবাইলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবো কিন্তু স্মার্টফোনে আমরা যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবো সেটা বাটন মোবাইলে করতে পারবোনা।
স্মার্ট টিভি কি?
প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের টেকনোলজির পদ্ধতিও পরিবর্তিত হচ্ছে। স্মার্ট টিভি তারই একটি উদাহরণ। সাধারণভাবে, "স্মার্ট টিভি" দ্বারা এমন একটি টিভি সেটকে বুঝায় যেখানে স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমসহ অ্যাপস এবং ইন্টারনেটের সকল সুবিধা পাওয়া যাবে।
এখন প্রায় সব এক্সক্লুসিভ টিভি সিরিজ ওয়েব বেজড আর নেটফ্লিক্স, ইউটিউব এর মতো অ্যাপসের জনপ্রিয়তা এখন কারোই অজানা নয়, যা স্মার্ট টিভিতে উপভোগ করা গেলেও অন্যান্য টিভিতে যায়না।
ইন্টারনেট টিভি মানেই স্মার্ট টিভি এই ভুলটি আমরা অনেকেই করে থাকি। চলুন দেখে নেয়া যাক এর মূল পার্থক্যগুলো:
স্মার্ট টিভিতে যখন আপনি নেটফ্লিক্স এ যাবেন তখন কোনোরকম বাফারিং ছাড়াই আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি যেকোনো অ্যাপস বাফারিং ছাড়াই ডাউনলোড করতে পারবেন।
কিন্তু ইন্টারনেট টিভিতে আপনি অ্যাপস ডাউনলোড করতে পারবেন না এমনকি অনেক সময় বিল্ট ইন অ্যাপস ও আপনাকে বার বার "ট্রাই এগেইন লেটার" শো করবে।
ইন্টারনেট টিভিতে আপনি আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন না সেখানে যদি কোন অ্যাপস থাকে তবে যে অ্যাপস ইনস্টল করা থাকবে সে অনুযায়ী আপনাকে কাজ করতে হবে।
স্মার্ট টিভিতে আপনি আপনার ইচ্ছে মতো অ্যাপস customization করতে পারবেন এবং আপগ্রেড করতে পারবেন এবং আপগ্রেড করতে পারবেন।
স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট টিভির মতো কোনো লিমিটেশন নেই। স্মার্ট টিভিতে আপনি যে ফিচার পাবেন ইন্টারনেট টিভিতে সেই ফিচার পাবেন না। যেমন স্মার্ট টিভিতে খুব সহজেই আপনার স্মার্ট ফোনের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন যেটা ইন্টারনেট টিভিতে পারবেন না।
সর্বোপরি, এতে একই সাথে ক্যাবল ও ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা থাকায় অ্যান্ড্রয়েড, iphone এর সাথে কানেক্ট করে টিভির বড়পর্দায় ভিডিও, মিউজিক, ফটো ইত্যাদি শেয়ার করা যায়। এমনকি বিল্ট-ইন ব্রাউজারে আপনার পছন্দের সব সোশ্যাল মিডিয়া সাইট বা ব্লগ গুলোও অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন।
সেই সাথে ব্লু-টুথ সুবিধা থাকায় ব্লু-টুথ স্পিকার, হেডফোন ইত্যাদি কানেক্ট করে সহজেই মিউজিক এক্সপেরিয়েন্স নিতে পারবেন। তাই এখন গভীর রাতে ফুটবল ম্যাচ বা মুভির সাউন্ড শুনতে আর কোন সমস্যাই থাকছে না। সেই সাথে অন্যদের বিরক্তও হতে হচ্ছেনা।
একটা কথা সবসময় মনে রাখা উচিত যে আসবাপত্র বা সরঞ্জাম গুলো আমরা বছরে বা কয়েক বছরে একবার কিনি সেগুলো একটু ভেবে চিন্তে এবং ভালো জায়গা থেকে কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ। যেমন ইলেক্ট্রনিক্স এর ক্ষেত্রে সবসময় authorized রেপ্রিজেন্টেটিভ দের কাছ থেকেই কেনা উত্তম। উদাহরণস্বরূপ, ট্রান্সকম ডিজিটালকে ধরে নেয়া যায়। ভালো মানের স্মার্ট টিভির রেঞ্জ সাইজ এবং ফিচার অনুযায়ী সর্বনিন্ম ২৫, ০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬, ০০, ০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আজকের দিনের ক্যাবল টিভি অনেক পপুলার হলেও আগের দিনে আমরা এন্টেনা লাগানো সাদা-কালো টিভির প্রতিই আকৃষ্ট ছিলাম। দিন যাচ্ছে আর আমাদের বিনোদনের ধাপেও একটি করে নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। আমরা এখন যা পরিবর্তন দেখছি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরো অত্যাধুনিক পরিবর্তন দেখতে পারবে। এই পরিবর্তনের মাঝে আমাদের যেন কোনোকিছুতেই না ঠকতে হয় তাই সবসময় সবকিছুতে আমাদের আপডেট থাকতে হবে।
আমি আশা মনি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।