চিনির পরিবর্তে আমরা খাচ্ছি ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার

শুনুন তাহলে বিষ+বিষ এর ভয়াবহ কাহিনী যা আমদের খাওয়ানো হচ্ছে। নিষিদ্ধ ঘন চিনি (সোডিয়াম সাইক্লামেট) হাজার হাজার টন আমদানি হয়ে দেশে ঢুকছে কিভাবে? অনেক দিনের চেষ্টায় ক্লু পেয়ে গেলাম বণিক বার্তা পত্রিকার এক সংবাদে। সাইট্রিক এসিড নামে আমদানি হচ্ছে এই বিষ। দেয়া হচ্ছে, মিষ্টি, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, ব্যবহারেজ, জুস, চকোলেট, কন্ডেন্সড মিল্ক প্রভৃতি মিষ্টি জাতীয় খাদ্য দ্রব্যে।

চিনির চেয়ে প্রায় পঞ্চাশ গুণ বেশি মিষ্টি এই ঘন চিনি পৃথিবীর অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। ক্যান্সার, কিডনি বিকল, হজম শক্তি হ্রাস সহ নানাবিধ জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে এই চিনি। (click here to know more about sodium Cyclamate)

সাইট্রিক এসিড এর মত দেখতে হুবহু এক রকম বলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতি সহজেই সাইট্রিক এসিড নামে ও কোডে ঘন চিনি আমদানি করছে।
ঢাকার মিটফোর্ড থেকে বের করলাম আরও এক নামে ঘন চিনি আমদানি হচ্ছে। সোডিয়াম সাইট্রেট দেখতেও ঘন চিনির মত দেখতে। সাইট্রিক এসিড এবং সোডিয়াম সাইট্রেট নামে আসছে নিষিদ্ধ বিষ ঘন চিনি। বণিক বার্তার সাংবাদিক ভাই খবর দিলেন মিটফোর্ডে দুই রকম

ঘন চিনি বিক্রি হয়। একটা পিউর অন্যটা ভেজাল মিশ্রিত। পিউর ঘন চিনি কেজি ২২০ টাকা হলে ভেজাল ঘন চিনি ১৪০ টাকা কেজি। মাথাটা ঘুরে গেল! বিষের সাথে বিষ! সেখানে সংবাদ নিলাম কম দাম বিধায় এই ভেজাল ঘন চিনির বিক্রি সর্বাধিক। সবাই গাড়ি ভর্তি করে এই ভেজাল ঘন চিনি নিয়ে যায় বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে দেয়ার জন্য।

 

ভেজাল মিশাতে হলে তো ঘন চিনির মতই অন্য কোন একটি দ্রব্য মেশাতে হবে, যার দাম হবে খুব কম এবং মিষ্টি অথবা টেস্টলেস হতে হবে। কি হতে পারে তা? দুই দিন ঘুমাতে পারিনি। সমানে পারমুটেশন কম্বিনেশন করতে লাগলাম। কি সেই আইটেম? কেউ বলে না। গুগলে ঘন চিনির ছবি
বের করে তার সাথে মিল রেখে খুঁজতে লাগলাম আইটেম।

হটাত মাথার মধ্যে বিদ্যুৎ চমকে উঠল। প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না, কি করে সম্ভব! আমার এক ভাই সার (ফার্টিলাইজার) বিক্রি করে। তাকে বললাম, “চিনির মত দানাদার সার কি আছে
রে?” ইউরিয়া? না ইউরিয়া গোলাকার এবং খুব খারাপ স্বাদ। আর কি আছে? আচ্ছা ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার? ভাই আমার
লাফ দিয়ে উঠল! হ্যাঁ ভাই, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার দেখতে চিনির মত দানাদার, দাম কম ১৫/২০ টাকা কেজি এবং স্বাদহীন।
এবার আমি লাফ দিয়ে উঠে গুগলে ছবি দেখলাম। ঘন চিনি এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার দেখতে একই রকম। বিশ্বাস হচ্ছিল
magnesium sulphate

না, যে আমাদের সার খাওয়াচ্ছে আর একটি বিষের সাথে। সেই সাংবাদিক ভাইয়ের দ্বারা মিটফোর্ড থেকে ভেজাল এক কেজি সার কিনে আমি সরকারীভাবে চিঠি দিয়ে ১০০ গ্রাম নমুনা
পরীক্ষার জন্য পাঠালাম সরকারী ল্যাব (সারের জন্য) খামার বাড়ির মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটে। ঘুম হারাম হয়ে গেল আমার টেনশনে। রিপোর্ট পেলাম সেই ঘন চিনির নমুনায়
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার পাওয়া গেছে।
যা সন্দেহ করেছি তাই। সেই সার মিশ্রিত ঘন চিনির প্যাকেট বা নমুনা না দেখেই এত হাজার লাখ আইটেমের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার কিভাবে নির্বাচিত করলাম, তা সত্যিই হবাক হবার বিষয়!

কয়েকজন বিজ্ঞানী রসায়নবীদকে জিজ্ঞাস করলাম, সার খেলে কি হয়? তাঁরা হতবাক হয়ে গেলেন। কেন সার খাবেন কেন? আমি
বললাম, যদি খাই। ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সার সাথে ঘন চিনি! হেসে তাঁরা উত্তর দিলেন, “ভাই আপনার শখ লাগলে আপনি খান। তবে দুনিয়ার কোন অসুখ থেকে বাদ যাবেন না এবং প্রথমশেষ হবে বাচ্চারা”।

নানা ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাদ্যে দীর্ঘদিন ধরে এক বিষ ঘন চিনির সাথে আর এক বিষ রাসায়নিক সার ম্যাগনেসিয়াম সালফেট খেয়ে আমাদের পরিণতি কি হচ্ছে? পৃথিবীর কোথাও আছে মানুষকে সার খাওয়ানোর উদাহরণ?
কোথায় আছি আমরা? কোথায় আমাদের গন্তব্য? কে আমাদের বাঁচাবে, বাঁচাবে আমাদের সন্তানদের?

[ভাল লাগলে টিউন টি অবশ্যই শেয়ার করুন, শেয়ার বা টিউমেন্ট দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন। ]

Original Post here
https://www.homeopathybd.com/instead-of-sugar-we-are-eating-magnesium-sulphate/

Level 3

আমি আরিফ মালিথা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস