পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তা বর্ম

  1. আসসালামুআলাইকুম
    প্রতিটি মানুষ নিরাপদে বাঁচতে চায়। মানুষ যতই সম্পদশালী বা ক্ষমতাবান হোক না কেন জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে তার জীবন বিষাদময় হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপ্রধানরা একটি দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যক্তি। কিন্তু তাদের ক্ষমতা ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে শত্রু সংখ্যা ও বৃদ্ধি পায়। যার ফলে প্রয়োজন হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যে দেশ যত বেশি শক্তিশালী সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তা তত বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়। রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব সময় গোপন রাখা হয়। তবে কখনো কখনো কিছু তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ে। সেইসব টুকরো তথ্যের সমষ্টি নিয়ে আজ থাকছে সেরা 5 রাষ্ট্রপ্রধানদের সুপার সিকিউরিটির কথা।
    ১.ডোনাল্ড ট্রাম্প। https://youtu.be/pJmkqhZrkTw
    পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর দেশগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র যার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আলোচিত-সমালোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবাক করা ব্যাপার হল তার ও তারপরিবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পেছনে প্রতিদিন প্রায় 6 কোটি টাকা খরচ করা হয়। তার নিরাপত্তা গাড়িটি লিমুনিজ। নাম তার দ্য বিস্ট। বিলাসবহুল এই গাড়িটি শুধুমাত্র বুলেটপ্রুফ ই নয় বরং মিসাইল গ্রেনেড বা হাতবোমা থেকেও সুরক্ষিত। শত্রুরা হামলা করলে তাদের প্রতিরোধের পাশাপাশি রয়েছে পাল্টা জবাব দেওয়ার আগ্নেয়াস্ত্র। রয়েছে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাসের ব্যবস্থা। টায়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ও এটি চলতে পারবে। এর গুলি প্রতিরোধি দরজা গুলো 10 ইঞ্চি পুরু। 15 লাখ ডলারে আট টন ওজনের এ গাড়িটি কে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ গাড়ি। এটি এতই শক্তিশালী যে রকেটচালিত গ্রেনেড হামলা ও প্রতিরোধ করে দিতে পারে এটি। এছাড়া রয়েছে বিশেষ অক্সিজেন ট্যাংক আর শর্ট গানের মত আগ্নেয়াস্ত্র নাইট ভিশন ক্যামেরা সহ আরো অনেক কিছু। ট্রাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন দেশ থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করে প্রেসিডেন্টের ওপর হামলার হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে। এছাড়া নেভি সিলের একটি বিশেষ দল তাকে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে, যে কোনো হুমকি ও হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত থাকে। প্রেসিডেন্ট বিশ্বের যেখানেই পা ফেলেন নিরাপত্তারক্ষীরা একটি নিরাপত্তাবলয় তৈরি করে ফেলেন।
  2. ভ্লাদিমির পুতিন

বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ রাশিয়া। এর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তার ক্ষমতার মতোই শক্তিশালী।
তার নিরাপত্তা গাড়িটির নাম মার্সিডিজ বেঞ্জ এস ৬০০ পুলম্যান। গাড়িটি প্রায় দ্য বিস্ট এর সম পর্যায়ের। বুলেট প্রফ হাত বোমা গ্রেনেড রকেট বোমা ও মিসাইল প্রতিরোধী এটি। রয়েছে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টায়ার নষ্ট হলে এ গাড়িটিও অনায়াসে চলতে পারবে। বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় জালানী ট্যাঙ্ক নির্বাপন ব্যবস্থা।
যখন বিমানের যে রুটে তিনি চলেন সেই বিমান রুটে সব ধরনের বিমান চালনা নিষিদ্ধ করা হয়।
বিশ্ব জুড়ে অসংখ্য গোয়েন্দা 24 ঘন্টা প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার হুমকি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে। তার সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করে ফেডারেল প্রটেক্টিভ সার্ভিস। যা রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস। তার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত থাকে প্রায় 50 হাজার গার্ড।
কিম জং উন
সবচেয়ে সমালোচিত উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট তিনি। তার বাবা দাদাকে অনেক বাড়ি মারার চেষ্টা করা হয়েছিল। যার ফলে 24 ঘন্টা কড়া নিরাপত্তা থাকেন তিনি। তার দেশের আয় বেশিরভাগ অর্থ তিনি ব্যয় করেন রাজনীতি ও জীবনযাপন ও নিরাপত্তা মূলক কাজে। তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী সংখ্যা প্রায় 15 হাজারের মতো এবং প্রতিনিয়ত ও প্রস্তুত থাকে 20 হাজারের মতো সৈনিক।
তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা 2 টি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত আছে সেন্ট্রাল পার্টি অফিস সিক্স যা অফিশিয়ালি মেইন অফিস অ্যাডজুট্যান্টস নামে পরিচিত। কিম জং উন এর সাথে দেহরক্ষী হিসেবে থাকেন 4 থেকে 6 জন গার্ড। তিনি যখন গাড়িতে থাকেন তখন গাড়ির চারদিক ঘিরে দৌড়াতে থাকে নিরাপত্তারক্ষীরা। এরা সেমি অটো মেটিক হ্যান্ড গান ধারণ করে থাকেন। দেহরক্ষী হিসেবে যাদের বাছাই করেন সতর্কতাস্বরূপ তাদের কয়েক প্রজন্ম যাচাই-বাছাই করে নির্বাচন করা হয়। এ গেল প্রথম ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দ্বিতীয় ধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেয় গার্ড কমান্ড। যাদের কাজ হলো কিম জং উন যেখানে যাবেন সেই জায়গার নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করা। আর এই পর্যায়ে যে কতজন নিরাপত্তারক্ষী আছেন তা কেউই জানে না।
রজব তাইয়েব এরদোগান
বর্তমান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। যিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে সব সময় প্রতিবাদ মুখর থাকতে দেখা যায় তাকে। যার ফলে তার শত্রুর সংখ্যাও কম নয়। ফলে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক শক্তিশালী রাখতে হয়। প্রেসিডেন্টের নিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রায় 20000 গার্ড নিয়োজিত থাকে। এরদোগানের গাড়িবহর খুব দ্রুত চলে। এবং গাড়ির হেডলাইট সার্বক্ষণিক জ্বালানো থাকে। তিনি যখন রাস্তা দিয়ে চান তখন আশেপাশের সমস্ত বিল্ডিংয়ের সামনে, ছাদে ও দোকানে স্নাইপার হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এমনকি তার গাড়ির ছাদে ও স্নাইপাররা দাঁড়িয়ে থাকেন।
অ্যাঙ্গেলা মেরকেল
ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দেশ ও জার্মানির রাষ্ট্রপ্রধান তিনি। তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব সময় ধোঁয়াশায় রাখা হয়। তার বাড়ির সামনে দিয়ে পর্যটকরাও ঘুরে আসতে পারেন। কিন্তু তাই বলে মনে করার কোনো কারণ নেই যে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী না। অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের 24 ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা প্রদান করে অস্ত্রধারী দক্ষ গোয়েন্দা দল। তারপরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। মিরকেল যখন রাজপথে নামেন তখন আশেপাশের প্রতিটির দালান ও দোকানে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। বিশেষ আর মার গাড়িতে চড়েন তিনি 15 জন বডিগার্ড থাকে সব সময় ঘিরে রাখে। তার গাড়িবহরে একাধিক নকল গাড়ি থাকে যাতে সনাক্ত করা না যায় তিনি কোন গাড়িতে আছে ন।
বন্ধুরা সব শেষে একটি কথা। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও তারা কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় চিন্তায় থাকেন। এ ব্যাপারেেে ভিডিও লিংকও https://youtu.be/pJmkqhZrkTw

Level 0

আমি মোঃ আল মামুন শাহ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস