প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী টাইম বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ১০ ব্যক্তির একটি তালিকা তৈরি করে ২০১৫ সালে। সেখানে সর্বকালের সেরা ধনী বলা হয় মানসা মুসাকে। এর আগে ২০১২ সালে ইতিহাসে ধনী ব্যক্তিদের সম্পদের পরিমাণ নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা সেলিব্রেটি ‘নেট ওয়ার্থ’ এই ধনকুবেরকে বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে ধনী মানুষের খেতাব দেয়—
ছিলেন সোনার খনির মালিক
মুসার একটি প্রতিকৃতির বর্ণনা দিয়ে বিখ্যাত ইতিহাসবিদ রুডলফ বলেন, ‘যে কারও দেখা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন সম্রাট মুসা। প্রতিকৃতিটিতে দেখা যায়, সোনার সিংহাসনে হাতে সোনার রাজদণ্ড নিয়ে বসে আছেন মুসা। এ সময় তার হাতে রয়েছে একটি সোনার পাত্র এবং মাথায় সোনার মুকুট। ’ যারা ইতিহাসপ্রিয় মানসা মুসা নামটির সঙ্গে হয়তো তাদের অনেকেই পরিচিত। তিনি ছিলেন মালির তিম্বাকতুর রাজা। তার সম্পর্কে নানা রকম মিথ প্রচলিত আছে। এর কারণ তিনি ছিলেন অসম্ভব ধনী। বলা হয়ে থাকে তার কত সম্পদ ছিল তা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এমনকি ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বলা হয় মানসা মুসাকে। ইতিহাসবিদ রিচার্ড স্মিথের মতে, মুসার পূর্ব আফ্রিকার সাম্রাজ্যের ভিতরে ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোনার খনি। ফলে তখনকার সময়ের নিয়ম অনুয়ায়ী সেই সোনার খনির মালিক বনে যান মানসা মুসা। আর তখন সোনাও ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি বস্তু। সুতরাং মুসা কত বড় ধনী ছিলেন তা বোঝাতে কোনো সঠিক সংখ্যা ব্যবহার করা সম্ভব নয়। কিছু ঐতিহাসিক সূত্র বলছে, সম্রাট মুসা এত বড় ধনী ছিলেন যা বর্ণনা করা পুরোপুরি অসম্ভব। মুসার সৈন্য-সামন্ত সম্পর্কে কথিত আছে, তার সেনাবাহিনীতে দুই লাখ সদস্য ছিলেন। সঙ্গে আরও ছিল ৪০ হাজার তীরন্দাজ। সেই সময় সেনাবাহিনীতে এত সংখ্যক সদস্য থাকা বিস্ময়কর ব্যাপার।
এ ছাড়া সর্বকালের সেরা এই ধনীর জীবনযাপন এত বিলাসী ছিল যে, এ জন্য মিসরে একবার মুদ্রা সংকটও দেখা দিয়েছিল। সম্রাট মুসা যে শুধু জাঁকজমক এবং বিলাসিতা করতেন এমন নয়, তিনি অত্যন্ত ধার্মিক শাসকও ছিলেন। তাই তার সময় প্রজারা মোটামুটি সুখেই দিন অতিবাহিত করেছে। মানবিক ছিলেন এই সোনার খনির মালিক। কখনো কাউকে খালি হাতে ফেরাতেন না। শিক্ষা-দীক্ষায় বিশেষ নজর ছিল মানসা মুসার। আরবি ভাষায় তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের প্রতিও তার বিশেষ আগ্রহ ছিল।
রাজ্য বিস্তার ও সম্পদ
সম্রাট মানসা মুসা বিশ্বাস করতেন ইসলামে প্রবেশ মানেই হচ্ছে একটি সভ্য সাংস্কৃতিক দুনিয়ায় পদার্পণ। নিজের সাম্রাজ্যের মধ্যে ধর্ম প্রসারের কাজেই বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। মুসা যখন ক্ষমতায় বসেন তখন মালি সাম্রাজ্য বর্তমান মালি এবং দক্ষিণ মৌরিতানিয়ার অংশজুড়ে বিস্তৃত ছিল। তার শাসনামলজুড়ে মুসা আটলান্টিক মহাসাগরের তীর থেকে তিম্বাকতু পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকার প্রায় ২ হাজার মাইল পর্যন্ত নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন। সম্রাট মুসার কত সম্পদ ছিল তা অনুমান করাও যাবে না। কারণ সবচেয়ে বড় সোনার খনির মালিক ছিলেন তিনি। তখন পশ্চিম আফ্রিকা ছিল স্বর্ণ এবং লবণে সমৃদ্ধশালী জনপদ। সোনা এবং লবণের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুবিশাল সাম্রাজ্য থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করে মুসা তার সাম্রাজ্যকে অত্যন্ত সম্পদশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। মালি সাম্রাজ্যের প্রায় ৪০০ শহরকে আধুনিক রূপ দিয়েছিলেন আলোচিত এই শাসক। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যের মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর, হল অডিয়েন্স, গ্র্যান্ড প্যালেস ইত্যাদি রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর
এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সম্রাট মুসার আমলে তৈরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মসজিদগুলো। তার সময়ই লাইব্রেরি অব আলেকজান্দ্রিয়ার পর আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হয় ইউনিভার্সিটি অব শাঙ্কোর। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২৫ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী বিদ্যার্জন করত এবং পাঠাগারে ছিল এক লাখেরও বেশি বই। বালির থিমবুকতু শহরকে বৃত্তিপ্রাপ্ত মুসলিমদের শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত করেন এই সম্রাট। একই সঙ্গে শহরটি হয়ে ওঠে বাণিজ্য এবং সংস্কৃতি চর্চার একটি কেন্দ্রও। ভেনিস, গ্রানাডা এবং জেনোয়ার মতো ইউরোপীয় শহরগুলো তখন বাণিজ্যিক শহর হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। থিমবুকতু শহরটি বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে যায়। টানা ২৫ বছর মালি শাসন করে ১৩৩২ সালে মৃত্যুবরণ করেন বিশ্বের সর্বকালের সবচেয়ে ধনী এই ব্যক্তি।
ক্ষমতায় আরোহণ
মিসরীয় ইতিহাসবিদ আল উমারির বর্ণনা অনুযায়ী তখন আফ্রিকার মানুষরা মনে করত আটলান্টিক মহাসাগরই শেষ কথা। এর ওপরে কিছু নেই। মুসার পূর্বসূরী দ্ব্বিতীয় আবুবকর কেইতা বিশ্বাস করতেন ঠিক এর উল্টো। আটলান্টিক মহাসাগর অসীম নয় এবং এর অপর প্রান্তে পৌঁছাও অসম্ভবও নয়। তিনি আটলান্টিক মহাসাগরের শেষ সীমানা বের করা এবং অন্য কোনো ভূখণ্ডের অনুসন্ধানে দুই শতাধিক নৌকাবোঝাই একটি বাহিনী গঠন করেন। এই দলের ক্যাপ্টেনের প্রতি নির্দেশ ছিল মহাসাগরের শেষ না পাওয়া পর্যন্ত অথবা মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কেউ এ অভিযান থেকে ফেরত আসতে পারবে না। এরপর দীর্ঘদিন পেড়িয়ে যায়। বছরের পর বছর যায় কেউ ফিরে আসে না। এরপর সম্রাট আবুবকর নিজেই দুই হাজার নৌকাবোঝাই বিশাল এক বাহিনী নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে অভিযান শুরু করেন। সঙ্গে ছিল আরও এক হাজার নৌকা পানি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র। যাত্রা শুরুর আগে সম্রাট রীতি অনুযায়ী মুসাকে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান। ফলে ১৩১২ সালে মুসা মালির সম্রাট হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।
মানসা মুসার ঐতিহাসিক হজযাত্রা
ইসলাম ধর্মাবলম্বী সম্রাট মুসার হজ পালন করাটা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিখ্যাত ঘটনা। বেশ কিছু কারণেই এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সোনা নিয়ে গিয়েছিলেন হজ পালনের উদ্দেশ্যে আর ফেরত আসেন জ্ঞান নিয়ে।
এই সফর শেষে দেশে ফেরার সময় সম্রাট মুসা তার সঙ্গে অনেক ইসলামিক স্কলার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং আন্দালুস ও কায়রো থেকে অনেক বিখ্যাত স্থপতিকে নিয়ে আসেন। তাদের দ্বারা মুসা তিম্বাকতু, গাওসহ বিভিন্ন শহরকে আধুনিকায়ন করেন, প্রচুর সুরম্য মসজিদ, মাদ্রাসা, লাইব্রেরি, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেন এবং ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটান।
মক্কায় হজ করতে যাওয়ার ঘটনা আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে খুবই আলোচিত হয়। ইতিহাস অনুযাযী ১৩২৪-২৫ সালের মধ্যে হজ করতে গিয়েছিলেন মুসা। ওই সময় তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হয়েছিল প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে ১২ হাজার লোক ছিল শুধু মুসার সেবক। সম্রাটের প্রতিজন সেবকের সঙ্গে ছিল সোনার বার। শুধু তাই নয়, বিশাল আয়োজনের এ সফরে ১০০টি উট ছিল। প্রতিটি উট প্রায় ১৪০ কেজি করে সোনা বহন করেছিল।
যাত্রাপথে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেন এই সম্রাট। এত বেশি সোনা বিতরণ করেছিলেন যে, পরের কয়েক বছর অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। কায়রো, মক্কা এবং মদিনায় যেখানে সোনার দাম সমসময় চড়া সেখানে সোনার দাম একবারেই নেমে গিয়েছিল। এতে অবশ্য শহরগুলোতে বেড়ে গিয়েছিল মদ্র্রাস্ফীতি। পরিবারের লোকজনের মধ্যে মুসার এই হজযাত্রায় সঙ্গী হন তার প্রথম স্ত্রী। এ ছাড়া সম্রাটের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন আরও ৫০০ সেবিকা। কাফেলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক, চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তা ও সম্রাটের মনোরঞ্জেনের জন্য সংগীতশিল্পীও ছিলেন। মক্কায় পৌঁছানোর পর তিনি তার বিশাল বাহিনী নিয়ে হজ পালন করেন। হজ পালনের পর আরব বিশ্বের একটি বড় অংশ ঘুরে বেড়াতে থাকেন মানসা মুসা। এ সময় তিনি জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। তিনি বুঝতে পরেন শুধু অর্থ-সম্পদই নয়, বরং আত্মার সন্তুষ্টি দিতে পারে শুধু জ্ঞান। তাই হজ থেকে ফেরার পথে আরব সাম্রাজ্য থেকে বহু উট বোঝাই করে চিকিৎসা, জোতির্বিদ্যা, দর্শন, ভূগোল, ইতিহাস, গণিত এবং আইন বিষয়ে প্রচুর বই নিয়ে আসেন। তাই বলা হয় তিনি সোনা নিয়ে গিয়েছিলেন হজ পালনের উদ্দেশ্যে আর ফেরত আসেন জ্ঞান নিয়ে।
এ ছাড়াও আরব সাম্রাজ্যের সবচেয়ে মেধাবী এবং সেরা গণিতবিদ, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও স্থাপত্যবিদদের আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন মালিতে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শুধু তাই নয়, নিজের সাম্রাজ্য থেকে উত্তর আফ্রিকার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী প্রেরণ করেন সম্রাট নিজ খরচে। বলা হয়ে থাকে, ওই হজে মুসা আজকের দিনের প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড ওজনের সোনা ব্যয় করেছিলেন।
ইতিহাসবিদরা তার এই হজ সফরকে তাই ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং এই সফরটি সম্রাটের জীবনের অন্যতম সেরা সময় বলে অভিহিত করেন।
সর্বকালের সেরা ধনীর তালিকায় আরও কয়েকজন
অগাস্ট সিজার
অগাস্ট সিজার খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ সালে রোমে জন্মগ্রহণ করেন। এই সম্রাট তখন ছিলে ভুবন বিখ্যাত। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ধারণা করা হয় ৪.৬ ট্রিলিয়ন। এমনকি সেই সময় বিশ্বের মোট অর্থনীতির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের দায়িত্বে ছিলেন অগাস্ট সিজার। ইতিহাসবিদ ইয়ান মরিসের মতে, তার সাম্রাজ্যের মোট সম্পদের পাঁচ ভাগের এক ভাগের সমান সম্পদ ছিল সিজারের। ২০১৪ সালের হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৪.৬ ট্রিলিয়ন। ব্যক্তিগতভাবে অগাস্ট পুরো মিসর জয় করেছিলেন।
সম্রাট শেন জং
অর্থনীতি বিষয়ের ইতিহাসবিদ প্রফেসর রোনাল্ড এডওয়ার্ড বলেন, শেন জংয়ের সাম্রাজ্য ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির সাম্রাজ্য। সম্রাট শেন জং ১০৪৮ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন প্রাচীন চীনে। সম্রাট শেন জং রাজত্ব করেছেন পুরো চীনেই। তার শাসনামলে চীনের জিডিপির হার ছিল বৈশ্বিক মোট জিডিপির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। সেই সময় বিশ্ব অর্থনীতির চূড়ায় ছিল চীন। ইউরোপে শুরু হওয়ার শতবর্ষ আগেই শেন জংয়ের সাম্রাজ্যে কর সংগ্রহ ব্যবস্থা চালু ছিল। আরও অনেক কিছুতেই তখন আধুনিক ছিল চীন।
সম্রাট আকবর
সম্রাট আকবর ১৫৪২ সালে ভারত উপমহাদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতবর্ষের মুঘল সাম্রাজ্যের অধিপতি। সম্রাট আকবর যে পরিমাণ সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন তা গোটা বিশ্বের মোট জিডিপির ২৫ শতাংশ। সে সময় পুরো বিশ্বের অর্থনীতির চার ভাগের এক ভাগই ছিল সম্রাট আকবরের অধীনস্থ। অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ অ্যাঙ্গাস ম্যাডিসনের মতে আকবরের সময় ভারতের জিডিপির সঙ্গে এলিযাবেথের সময়ের ইংল্যান্ডের জিডিপির তুলনা করা চলে।
জোসেফ স্ট্যালিন
জোসেফ স্ট্যালিন ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে। জোসেফ স্ট্যালিনের এই পরিমাণ সম্পদ ছিল যা দিয়ে তিনি বৈশ্বিক জিডিপির ৯.৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। তিনি অবশ্য ক্ষমতা দখল করেছিলেন স্বড়যন্ত্র করে। কথিত আছে তিনি লেনিনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন এবং প্রচুর মানুষ হত্যা করেন।
অ্যান্ড্রু কার্নেগি
অ্যান্ড্রু কার্নেগি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধনী। তিনি ১৮৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর অর্থনৈতিক ইতিহাস নতুনভাবে রচিত হয়েছিল অ্যান্ড্রু কার্নেগির হাত ধরেই। মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৭২ বিলিয়ন। ১৯০১ সালে জেপি মর্গানের কাছ থেকে ইউএস স্টিল কোম্পানিটি ৪৮০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেন স্কটল্যান্ডের অভিবাসী ব্যবসায়ী কার্নেগি। যা ছিল সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের মোট জিডিপির ২.১ শতাংশেরও বেশি। এখনকার সময় কার্নেগির সম্পদকে রূপান্তর করলে তারপরিমাণ বর্তমানে হবে ৩৭২ বিলিয়ন ডলার। যা সত্যিই বিস্ময়কর।
জন ডি রকফেলার
জন ডি রকফেলার ১৮৩৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৪১ বিলিয়ন ডলার। ১৮৬৩ সালে পেট্রোলিয়াম খাতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন জন রকফেলার। ১৮৮০ সালে তার স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ তেল উৎপাদন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। আর এর মাধ্যমেই তিনি হয়ে উঠেন বিশাল সম্পদের অধিপতি। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯১৮ সালে রকফেলারের জমা দেওয়া আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী তার জমা থাকা সম্পদের পরিমাণ ১.৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া সব মিলে সেই সময় তার সম্পদ ছিল ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক আয়ের উৎস। ২০১৪ সালে যদি ওই সম্পদের হিসাব করা হয় তবে তারপরিমাণ দাঁড়াবে ৩৪১ বিলিয়ন ডলার।
বিল গেটস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ ৯৩.৩ বিলিয়ন। বিল গেটস হলেন জীবিত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী। তার সম্পদের পরিমাণ অনুমান করাটা তুলনামূলক সহজ। এই সম্পদ বর্তমান বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী আমানিকো অরতেগার সম্পদের পরিমাণ ৭৫.৮ বিলিয়ন।
চেঙ্গিস খান
চেঙ্গিস খান ১১৬২ সালে মঙ্গোলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রচুর সম্পদের মালিক ছিলেন তিনি। চেঙ্গিস খান সফল সেনাপ্রধান হিসেবেও জগদ্বিখ্যাত। চীন থেকে ইউরোপ পর্যন্ত এলাকা ছিল তার সাম্রাজ্যের সীমানার মধ্যে। কুইন কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক মরিস রোসাবি বলেন, চেঙ্গিস খানের সাফল্যের একটা বড় কারণ ছিল যে, তিনি বিভিন্ন যুদ্ধ থেকে অর্জিত ধনসম্পদ নিজের সৈন্য-সামন্তের মধ্যে ভাগ করে দিতেন। চেঙ্গিস খান নিজের বা তারপরিবারের জন্য কোনো ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরি করেননি।
আমি আহাম্মাদ খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।