টিউনের শুরুতে সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন।
আজ আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ের সবথেকে আলোচিত সমালোচিত বিষয় ক্রিপ্টকারেন্সি নিয়ে একটি টিউন করতে যাচ্ছি। ইন্টেরেষ্টেড দর্শকদের প্রতি পুরো টিউন টি দেখার অনুরোধ রইলো। আশা করছি আমার এ টিউন থেকে আপনারা ভাল কিছু জানতে পারবেন।
কিছু সতর্কীকরন ঃ ভাল না লাগলে এড়িয়ে যেতে পারেন।
ইদানিং দেখা যাচ্ছে কিছু টিউনার এলোপাতাড়ি সার্থসিদ্ধ টিউন করে নিজেদের ফায়দা লুটে চলে যাচ্ছে। বিনিময়ে নতুন প্রজন্ম এদের কাছ থেকে ভাল কিছু তো শিখছে নাই বরং টিউনারদের ধোকা দেওয়ার ধরনটা তারা রপ্ত করে নিচ্ছে। পরবর্তিতে তারাও অন্যদের মত ফাউল টিউন অ্যাডভার্টাইজ করা শুরু করছে।
এ কথা আমরা সবাই জানি সার্থের বাইরে এই দুনিয়ায় কোন কিছুই নেই। তাই বলে ভাই সব কিছু কি এমন হবে? যেখানে যাই সেখানেই শুধু স্পামিং দেখি। ইউটিউবে বাংলা ভুয়া খবরের ভিডিও, ফেচবুকে দুনিয়ার আজব গুজব ভন্ডামি। মোবাইল ব্রাউজার গুলোর নিউজ পোর্টালে আর নাইবা তাকালাম।
দিনে দিনে আমরা কত নিচে নেমে যাচ্ছি এটা কি এখনও ভাবার সময় হয়নি? সবাই এখনি সতর্ক হোন। নিজে থেকে ভাল কিছু করার চেষ্টা করুন। শ্রম আর মেধার প্রয়োগ করতে পারলে আপনি ও এক দিন সফল হবেন। সাধারন পাবলিক এর থেকে কিছু প্রত্যাশা করার আগে পাবলিক ডিমান্ড বোঝার চেষ্টা করুন। আগে তাদের কে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করুন দেখবেন তারাও আপনাকে কিছু দিচ্ছে।
ক্রিপ্টকারেন্সি বিষয়ে গভমেন্ট নোটিশ।
আপনি কি বাংলাদেশের একজন সচ্ছ নাগরিক? কোন ধরনের ঝুটঝামেলায় জড়াতে চান না? কিংবা ইলিগ্যাল কর্ম কান্ডে জেল জরিমানার ভয় পান? ভাই তাহলে আপনাকে সেলুট, আপনি আর একটু ও আগে না বেড়ে সোজাসুজি স্থান ত্যাগ করুন।
ভাই এ দেশে কত জন মানুষ তার নিতি ঠিক রেখে কাজ করে। গুনে বের করলে ২ হাতের ১০ আঙ্গুল ও ভরবে না। হ্যা নিতি রাখুন মানুষ কে না ঠকিয়ে, কারো সাথে চিটারি না করে, অন্যোর ঘাড়ে কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার চেষ্টা না করে, ব্যবসা করুন বাট মিথ্যা কথা না বলে, টাকা ইনভেষ্ট করে ব্যবসায়িক ইন্টেরেষ্ট নিন বাট সুদ না নিয়ে, কোন মাদক, অস্ত্র, জঙ্গি কার্যক্রমে না জড়িয়ে। ভাইরে এদেশের এটলিষ্ট ৫০% মানুষ ও যদি ভালো হতো, তাহলে কবে আমাদের পরিবর্তন হয়ে যেত। বুকে হাত দিয়ে আমার কথা গুলো নিজের মনের কাছে প্রশ্ন করুন। তারপর কোন প্রশ্ন থাকলে টিউনমেন্ট করুন, আশাকরি আমিও গঠন মূলক উত্তর দিতে পারবো।
আজকের এ টিউনে আপনি কি কি পাচ্ছেন তা দেখে নিন ঃ
ক্রিপ্টকারেন্সির ইতিহাস ঃ
১৯৮৩ সালে আমেরিকান ক্রিপ্টোগ্রাফার ডেভিড চৌম ক্রিপ্টোগ্রাফিক পদ্ধতিতে ডিজিটাল উপায়ে টাকা আদান প্রদানের বিষয়টি নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করেন। আর সেই ব্যাবস্থাটির নাম দেন ই-ক্যাশ। ১৯৯৫ সালে, তিনি ডিজিক্যাশের মাধ্যমে এটি একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক ইলেকট্রনিক পেমেন্টের প্রাথমিক ফর্ম বাস্তবায়নের দিকে এগুতে থাকেন। পরবর্তীতে সফটওয়ারে নির্দিষ্ট এনক্রিপটেড কোড গুলি ইনপুটের পর প্রাপক প্রেরণকারীর অর্থ পান।
তবে ২০০৮ সালে জাপানি নাগরিক সাতোশি নাকামোতো সফলভাবে এই অস্তিত্ত বিহীন ডিজিটাল ক্যাশ ব্যবস্থা চালু করেন। যা কিছু দিন পরে বিটকয়েন নামে পরিচিত পায়। বিটকয়েন হচ্ছে ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটকলের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া সাংকেতিক মুদ্রা। বিটকয়েন লেনদেনের জন্য কোন ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান বা নিকাশ ঘরের প্রয়োজন হয় না।
যেহেতু বিটকয়েনের লেনদেন সম্পন্ন করতে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পরে না এবং এর লেনদেনের গতিবিধি কোনভাবেই অনুসরণ করা যায় না। তাই কে কার কাছে এই ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় করছে তা অন্য কেউ জানতে পারে না। আবার পরিচয় গোপন রেখেও এটা দিয়ে লেনদেন করা যায়। তবে এর এনক্রিপটেড লেজার সব লেনদেনকে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর এ ধরনের কিপ্টগ্রাফিক পিয়ার টু পিয়ার ব্যবস্থা কে বলে ব্লকচেইন টেকনোলজি।
ক্রিপ্টকারেন্সি কি ঃ
ক্রিপ্টকারেন্সি হচ্ছে একটি সাংকেতিক বা ভার্চুয়াল মুদ্রা ব্যবস্থা সাধারনত যাকে ডিজিটাল কয়েন বলে ডাকা হয় আর এটির কোন বাস্তবিক বা হাতে ছুয়ে দেখার মত কোন রুপ নেই। মানে এগুলো টাকা ডলার কিংবা রুপির এর নেয় হাতে ছুঁয়ে দেখার মত না। এটির ব্যবহার শুধু মাত্র অনলাইনেই সম্ভব। এই কয়েন গুলোর ভিতোর বিটকয়েন, ইথারিয়াম, লাইট কয়েন, বিটকয়েন ক্যাশ, ড্যাস কয়েন, মনেরোও উল্লেখযোগ্য, এছাড়াও মার্কেটে আনুমানিক ষোলশ কয়েন ও এক হাজার আনুষঙ্গিক টোকেন আছে।
২০১৬ সালের মাঝামাঝি থেকে এটি একটি টপ ট্রেন্ডিং মার্কেটি পরিণত হয়েছে। আর প্রতি দিনই মার্কেটে নতুন নতুন ফিচার নিয়ে বিভিন্ন কয়েন প্রবেশ করছে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে নতুন কোম্পানি গুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করার সাথে সাথে মার্কেটে তাদের ব্যক্তিগত টোকেন কয়েন রিলিজ করছে। এসকল টোকেন দিয়ে শুধু মাত্র তাদের সাথেই লেনদেন করা যায়। অর্থাত পৃথিবিতে নতুন রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার সাথে সাথে সেখানে লোকাল বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করার জন্য সেখানে রাষ্ট্র ভিত্তিক মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন করা। টোকেন বিষয় টি এমন একটি বিষয়।
এখনও বুজতে পারছেন না? ওকে, একটা ডেমো দেখানো যাক। ধরুন আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। মাস শেষে ৩০ তারিখ অফিস আপনার স্যালারি দিল আপনার বিক্যাস এক্যাউন্টে। আর বললো আজ থেকে আপনারা আর হাতে কোন স্যালারি পাবেন না। এই ভাবে দেশের সব প্রতিষ্ঠানই একই কাজ করলো। এখন আপনি বাজারে গেলেন চাল ডাল কিনতে, সেখানে আপনিও পেমেন্ট পে করলেন বিক্যাস থেকে। আর ওই সকল ব্যবসায়িগন তাদের পাইকাড়দের কে ও সেইম সিস্টেমে পে করলো। তাহলে বিষয়টি কি দাড়ালো? হাতে ধরে দেখার মত টাকার আর কোন অস্তিত্ত থাকলো না। সব কিছু ভার্চুয়াল অর ডিজিটাল হয়ে গেলো। এই ধারোনাটি থেকেই ক্রিপ্ট মানি তথা এনক্রিপ্টেড মানির জন্ম।
ডিজিটাল মানি আর ক্রিপ্ট মানি আবার এক সাথে গুলিয়ে দিয়েন না। আমি আপনাদের বোঝানোর সার্থে ডেমোটি দেখালাম। যে কোন দেশের সরকার ইচ্ছা করলে তাদের লোকাল মুদ্রা কে ডিজিটাল টাকায় পরিনত করতে পারে। লোকাল মুদ্রা ভার্চুয়াল মুদ্রায় রূপান্তরে অনেক সুবিধা আছে। যেমনঃ টাকা কখনো নষ্ট হবে না, সরকার টোটাল টাকার পরিমাণ রিয়েল টাইম ট্রাক করতে পারবে, সঠিক ভাবে ভ্যাট আদায় হবে, ইলিগ্যাল কর্ম কান্ডে অর্থ সরবরাহ বন্ধ হবে। এ ছাড়াও অনেক সুবিধা আছে যা বলে শেষ করা যাবে না। আবার সঠিক সিকিরিটি দিতে ব্যার্থ হলে টাকা সার্ভার থেকে হ্যাক হওয়ার স্মভবনা ও কম না। অন্য দিকে ক্রিপ্ট কারেন্সি ট্রাক করাই পসিবল না। যে জন্য কোন প্রকারে ভ্যাট, টোটাল টাকার হিসাব, আপনার বাৎসরিক ইনকাম, কোন কিছুই কেও জানতে পারবে না।
এখন সব কিছু ক্লিয়ার? এখনও না! আচ্ছা ঠিক আছে, আপনার না বোঝার পয়েন্টটুকু টিউমেন্ট করুন। আমি আমার যথা সাধ্য চেষ্টা করবো।
ক্রিপ্ট ইন্সিওরেন্স কি ও কিভাবে করবেন ঃ
আপনারা হয়তো অনেকেই আছেন যারা টেকটিউনসকে দীর্ঘ দিন যাবত ফলো করে যাচ্ছেন। আপনাদের মত আমি ও আজ থেকে আট বছর আগে একটি নোকিয়া ৩৫০০ ক্লাসিক ফোনের মাধ্যমে এই টেকটিউনস এর সন্ধান পাই। ওই সময় শুধু শিখতাম আর শিখতাম, কোন টিউন তো দূরে থাক ২ বছরের ভিতর একটা টিউমেন্ট ও করতে পারি নাই।
তখন দেখতাম অনেকেই বলতো বিটকয়েন ফ্রিতে দিচ্ছে সময় থাকতে লুফে নিন। কিন্তু লুফে আর কি নিব, বোঝার ওতো দরকার আছে কিছু। শেষমেশ যখন কিছুটা বুঝলাম, তখন এই গুলা আমার কাছে আজাইরা মনে হতো। মনে করতাম, আরে টাকা আবার এমন হয় নাকি, বাটপারের দল সব ধান্দামি শুরু করছে।
আবার কিছু দিন এক আধটু চেষ্টা ও করলাম। কোন সাইটে যেন দুই একটা বিটকয়েন আর্ন ও করে ছিলাম। কিন্তু একমাত্র মোবাইলের অপেরা মিনি দিয়ে খুব বেশি কিছু সুবিধা করতে পারলাম না। ওই সময় একশ কয়েনের দাম ছিল এক ডলারের কিছু কম। মাঝেমাঝে মনে হত শুধু শুধু কষ্ট করছি, এত কম দামি কয়েন দিয়ে কি হবে। আর এ ভাবেই থেমে গেল আমার বিট কয়েন জার্নি।
কিন্তু হঠাৎ করে ২০১৮ সালে যখন দেখলাম বিটকয়েন পৃথিবীর সব থেকে দামি পদার্থে পরিণত হয়েছে। তখন আমি একবার মরে গেছি। এই আট বছরে কত গুলো জিমেইল পরিবর্তন করেছি তারই কোন ঠিক নাই। অনেক খুঁজে খুঁজে এক বিন্দু ও কোন ইনফরমেশন পেলাম না। শেষে গুগলে শুধু বিটকয়েনের দাম দেখতাম। মাঝরাতে কয়েকদিন বাচ্চাদের মত আফছোস করেছি। এখন কথা হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত এত সব তথ্য আমি কেন আপনাদেরকে জানাচ্ছি?
আশাকরি। কিন্তু কাজ যা হবার তাতো হয়েই হেছে। বরঞ্চ কোন কিছু ভাইরাল হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে স্ক্যামিং অনেক বেশি বেড়ে যায়। আর শেষ বেলায় আমরা গিয়ে সেই স্ক্যামারদের খপ্পরে পড়ে সর্ব সান্ত হই।
আমার উপরেরে লেখা থেকে কি কিছু আন্দাজ করতে পারলেন? ক্রিপ্ট ইন্সিওরেন্স এর ভিতর এসব কেন লিখছি? হ্যা আপনি যদি আসলেই বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন তা হলে এক উদাহরনে সব বুঝে যাবার কথা। আর যদি আমার মত কিছুটা গনু মোল্লা টাইপের হয়ে থাকেন, বুঝায় না দিলে বুঝতে কষ্ট হয়, কিংবা যদি ক্রিপ্ট কারেন্সি একদমই নতুন হয়ে থাকেন। সমস্যাস নাই, এখন আমিতো কিছু বুঝি। আপনাদের কে আমি আমার সাধ্য মত বোঝানোর জন্য চেষ্টা করবো। তারপরে আমিও সব জান্তা শমসের না। এই ধরনের সিরিয়াস বিষয়াদি নিয়ে অনেক গবেষণা করার পরেও বোঝার গড়মিল থেকে যায়। তাই চেষ্টা করবেন কোথাও ভুল পাবার সাথে সাথে টিউমেন্ট করে ধরিয়ে দেবার। কোন সেকশন পরিবর্তন করার মত যুক্তি দেখাতে পারলে আমি সাথে সাথে পরিবর্তন করে দিব।
এবার আসুন ইন্সিওরেন্স প্লানটা কীভাবে কি হবে তা দেখে নেই।
আমি মোঃ নাইমুল ইসলাম। সিনিয়র টেকনিশিয়ান, এম ওয়াই ইউনিয়ন বিডি লিঃ, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 14 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।