কিছু কিছু ইসলামিক নাম আছে যে নাম গুলো খুবই হাস্যকর তাই না আসলেই কি এই নাম গুলো হাস্যকর কোন অর্থ বহন করে? আসুন আজ আমরা ইসলামিক কিছু নামের সঠিক অর্থ যেনে নেই

টিউন বিভাগ অন্যান্য
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অতি দয়ালু।


আজ আমি আপনাদের একটি বিষয় সম্পর্কে ইকটু অবগত করতে চাই।

আমরা আজকাল একটা বিষয় নিয়ে অনেক মজা করি তা হলো কিছু নাম। আমরা মজা করার সময়  অর্থের দিকে খেয়াল করি না। আমাদের নাম যখন আমাদের পিতা মাতা রাখেন তারাও হয়ত খেয়াল করেননি। রেখে দিয়েছেন একটি নাম সমাজ থেকে দেখে। আমরা অনেকেই জানিনা আমাদের নামের সঠিক অর্থ কি।

কিছু কিছু নাম আছে (মোখলেস, মফিজ, আবুল,  কুদ্দুস, মমিন, আব্দুল)  এই নাম গুলো খুবই হাস্যকর তাই না। আসলেই কি  এই নাম গুলো হাস্যকর কোন অর্থ বহন করে কি? এই নামগুলো দেখলে বা শুনলে যেন মুখে উপহাসের  হাসি চলে আসে। তাছাড়া ব্যাঙ্গ করেও বন্ধুদের এই নামে আমরা ডেকে থাকি। সম্বোধন করে থাকি এই বলে যে, “তুই একটা মফিজ, তুই মখলেস, তুই একটা আবুল, কুদ্দুসের মা, কুদ্দুসের বাপ ইত্যাদি ইত্যাদি”। আর আমরা এটা করে থাকি হাসি তামাসায়। তাই একটু দেখে নেই এই নামের অর্থ গুলো কি।

  • মোখলেস: “নামটি আমার মোখলেস” বাক্যটি খুবই পরিচিত পরিচিত লাগছে, তাই না। হ্যাঁ। খুবই হাস্যকর হাস্যকর মনে হচ্ছে তাই না।  টিভি-রেডিওতে ‘প্রাণ  ম্যাঙ্গো ক্যান্ডির কল্যাণে’ এই নামটিকে ফান হিসেবেই দেখা হয়। এমনকি যাদের নাম মোখলেস, তারাও এই নাম নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েন। আমরা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছি, এই নামটির অর্থ কী? মোখলেস নামটি আরবি ‘এখলাস’ শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ, একনিষ্ঠভাব এবাদত করা। আল্লাহর নিকট ইখলাস ছাড়া কোনো আমলই গ্রহণযোগ্য নয়। আর সেই নামকেই আমরা ফান বানিয়েছি?
  • মফিজ: এই নামটি আমরা বাঙ্গাত্তক ভাবে ব্যবহার করি। কিন্তু কি এই নামের অর্থ? এটি একটি আরবি নাম, যার অর্থ সফলকাম হওয়া। সাধারণত পরকালের সফলতা বুঝাতেই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আমরা কে না চাই পরকালে সফল হতে? ‘ম্যাজিক টুথ পাওডারের কল্যাণেই’ আমরা এই নাম নিয়ে ঠাট্টাা করে থাকি। পরকালের সফলতা নিয়ে যদি ঠাট্টা করি, তবে কি আসলেই আমরা পরকালে সফল হতে পারবো?
  • আব্দুল্লাহ : আমরা জানি কি? আব্দুল্লাহ  মানে আল্লাহর বান্দা বা আল্লাহর দাস। একই ভাবে, আব্দুল আলিম যার অর্থ ''সর্বজ্ঞ, যিনি সবকিছু জানেন'' তাঁর বান্দা বা গোলাম। আল্লাহর গুন বাচক নামের আগে আব্দুল লাগিয়ে মুসলিমরা নাম রাখেন। আবিধানিক অর্থে আমাদের ভাষায় কাজের লোক বা দাস দাসী বা গোলাম অর্থে ''আব্দুল'' শব্দটি ব্যবহৃত হয় না। নামকরণের ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই না জেনেই এমনিই এই নাম রাখি। এখন আমরা যদি এই ''আব্দুল'' নামকে খারাপ ও ঠাট্টা হিসেবে ব্যবহার করি বিষয়টা কত জঘন্য পর্যায়ে যায় আমরা কি এতটুকু চিন্তা করেছি? অনেকের নামের সাথে আব্দুল না থাকলেও আমরা গালি দিচ্ছি বা হাসি তামাশা করছি আব্দুল আব্দুল করে অথচ আমরা প্রত্যেকেই একেক জন ''আব্দুল''। নামের সাথে আব্দুল না থাকলেও তো আমরা সকলেই একেকজন ''আব্দুল''! তো গালি গালাজ ঠাট্টা তো নিজেকেই করছি আমরা! আপনি প্রমান করতে পারবেন যে আপনি আব্দুল নন যদি না আপনি নাস্তিক না হন? স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন যে আমরা যেন তাঁর সম্পর্কে বলি তিনি ''আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু'' অর্থাত আল্লাহর বান্দা ও রাসুল! কালেমায় তো আমরা এটাই বলি তা ই না?
  •  কুদ্দুস: সর্বাধিক হাসি ঠাট্টা  করা হয় এই নামটি নিয়ে। অথচ এটি আল্লাহর একটি গুনবাচক নাম। যার অর্থ ‘মহাপবিত্র’। কেউ যদি কাউকে শুধু কুদ্দুস বলে, তবে তার পাপ হবে। কারণ এটি আল্লাহর সিফাতী নাম। বলতে হবে আব্দুল কুদ্দুস। চিন্তা করে দেখুন, আমরা আল্লাহর নাম নিয়েও রসিকতা করছি। আমাদের ঈমানের অবস্থা কেমন?
  • মমিন: আসলে এর শুদ্ধ উচ্চারণ হবে মুমিন। একজন পূর্ণাঙ্গ ঈমানদারকেই মুমিন বলে। কিন্তু দেখুন, ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে “কস কি মমিন” বলে নামটিকে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। হায়রে মানুষ মুমিন হতে পার নাই তাই এই নাম নিয়ে করছ ঠাট্টা। .
  •  আবুল: এই নাম নিয়ে সবচেয়ে বেশি হাসি ঠাট্টা  করা হয়। আমরা কি এই নামের মাহাত্ম্য জানি? আমাদের নবীর (স.) এর উপনাম আবুল কাসেম। যার অর্থ হল “কাশেমের পিতা” ভাবুন, কি নিয়ে ফাজলামি করছি।  অতএব আমাদের প্রত্যেকের পিতাই একেকজন আবুল। আমাদের নামের আগে আবুল যোগ করলেই আমাদের বাবার নাম হয়। এখন গালি বা হাসি ঠাট্টা কি নিজের পিতাকে নিয়ে করব আমরা?  উপরেই উল্লেখ করেছি স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে ডাকা হত ''আবুল কাশেম''।
    এর পরেও কি আপনি ''আবুল'' শব্দটি ঠাট্টার জন্য ব্যবহার করবেন?

আল কোরআন এ উল্লেখ আছে- “মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। ”

[সূরা আল হুজরাত - Surah Al-Hujurat (মদীনায় অবতীর্ণ) -আয়াতঃ১১] 

আজ থেকে তো নামগুলোর সঠিক অর্থ জানলাম। আল্লাহ  আমাদের এসকল ছোট ছোট পাপ থেকে হেফাজত করুক। আমিন

বিঃ দ্রঃ তথ্য সূত্র সংগৃহীত। তাই এই লেখাই মিল পাওয়াটা স্বাভাবিক।

Level 1

আমি Masum Billa। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 56 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস