যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও দ্রুত যাতায়াতের জন্য অনেকে বিমানকে পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু তারপরও নদী বা সমুদ্র ভ্রমণ কিংবা উপকূলবর্তী দ্বীপ ভ্রমণের জন্য অনেকে এখনও জাহাজকে পছন্দ করে থাকেন। টাইটানিকের মতো বিলাসবহুল প্রমোদতরী আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়ার পরও ভ্রমণপিপাসু মানুষদেরকে জাহাজ ভ্রমণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়নি।
টাইটানিক জাহাজের নানা ভুলত্রটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন প্রমোদতরীগুলোতে সুরক্ষার সবধরনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও নীল আকাশের মিতালি উপভোগ করার আকর্ষণীয় ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের বিলাশ বহুলতার বাবস্থা রয়েছে। বিসসের বিভিন্ন জায়গার পর্যটক মুখিয়ে থাকে এসব প্রমদ তরিতে ভ্রমন করার জন্য।
বিলাসবহুল শীর্ষ পাঁচটি প্রমোদতরীর বিশালত্ব ও তার সুযোগ-সুবিধার কথা এবার তাহলে জেনে নিই।
1. ওয়েসিস অফ দ্য সিজ (Oasis of the Seas)
রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের এক অভিজাত জাহাজ ‘ওয়েসিস অফ দ্য সিজ’, যার অর্থ সমুদ্রের বুকে একখানি মরুদ্যান। আটলান্টিক সাগর পরিভ্রমণের উদ্দেশ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে জাহাজটি নির্মাণ করেছে এসটিএক্স কোম্পানি। ৩৬১.৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৭২ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন জাহাজটির টনেজ ২, ২৫, ২৮২। ২০০৭ সালের ১২ নভেম্বর জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর জাহাজটি তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ঘণ্টায় জাহাজটির গতিবেগ ২২.৬ নটিকেল মাইল। জাহাজটি একসাথে ৫, ৪০০ যাত্রী পরিবহনে সক্ষম। বিশাল আকৃতির এই বিলাসবহুল জাহাজে রয়েছে আধুনিক সব ব্যবস্থা। বিনোদনের জন্য এতে আইস স্কেটিং, বাস্কেটবল কোর্ট, পুল খেলার ব্যবস্থা, ডিসকো, ক্যাসিনো, থ্রিডি মুভি থিয়েটারসহ বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে রয়েছে নানা রকম মুখরোচক খাবারের ব্যবস্থা। এছাড়াও রয়েছে আধুনিকতম সেলুন ও ম্যাসেজ পার্লার। রাতের বেলায় চলে মিউজিক্যাল নানা প্রোগ্রাম।
রয়েল ক্যারেবিয়ান ক্রুজ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘অ্যালুর অব দ্য সিস’ বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ। জাহাজটি দৈর্ঘ্যে ৩৬২ মিটার এবং উচ্চতায় ৭২ মিটার। এর টনেজ ২, ২৫, ২৮২। বিলাসবহুল এই জাহাজটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১২০ কোটি ডলার। এই জাহাজের ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ৬, ৭৮০ জন। ২০ নভেম্বর, ২০০৯ সালে জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। জাহাজটির গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২.৬ নটিকেল মাইল। বিলাসবহুল এ ক্রুজ পর্যটকদেরকে মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলো এবং ক্যারিবীয় বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখানোর ব্যবস্থা করে। কাঠ ও কাঁচের আধুনিক সব নকশা ও স্থাপত্যশৈলীতে সাজানো হয়েছে প্রমোদতরীটি। বর্তমান যুগের আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান ক্রুজটিতে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাহাজ এটি। ২০০২ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০০৪ সালে জাহাজটি তার প্রথম আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। কুইনার্ড কোম্পানি এই জাহাজটির নির্মাতা। জাহাজটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩৪৫ মিটার এবং এর উচ্চতা প্রায় ৭২ মিটার। এর মোট টনেজ ১, ৪৮, ৫২৮। দারুণ দ্রুতগতিতে চলাচল করতে সক্ষম এই জাহাজ। ঘণ্টায় প্রায় ৩০ নটিকেল মাইল গতিতে সাগর অতিক্রম করতে পারে ক্রুজটি। একসাথে সর্বোচ্চ ২, ৬২০ জন ভ্রমণপিপাসু মানুষ জাহাজটিতে ভ্রমণ করতে পারবেন। জাহাজটিতে ১০ ধরনের কেবিনসহ মোট কেবিনের সংখ্যা ১, ৩১০টি। ট্রান্স আটলান্টিক ক্রসিং ছাড়াও গোটা বিশ্বের ভ্রমণের জন্য জাহাজটির সুখ্যাতি রয়েছে। জাহাজটিতে রয়েছে বিস্তৃত ডাইনিং হল, বলরুম, থিয়েটার, সুইমিং পুল, আন্তর্জাতিক মানের রেস্টুরেন্ট, ক্যাসিনো ও অত্যাধুনিক কেবিন। সবকিছুতেই যেন বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেলের ব্যবস্থা বিদ্যমান ক্রুজটিতে।
আমি মার্স টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।