পহেলা এপ্রিল বিশ্বব্যাপী পালিত হয় April Fools’ Day; অনেক অনেক বছর ধরেই এই Prank Day চলে আসছে… কিন্তু কীভাবে কেন শুরু হয়েছিল এ প্রথাটি? ঠগবাজদের এই পৃথিবীতে, আলাদা করে একটা দিন ঠকানোর জন্য কেন?
আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। তারপরেই ১লা এপ্রিল। এই দিনটি সবাইকে বোকা বানিয়ে মজা করার দিন। কিন্তু কেমন করে মজা করবেন? এটাই ভাবছেন, তাই তো? আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকে আমি হাজির।
তবে যারা পড়তে ভালবাসেন না তারা ভিডিও দেখেনিন
১ লা এপ্রিল। ভালো করে বললে এপ্রিল ফুল। আমাদের দেশে এই দিনটা বোকা বানানোর দিন। ঠকানোর দিন। অনাবিল একটু হাসির জন্য প্রিয়জনকে বোকা বানানো। আপাতদৃষ্টিতে কিংবা খুব গভীরভাবে খতিয়ে দেখলেও এই এপ্রিল ফুলে কোনও খারাপ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বরং, ভালোই লাগে। রোজকার জীবনে সারাদিন চাপের মাঝে, প্রিয়জনের থেকে একটু ঠকতে ভালো লাগবে না? তার হাসিটাতেই তো আমার প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। এখন ওয়েবসাইটের যুগে এপ্রিল ফুল আরও একটা মাত্রা এনে দিয়েছে। এখন ওয়েবসাইটে নকল খবর দিয়ে মানুষ ঠকানো হয়। খবরের নিচে লেখাও থাকে, এটা শুধুই একটু মজা করার জন্য। তাতে পাঠকরাও মজা পান। যারা এমন খবর দেন, তাঁরাও একটু মজা পান।
তবে, নানান সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্য থেকে পালন করা হলেও এপ্রিল মাসের প্রথম দিন বা বছরের এ সময়টিকে বিশেষভাবে উদযাপনের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। আধুনিক বিশ্বে ‘এপ্রিল ফুল’ পালন যেমন সব দেশে একইভাবে হয় না, তেমনি এই উত্সবের উত্স বা ইতিহাস নিয়েও গবেষক-লেখকদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।
কোনো একটি সংস্কৃতির একটি নির্দিষ্ট উত্সব বা একক রীতি থেকে আধুনিক ‘এপ্রিল ফুল’ শুরু হয়েছিল বলে মনে করেন না অনেক ইতিহাস গবেষকই। তবে, এপ্রিল ফুল কীভাবে শুরু হয়েছিল? বলছি -
প্রখ্যাত সাহিত্যিক জিওফ্রে চসারের ‘ক্যান্টারবারি টেলস’ প্রকাশিত হয় ১৩৯২ সালে। এতে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ডের সঙ্গে অ্যান অব বোহেমিয়ার বাগদানের বার্ষিকীর দিনটি বোঝাতে চসার একটি প্রতীকী বাক্য লেখেন, যেখানে দিনটিকে ‘মার্চের ৩২ তারিখ’ বা এপ্রিলের প্রথম দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই কাহিনিতে ওই দিন এক ধূর্ত শেয়ালের একটি মোরগকে বোকা বানানোর গল্প রয়েছে। এই বোকা বানানোর সঙ্গেই এপ্রিলের ১ তারিখ বা এপ্রিল ফুলের কাহিনী জড়িয়ে গেছে। (তবে আধুনিক গবেষকেরা বলছেন আসলে পাণ্ডুলিপির ভুলের কারণেই এটা এমন হয়েছে। আসলে বাক্যটি হবে ‘এপ্রিল শুরুর ৩২ দিন পর’ বা ২ মে। )
পরবর্তী সময় ফরাসি, ফ্লেমিশ এবং ব্রিটিশ কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় এপ্রিল ফুলের কথা উঠে আসে। মধ্যযুগের ইউরোপে বিভিন্ন দেশে এই উত্সব নানা স্থানে নানা রীতিতে পালিত হতো। ১৬৯৮ সালের ১ লা এপ্রিল বহু মানুষকে বোকা বানিয়ে টাওয়ার অব লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ব্রিটেনে এপ্রিল ফুলের একটা বড় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। টাওয়ার অব লন্ডনের এই ঘটনার পর বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। দুই বছর পর নতুন শতাব্দীর শুরুতে ১৭০০ সালের পয়লা এপ্রিল ইংল্যান্ডে মহাসমারোহে এপ্রিল ফুল উদযাপন শুরু হয় এবং তখন থেকেই দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে বলে মনে করেন অনেকে।
তবে বন্ধুরা, এপ্রিল ফুলের ইতিহাস নিয়ে এত গল্প আছে, বলতে গেলে রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে যাবে, তাই চলুন এইসব নিয়ে না ভেবে কীভাবে বোকা বানাবেন জেনেনিয়। তবে মনে রাখবেন মজা যেন মজাই হয়। মারাত্মক কিছু নয়। স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রয়োগ করবেন।
১। Family Member - দের কীভাবে বোকা বানাবেন?
সদ্য দোল গিয়েছে। একটু আধটু লাল রং বাড়িতে থাকলে শ্যাম্পুতে মিশিয়ে রাখুন। এবার কে প্রথমে স্নান করছে লক্ষ রাখুন - দেখুন লাল রংকে রক্ত মনে করে লাফিয়ে উঠছে কি না। আর উঠলে মজাটা উপভোগ করুন। তবে, স্নানের সময়ে অবশ্যই বাড়িতে থাকবেন।
২। বন্ধুরদের বোকা বানানঃ
ক্রিম বিস্কিট, হ্যাঁ ক্রিম বিস্কিট, ক্রিম বিস্কুট কিনে ক্রিমটা খেয়ে ফেলুন। এবার টুথপেস্ট দিয়ে ফের আগের মতো বানিয়ে ফেলুন। বন্ধুদের দিন উদাস মুখে। এর পর বন্ধুর মুখটি খেয়াল করুন। সম্ভব হলে Video ও করতে পারেন।
৩। সন্তানদের বোকা বানানঃ
ভোর থাকতে ঘুম থেকে উঠে আপনার সন্তনের ঘুম না-ভাঙিয়ে অন্য ঘরে শুইয়ে দিন। ঘরটা আগে থেকে খেলনা আর বেলুনে সাজিয়ে রাখুন। তারপর দেখুন মজা, এটার ভিডিও করতে ভুলেন না কিন্তু।
৪। স্ত্রীকে বোকা বানানঃ
বাজারে নানা রকম খেলনা, পোকা কিনতে পাওয়া যায়, যেমন ধরুন, Cockroach, সাপ, মাকড়শা ইত্যাদি। একেবারে আসলের মতো দেখতে। স্ত্রীর ড্রেসিং টেবলে ফেলে রাখুন। আর অপেক্ষা করুন স্ত্রীর লাফানো দেখতে।
৫। Girlfriend কে বোকা বানানঃ
বান্ধবীর মোবাইল ফোনটা নিয়ে ল্যাঙ্গুয়েজ সেটিং বদলে তেলুগু বা মালায়লম করে দিন। আর এমন ভাব করুন যে, আপনি কিছুই জানেন না। অথবা Home Screen - এর একটি Screenshoot নিয়ে, Home Screen এর সমস্ত Icon Delete করে দিয়ে, Screenshoot নেওয়া ছবিটিকে Home Screen এর Wallpaper হিসেবে Set করে দিন আর মজা নিন।
৬। Public কে বোকা বানানঃ
একটু ঝুঁকি নিতে পারলে Public টয়লেটের ‘পুরুষ’ ও ‘মহিলা’ বোর্ড দু’টো বদলে দিন। ঝুঁকি নিতে না-পারলে দরজার ‘PUSH’ চাপা দিয়ে ‘PULL’ ঝুলিয়ে দিন আর আনন্দ উপভোগ করুন।
৭। প্রতিবেশীদের বোকা বানানঃ
প্রতিবেশী অফিস থেকে ফেরার আগে তার বাড়ির মূল দরজায় নোটিস ঝুলিয়ে দিন ‘মেন অ্যাট ওয়ার্ক, প্লিজ ইউজ অ্যানাদার ডোর’। আর গাল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
৮। প্রিয় বন্ধুকে বোকা বানানঃ
‘বাড়ি বিক্রি আছে’ লিখে বন্ধুর ফোন নম্বর দিয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের পাশে সেঁটে দিন। অবশ্যই লিখবেন- ‘ফোন করুন ১ তারিখ সকাল ৬টার পরে। ’
৯। Office Colleague দের বোকা বানানঃ
সহকর্মীর কম্পিউটারের ডেস্কটপ থেকে সব আইকন লুকিয়ে রাখুন। তার আগে ডেস্কটপের স্ক্রিন শট নিয়ে সেটাকেই ওয়াল পেপার সেট করে দিন।
১০। প্রিয় বান্ধবীকে বোকা বানানঃ
বান্ধবীকে সপরিবারে নিমন্ত্রণ করুন। তারপর Mobile Switched off করে, নিজের বাড়ির দরজায় ‘হ্যাপি এপ্রিল ফুল’ লিখে কোথাও চলে যান। এবং পরের দিন ঝাড় খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
তো বন্ধুরা, কেমন লাগলো এই Idea গুলি, Comment এর মাধ্যমে জানান। তবে আরেকটি কথা আমি আরেকবার বলতে চাই যে, মজা যেন মজাই হয়। মারাত্মক কিছু নয়। স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রয়োগ করবেন। কেউ যেন আঘাত না পান।
ধন্যবাদ।
আমি Biswajit Das। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 73 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Hi, This is Biswajit. I hope, I'll give 2 TT sweet sweet tunes.
সঠিকটা জেনে পোষ্ট করুন।