ক্রিকেটের বোলারদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়; পেস বোলার আর স্পিন বোলার। স্পিন বোলিংটা রহস্যময়, আর ফাস্ট বোলিংয়ে আছে গতির বন্যতা। একজন ফাস্ট বোলারের অস্ত্র হিসেবে সুইং কিংবা লাইন-লেংথ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা ব্যাটসম্যানটিও গতির মুখোমুখি হতে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করে।
১০. ডেল স্টেইন: ১৫৬.২ কি.মি./ঘণ্টা
সময়ের সেরা ফাস্ট বোলার তার গতির সাথে লাইন-লেংথের জন্যও বিখ্যাত। ২০০০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৫.৭ কি.মি./ঘণ্টা গতির একটি রেকর্ড গড়েন তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। পরবর্তীতে ২০১০ সালে আইপিএল এ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে নিজের রেকর্ড ভেঙ্গে ১৫৬.২ কি.মি./ঘণ্টা গতির রেকর্ড গড়েন।
৯. শেইন বন্ড: ১৫৬.৪ কি.মি./ঘণ্টা
আরেকজন চমৎকার ফাস্ট বোলার, যার ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র ইনজুরির কারণে। ভিন্ন ধরনের স্টাইলের কারণেও অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন তিনি। ২০০৩ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৫৬.২ কি.মি./ঘণ্টা গতির রেকর্ডটিও করেন তিনি। ক্যারিয়ার দীর্ঘস্থায়ী না হলেও, যতদিন খেলেছেন ততদিন ব্যাটসম্যানদের ত্রাস হয়েই ছিলেন এই কিউই।
০৮. মোহাম্মদ সামি: ১৫৬.৪ কি.মি./ঘণ্টা
সামিও ছিলেন আরেক হারিয়ে যাওয়া প্রতিভা। ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্তভাবে। ওয়াসিম এবং ওয়াকারের শেষের দিকে তার ক্যারিয়ার শুরু হওয়ায় ভাবা হয়েছিল তিনি হবেন তাদের উত্তরসূরী। কিন্তু গতির সাথে লাইন-লেংথের সমন্বয় করতে না পারায় ক্যারিয়ারটা হয়ে যায় খুবই সংক্ষিপ্ত। এরই মাঝে ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৫৬.৪ কি.মি./ঘণ্টা গতির বলটি করেন সামি।
০৭. মিচেল জনসন: ১৫৬.৮ কি.মি./ঘণ্টা
ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় তিনি গতিশীল ছিলেন, তেমনটি বলা যাবে না। তবে ২০১৩ সালের অ্যাশেজে তিনি নিয়মিত ১৫০+ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদেরকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। এই সিরিজেরই চতুর্থ টেস্টে ১৫৬.৮ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে রেকর্ডটি করেন তিনি। একই সাথে সেই সময়ের অন্যতম সেরা গতিশীল বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এই অস্ট্রেলিয়ান।
০৬. ফিডেল অ্যাডওয়ার্ডস: ১৫৭.৭ কি.মি./ঘণ্টা
তার বোলিং স্টাইল কিছুটা ওয়াকার ইউনুসের মতো ছিল, কিন্তু একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে তার উচ্চতা ছিল যথেষ্ট কম। বোলার হিসেবে মোটেই ধারাবাহিক ছিলেন না তিনি, তবে গতির দিক থেকে বিবেচনা করলে ধারাবাহিক বলা চলে। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ান্ডারার্সে একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি এই কৃতিত্ব গড়েন।
০৫. অ্যান্ডি রবার্টস: ১৫৯.৫ কি.মি./ঘণ্টা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত পেস আক্রমনের অন্যতম সদস্য ছিলেন অ্যান্ডি রবার্টস। হোল্ডিং, মার্শাল, গার্নার কিংবা রবার্টস- প্রত্যেকেই গতিতে সেরা হলেও তার যুগের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান গতিশীল বলে তাকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়াকা গ্রাউন্ডে তিনি এই রেকর্ড গড়েন।
০৪. জেফ্রি থমসন: ১৬০.৬ কি.মি./ঘণ্টা
১৯৭৬ সালে যে মেশিন দিয়ে গতি পরিমাপ করা হতো, সেটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, থমসন তার যুগের সেরা গতির পেসারই ছিলেন। তার বলের এই গতি পরিমাপ করা হয়েছিল ওয়াকা গ্রাউন্ডে।
তবে থমসনের যুগের অনেক ব্যাটসম্যানদের বিশ্বাস, তিনি পরবর্তী যুগের ব্রেট লি কিংবা শোয়েব আকতারের চেয়েও বেশি গতিতে বোলিং করতেন। এমনকি জেফ্রির নিজের মনেও এই বিশ্বাসটা আছে। অনেকেরই ধারণা, ১৯৭৬ সালে কাঁধে আঘাত পাওয়ার আগে থমসন তার সেরা সময়ে ১৬২ থেকে ১৭০ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করেছেন।
০৩. শন টেইট: ১৬১.১ কি.মি./ঘণ্টা
শন টেইট; অল্প সময় ছিলেন কিন্তু পেস ছাড়েননি
খুবই অল্প সময়ের ক্যারিয়ার ছিল এই অস্ট্রেলিয়ান বোলারের। কিন্তু যতদিন খেলে গিয়েছেন, ততদিন গতির সাথে আপোষ করেননি। প্রথাগত ফাস্ট বোলারদের মতো উচ্চতা না পাওয়া সত্ত্বেও তার বোলিংয়ে পেস এবং স্কিডের সাথে সাথে লাইন-লেংথও ভালো ছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে নেপিয়ারে তিনি এই রেকর্ডটি গড়েন।
০২. ব্রেট লি: ১৬১.১ কি.মি./ঘণ্টা
শোয়েব আকতারের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান পেসার। ক্যারিয়ারের একটা সময় তিনিও অনবরত ১৫০ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে যেতেন। ২০০৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনি ১৬১.১ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করেন। ইতিহাসের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে তিনি ১০০ মাইল/ঘণ্টার রেকর্ড স্পর্শ করেন।
০১. শোয়েব আকতার: ১৬১.৩ কি.মি./ঘণ্টা
ক্রিকেটে সেঞ্চুরি সবাই করতে চায়। তবে সেটি ব্যাটিংয়ে, বোলিংয়ে নয়। বোলিংয়ে কোনো বোলার যত কম রান দিতে পারেন, ততই মঙ্গল। তবে ফাস্ট বোলাররা যদি ঘণ্টায় ১০০ মাইল গতিতে বল করতে পারেন, তাহলে সেটি বিবেচিত হয় অসামান্য অর্জন হিসাবে। এই অর্জনটি যে মোটেই সহজ কোনো বিষয় নয়, সেটি রেকর্ড দেখলেই বুঝতে পারা যায়।
ক্রিকেট ইতিহাসের অফিশিয়াল ম্যাচ বিবেচনা করলে, এই কাজটি এ পর্যন্ত কেবলমাত্র একজন বোলারই করতে পেরেছেন। তিনি হলেন শোয়েব আকতার। ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের নিক নাইটের বিপক্ষে তিনি একটি বল করেছিলেন ১৬১.৩ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে। ক্যারিয়ারের একটা সময়ে তিনি প্রতিনিয়ত ১৫০ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে বল করে যেতেন।
আমি মার্স টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।