সুখোই পাক ফা/টি ৫০টি ৫০ হচ্ছে রাশিয়ার তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথফাইটার জেট। মূলত মার্কিন এফ ২২কে প্রতিহত করার জন্য রাশিয়া এই বিমান তৈরি করেছে। এতে দুই ইঞ্জিন এবং একসিটের বিমান। সকল মিশনের জন্য উপযোগী করে এটিকে মাল্টিরোল বিমানে পরিনত করা হয়েছে। টি ৫০ রাশিয়ার প্রথম পঞ্চম প্রজন্মের বিমান। রাশিয়া বহরে থাকা সু ২৭ এবং মিগ ২৯ এর পরিবর্তে এই বিমান ব্যবহার করার কথা রয়েছে। ২০১০ সালে সর্বপ্রথম এই বিমান আকাশে উড়ে। এর সার্ভিস লাইফ ধরা হয়েছে ৩৫ বছর। ২০০২ সালে সুখোই এর পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এর ৫ বছর পর ২০০৭সালে ব্যয় কমানোর জন্য ভারতকে এই প্রজেক্টে নেওয়াহয়। যদিও আগে চীনকে আহবান করা হয়েছিল কিন্তু চীন রাশিয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে! এই বিমানে AL-41F1 নামে দুইটি ইঞ্জিন রয়েছে।
এই ইঞ্জিনটি AL 31 এর আপডেট ভার্সন। এটি থ্রিডি থ্রাষ্ট ভেক্টরিং। মূলত এর জন্য এই বিমান খুবই ম্যানুভেরাবল। এতে আফটার বার্নার রয়েছে। প্রতিটি ইঞ্জিন ১৫০ নট গতি তুলতে সক্ষম। অর্থ্যা এর সর্বোচ্চ গতিবেগ মেক ২.৩ বা ২৪৪০ কিঃমিঃ। এই ইঞ্জিনের লাইফাইম ৪ হাজার ঘন্টা। এই বিমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর স্টিলথ প্রযুুক্তি। এর বডির উপর রাডারের ওয়েব শোষনকারী পদার্থ(RAM) ব্যবহার করেছে। তবে ইঞ্জিনের নজলের উপর ব্যবহার করা হয় নি। আর এতেই বিমানের রাডার ক্রস সেকশন বেড়ে যায়। মূলত এই জায়গায় মার্কিন এফ ২২ এর সাথে বড় পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য রাশিয়ার দাবি নজলের উপর RAM. প্রয়োগ করলে শতকরা দশভাগ বেশি রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন হয়। এই বিমানে রয়েছে সুপারক্রুজ প্রযুুক্তি। এর সাহায্য আফটারবার্নারের সাহায্য ছাড়াই বিমান সুপারসনিক গতিতে ছুটতে পারে। এর ফলে বিমানের রেঞ্জবেড়ে যায়। বর্তমানে প্রায় সকল পঞ্চম প্রজন্মের বিমানে এই প্রযুুক্তি রয়েছে। আফটার বার্নার ছাড়াই প্রায় ১৭০০ কিঃমিঃ গতিবেগে যেতে সক্ষম টি ৫০। এই বিমানের ককপিটে দুইটি এলসিডি ডিসপ্লে রয়েছে। সম্পূর্ন গ্লাস ককপিট। পাইলটের জন্য রয়েছে হেলমেট মাউন্টেড ডিসপ্লে। যার সাহায্য পাইলট যেদিকে তাকাবে টার্গেটিং কম্পিউটার মিসাইলকে সেদিকে লক করাবে। ক্যানোপেতে বিশেষ আবরন ব্যবহার করা হয়েছে স্টিলথ বাড়ানোর জন্য।
পাইলটের জন্য রয়েছে অক্সিজেন জেনারেশন সিস্টেম এবং লাইফ সার্পোট সিস্টেম। অক্সিজেন জেনারেশন সিস্টেম পাইলটকে অফুরন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে। আর লাইফ সার্পোট ব্যবস্থা পাইলটকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য ৯জি পর্যন্ত ম্যানুভার করতে সক্ষমকরে। টি ৫০ এর রাডার তৈরি করা হয়েছে সু ৩৫এর উপর ভিত্তি করে। এটি AESA রাডার। যার ফলে একে জ্যাম করা বেশ কষ্টসাধ্য। এই রাডারের সাহায্যে ডাটালিংকের মাধ্যমে অন্য বিমানের সাথে তথ্য শেয়ারকরা যাবে। তাও আবার খুবই সুরক্ষিতভাবে। এতে পাইলটের কাজের পরিমান কিছুটা কম হবে। এর ডানাতেও রাডার রয়েছে। তবে এতে নতুন প্রজন্মের“ফটোনিক রাডার ” সংযুক্ত করা হবে। যা বর্তমানে প্রচলিত যে কোন রাডার থেকে অনেক এগিয়ে। বর্তমানে আমেরিকা আর রাশিয়া এই রাডার নিয়ে কাজ করছে। সার্ভিসে আসলে তা টি ৫০ এর পারফরমেন্স অনেক বাড়িয়ে দিবে। রয়েছে ইনফ্রারেড সার্চিং এবং ট্রাকিং। যা দিয়ে প্রতিপক্ষের বিমানের উৎপন্ন তাপমাত্রা দিয়ে বিমান ডিটেক্ট এবং ট্র্যাক করা হয়। এটি পেসিভ সেন্সর। অর্থ্যা একে জ্যাম করা যাবে না। সেই সাথে রয়েছে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট। রয়েছে চাফ এবং ফ্লেয়ার।
টার্গেটিং পডও রয়েছে। যা দিয়ে অত্যন্ত নিঁখুতভাবে ভূমিতে হামলা করা যাবে। মিসাইল ওয়ার্নিং রিসিভার রয়েছে যা দিয়ে প্রতিপক্ষ কোন মিসাইল নিক্ষেপ করলে পাইলটকে সর্তক করে দিবে। ইনফ্রারেড মিসাইল হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য রয়েছে “ডিরেকশনাল ইনফ্রারেড কাউন্টার মেজার”। IRSTঅস্ত্রব্যবস্থার মধ্যে বলতে গেলে সকল ধরনের অস্ত্র বহন করতে পারে। এতে দুইটি ওয়েপন বে রয়েছ। এছাড়াও ডানাতে ৬ টি হার্ডপয়েন্ট রয়েছে। মোট হার্ডপয়েন্ট ১৪টি। মোট ৪টি এয়ার টু এয়ার মিসাইল বহন করতে পারে। ভূমিতে হামলার জন্য মিসাইল এবং বোমা বহন করতে পারে। এতে ৩০ মিঃমিঃ এর ক্যানন রয়েছে। বিভিআর এবং ডাব্লিউভিআর মিসাইল বহন করতে সক্ষম। হার্ডপয়েন্ট সমূহ ওয়েপন বে এর ভিতর। প্রতি সেকেন্ডে উচ্চতায় উঠার হার ৩৩০ মিটার। রেঞ্জসর্বোচ্চ ৫৫০০ কিঃমিঃ এবং ২০ কিঃমিঃ উচ্চতায় যেতেপারবে। সর্বোচ্চ ৩ ঘন্টা আকাশে থাকবে পারবে এবং সর্বোচ্চ ৪০০ কিঃমিঃ দূরের টার্গেটকে ধ্বংস করতে পারবে। রয়েছে ডাটালিংক যা দিয়ে আশাপাশের বিমান এবং কমান্ড সেন্টারের সাথে তথ্য আদান প্রদান করা যাবে।
আমি মার্স টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।