রাইফেল এর জন্ম অনেক পুরোনো। উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে রাইফেল ব্যাপক হারে ব্যবহার শুরু হয়। তখনকার দিনে গুলি হিসাবে গোল ধাতু ব্যবহার হত আর সাথে থাকতো গানপাউডার। সময়ের পরিবর্তনে এবং প্রয়োজনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রাইফেল এর ব্যাপক উন্নতি ঘটে। দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধে সেই উন্নতি একটা চুরান্ত পর্যায়ে চলে আসে যখন জার্মানরা ইতিহাসের প্রথম এসাল্ট রাইফেল তৈরি করে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তার ব্যাপক সাফল্য দেখায়।
এর পরই পুরো পৃথীবি উঠেপরে লাগে এসাল্ট রাইফেল এর উন্নয়নের জন্য। আজকে এই মুহুর্তে শুধু রাশিয়া আর আমেরিকা না পৃথীবির অধিকাংশ দেশের রয়েছে নিজস্ব এসাল্ট রাইফেল।
AK-47: (রাশিয়া)
Avtomat Kalashnikova বা AK-47। দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক এক বছর আগে তৎকালি সোভিয়েট রাশিয়া এই অস্ত্রটি ডেভলপ করে। পরে ১৯৪৮ সালে এটি অফিশিয়ালি রাশিয়ান সেনাবাহিনি ব্যবহার শুরু করে। এটি দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় রাইফেল। এটাকে বিশ্বের প্রথম কার্যকর অটোমেটিক রাইফেল বলা হয়। AK-47 এর ডিজাইন করেন সোভিয়েত ট্যাংক কমান্ডার মিখাইল কালাশনিকভ
একে ৪৭ এর অন্যতম বৈশিষ্ট হল এর বুলেট এর মারাত্বক ভেদন ক্ষমতা, এটি ৭.৬২*৩৯ মি.মি বুলেটকে ৭১৫ মিটার/সেকেন্ডে ছুড়ে যা ৮ ইন্চি ওক কাঠের এবং ৫ ইন্চি কনন্ক্রিট দেয়াল ভেদ করতে পারে। এছাড়া এতে কষ্টমাইজ বুলেট ব্যবহার করা যায় যা আরও মারাত্বক হতে পারে। উদাহরনে ভারতের মুম্বাই হামলার সময় মুম্বাই পুলিসের এন্টি টেররিষ্ট স্কোয়াডের চীফ হেমন্ত কারেকারের বডিআর্মার ভেদ করেছিল একে ৪৭ এর কাষ্টমাইজ বুলেট। এছাড়া এতে সিঙ্গেল শট, ব্রাস্ট অব ফায়ার এবং গ্রেনেড ছুড়ার সুবিধা আছে।
মিখাইল কালাশনিকভ
একে ৪৭ ব্যবহার করার জন্য তেমন কোন আলাদা প্রশিক্ষনের প্রয়োজন হয় না। ২-১ ঘন্টার হালকা পাতলা প্রশিক্ষনেই মোটামুটি সবাই ভালভাবে একে ৪৭ চালাতে সক্ষম হয়েছে এমন রেকর্ড খুবই সহজলভ্য। বিশেষ করে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মূলত একে ৪৭ এর গুনের কাছেই মার খেয়ছে আমেরিকানরা। কারন একে ৪৭ এর সহজ প্রশিক্ষন সুবিধাতে মোটামুটি সব শ্রেনীর ভিয়েতনামিরাই আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিতে সক্ষম হয়।
নির্ভরতার দিক দিয়ে আজও একে ৪৭ এর ধারে কাছে তেমন কোন অস্ত্র নেই। এটিকে দুনিয়ার যেকোন স্থানে ব্যবহার করা যায়। তীব্র শীত, গরম, ভেজা আবহওয়া কোন কিছুই এর কাজে ঝামেলা তৈরী করতে পারেনা। যা এটাকে গেরিলাদের কাছে আইকন হিসাবে প্রতিষ্টিত করে। এটির জ্যাম হবার রেটও অন্যান্য রাইফেলের তুলনায় কম। এক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে আমেরিকান এম ১৬ প্রতি ৫০০ রাউন্ড ফায়ারে যে পরিমান জ্যাম হয় সেই পরিমান জ্যাম হতে একে ৪৭ এ ফায়ার করতে হবে ১৩৭৫ রাউন্ড
রক্ষনাবেক্ষনের ব্যাপারে ও একে ৪৭ এর আছে অতুলনীয় সুবিধা। এমনিতেই এর জ্যাম হবার রেট খুব কম তারপরেও ব্যারেলে কার্বন জমলে তা পরিস্কার করার জন্য ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টাই যথেষ্ট সময়। এবং তা মোটামুটি জানাশোনা লোক সহজেই করতে পার
বিবরণ :
ভর : ৪.৪ কেজি
এমুনিশান : ৭.৬২*৩৯ মি.মি
মাজল ভেলোসিটি : ৭১৫ মিটার/সেকেন্ডে
কার্যকরী দুরত্ব : ৪০০ মিটার / সেমি অটোমেটিক
৩০০ মিটার / অটোমেটিক
ফায়ারিং রেট : ৬০০ রাউন্ড/ মিনিট
ম্যাগাজিন: ৩০বা ৪৫ রাউন্ডের বক্স ম্যাগাজিন অথবা ৭৫ বা ১০০ রাউন্ডের ড্রাম ম্যগাজিন
আমি মার্স টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।