ইন্টারনেট যেমন আমাদের অনেকভাবে সাহায্য করে ঠিক তেমনি কিছু ক্ষেত্রে আমরা ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আমরা ক্ষতির সম্মুখীনও হতে পারে। কারণ আমরা যেসব ওয়েবসাইট ভিজিট করি তাদের বেশিরভাগ ওয়েবসাইট আমাদের থেকে আমাদের তথ্য নিয়ে নেয়।
অর্থাৎ ওয়েবসাইট আমাদের থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে বোঝার চেষ্টা করে আমরা কি পছন্দ করি আর কি অপছন্দ করি। অনেক সময় তথ্য নেয়ার কারণ এটি নাও হতে পারে কারণ হয়ত ওয়েবসাইট আপনার তথ্য নিয়ে অন্য কোন খারাপ কাজে ব্যবহার করবে। আবার অনেক সময় আমাদের ইমেইল আইডি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে গেলে অপ্রয়োজনীয় ইমেইল এসে আমাদের ইমেইল ইনবক্স ভরে থাকে। জার ফলে আমারা আমাদের প্রয়োজনীয় ইমেইল খুঁজে পাই না।
এসকল নানা করানে বিভিন্ন ইউজার নিজেদের তথ্য ওয়েবসাইটকে দিতে চান না। তারপরেও ওয়েবসাইটগুলো বিভিন্ন স্ক্রিপ্ট যেমন – জাভা ব্যবহার করে আমাদের তথ্য নিয়ে নেয়। তাই অনেক সময় এগুলো বন্ধ করে ভাল ফল পাওয়া যায়। কিন্তু আর অনেক পদ্ধতি আছে যেগুলো ব্যবহার করে ওয়েবসাইটগুলো আমাদের ডাটা নিয়ে নেয়। তাই আমরা নিজেরা হয়ত বুঝতেও পারব না, কিন্তু ওয়েবসাইট আমাদের ডাটা নিয়ে নিবে। যেটি খুবই বিরক্তি ও ভয়ের ব্যাপার।
ব্রাউজার এক্সটেনশন হলো এমন কিছু স্ক্রিপ্ট যেগুলো ব্রাউজারে ইনস্টল করা যায়। এবং এই এক্সটেনশনগুলো ইনস্টল করার মাধ্যমে ব্রাউজার থেকে বাড়তি অনেক সুবিধা পাওয়া আয়। এক্সটেনশন গুলো কম্পিউটার সফটওয়্যারের মতই। সফটওয়্যার যেমন আমারা কম্পিউটারে ইনস্টল করি বিভিন্ন কাজের জন্য।
এক্সটেনশনগুলোও একি রকম। এগুলো ইনস্টল করলে অনেক বাড়তি ফিচার পাওয়া যায়। অনেক কথা বলে ফেললাম এবার চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি ব্রাউজার এক্সটেনশন ব্যবহার করে আমরা ইন্টারনেটে একটু বেশি সিকিউর থাকতে পারি।
এই এক্সটেনশনটি মুলত মজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজার যারা ব্যবহার করেন তাদের জন্য। এটি ফায়ারফক্সকে অনেক বেশি সিকিউর বানাতে পারে। এই এক্সটেনশনটি যেকোনো ব্রাউজার বেজড হ্যাকার অ্যাটাক থেকে আপনাকে বাচাতে পারে। নোস্ক্রিপ্ট এক্সটেনশনটি প্রায় সব ধরনের স্ক্রিপ্ট ব্লক করে দেয়। ফলে ওয়েবসাইট থেকে বাড়তি কোন স্ক্রিপ্ট লোড হতে পারে না। যে কেউ চাইলেও আপনার কোন ডাটা নিতে পারবে না।
প্রাথমিক ভাবে এই এক্সটেনশনটি ইনস্টল করলে সব ওয়েবসাইটের স্ক্রিপ্টই ব্লক করে দিবে। তবে কিছু ওয়েবসাইট যেমন গুগল, ইউটিউব এগুলো হোয়াইট লিস্টেড করা আছে। তবে আপনি যদি অন্য ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে চান তবে আপনাকে এক এক করে ঐ ওয়েবসাইটগুলোকে এক্সটেনশনের হোয়াইট লিস্টে অ্যাড করতে হবে।
প্রথম এই লিঙ্কে গিয়ে নিচের “Add to Firefox” বাটনে ক্লিক করলেই এক্সটেনশনটি আপনার ফায়ারফক্স ব্রাউজারে অ্যাড হয়ে যাবে। তবে একবার ব্রাউজারকে রিস্টার্ট দিতে হবে।
ইনস্টল হয়ে গেলে উপরে ডান পাশে এক্সটেনশনটির আইকন দেখতে পাবেন। আইকনের উপর রাইট ক্লিক করে “Options” নামের অপশনটিতে ক্লিক করলেই নিচের মত উইন্ডোজ ওপেন হবে। সেখান থেকে “Whitelist” ট্যাবে যেতে হবে। এখানে আপনি যেকোনো ওয়েবসাইটের ঠিকানা টাইপ করে পাশের “Allow” বাটনটিতে ক্লিক করলেই ওয়েবসাইট হোয়াইট লিস্টে অ্যাড হয়ে যাবে।
নোস্ক্রিপ্ট এক্সটেনশনটি ব্যবহার করে আপনি ইন্টারনেটের অনেক সমস্যা থেকে বেচে যেতে পারেন। এবং এই এক্সটেনশনটি ব্যবহার করাও খুব সহজ। আবার যারা লিমিটেড ইন্টারনেট অর্থাৎ মডেম ব্যবহার করে ইন্টারনেট ইউজ করেন তাদের জন্য এই এক্সটেনশনটি অনেক কাজ করবে।
কারণ জাভা স্ক্রিপ্ট ব্লক করার কারণে আপনার ইন্টারনেটের খরচ প্রায় ৩০-৪০% কমে যাবে। কিন্তু নোস্ক্রিপ্ট এক্সটেনশন ব্যবহার করলে কিছু সমস্যাও আছে। যেমন প্রথম প্রথম আপনার পছন্দের সব ওয়েবসাইটকে এই এক্সটেনশনের হোয়াইট লিস্টে আনতে অনেক সময় লাগবে।
এই এক্সটেনশনটি প্রায় সব ব্রাউজারের জন্য আছে। তাই আপনি যেই ব্রাউজারই ব্যবহার করেন না কেনো গোস্টারি(Ghostery) এক্সটেনশনটির সুবিধা আপনি নিতে পারবেন। এই এক্সটেনশনটি যদি আপনার ব্রাউজারে ইনস্টল করা থাকে তাহলে আপনি যখনই কোন ওয়েবসাইটে ঢুকবেন তখন গোস্টারি এক্সটেনশনটি দেখবে ওয়েবসাইটটি কি কি বিষয়ে আমাদের থেকে তথ্য নিতে চাচ্ছে। এবং এক্সটেনশনটি আমাদের তা দেখাবে। ফলে আমরা জানতে পারব ওয়েবসাইটটি আমাদের থেকে কোন ধরনের ডাটা নিতে চাচ্ছিল।
প্রথমে এই লিঙ্ক থেকে আপনার ব্রাউজার অনুযায়ী এক্সটেনশনটি ইনস্টল করে নিন।
ইনস্টল হয়ে গেলে ব্রাউজারের ডান পাশে এর আইকন দেখতে পাবেন। সেটির উপর ক্লিক করে যে ওয়েবসাইটে আছেন সেটি স্ক্যান করলেই ওয়েবসাইটটি কি কি ট্র্যাকার ব্যবহার করছে তা দেখতে পাবেন। যেমন আমি একটি ওয়েবসাইট স্ক্যান করেছি।
এটি যদিও এক্সটেনশন না তবে এই সফটওয়্যারটি আপনাকে ইন্টারনেটে সেফ থাকতে অনেক সাহায্য করবে। আপনি যখন এই সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন তখন এই সফটওয়্যারটি আপনার সব ডাটা একটি সিকিউর টানেলের ভিতর দিয়ে ওয়েবসাইটকে দিবে ফলে ওয়েবসাইট জানতে পারবে না আপনি আসলে কথায় আছেন। আর ওয়েবসাইট তাহলে আপনার কোন ডাটাও নিতে পারবে না।
ডিসকানেক্ট সফটওয়্যারটি আপনি আইফোন থেকে শুরু করে আন্ড্রয়েড ফোন কিংবা উইন্ডোজ সব কিছুতেই চালাতে পারবেন। এবং এই অ্যাপটির একটি ফ্রী ভার্সন এবং প্রিমিয়াম ভার্সন আছে। তাই আপনার যদি মনে হয় যে এই সফটওয়্যারটি কেনা উচিত তাহলে কিনে নিতে পারেন। কারণ তাহলে আপনি অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
অন্যান্য ভিপিএন সফটওয়্যারের মতো এই সফটওয়্যার আপনার কোন ডাটা নিজেদের ব্যবহারের জন্য রাখে না। তাই আপনি ইন্টারনেটে পুরো সেফ থাকবেন। সবচেয়ে বড় কথা এই সফটওয়ারটির ব্যবহার করা অনেক বেশি সহজ। ডিসকানেক্ট সফটওয়্যারটিকে কাজ করার জন্য সবসময় অন করে রাখতে হয়। যা একটি বিশাল ঝামেলা।
সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
পুলিশ-ম্যান এক্সটেনশনটি আপনাকে আরো একধাপ বেশি সিকিউরিটি দেয় ইন্টারনেটে। কিন্তু আপনি যদি কম্পিউটার বেবহারে অনেক বেশি পারদর্শী না হয়ে থাকেন তাহলে এই এক্সটেনশনটি ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ এই এক্সটেনশনটি ব্যবহার করতে আপনার বিশেষ কিছু স্কিল এর দরকার পরবে। পুলিশ-ম্যান এক্সটেনশনটি রুল অনুযায়ী কাজ করে। অর্থাৎ কন কাজটি হলে কোন ওয়েবসাইট কোন স্ক্রিপ্ট এর অ্যাক্সেস পাবে তা আপনাকে ঠিক করে দিতে হবে। এবং ব্রাউজার সেই অনুযায়ী কাজ করবে।
এক্সটেনশনটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
আজ এ পর্যন্তই। টিউনটি আপনাদের কেমন লাগলো? টিউমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। যদি এই টিউনে কোন বিষয় বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে টিউমেন্ট এর মাধ্যমে জানালে সাধ্যমত সাহায্য করার চেষ্টা করবো। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।
আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অনেক ভাল মানের টিউন করেছেন।