হঠাৎ কোনো বিপর্যয়ের মধ্যে পড়লে কী করে উঠা দরকার তাই নিয়ে আমার এই টিউন “বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা”
ভূমিকাঃ- আমাদের সামনে প্রায়ই নিম্নরূপ বিপর্যয় আসে,কিন্তু আমারা ভেবে উঠতে পারিনা ততক্ষনাৎ কি করে উঠা দরকার।তাই নিম্নরূপ বিপর্যয়ের সময় কি করে উঠা উচিৎ তার একটা তালিকা দেওয়া হলো।
বিপর্যয়ঃ- ভূমিকম্পঃ-
কি করবেনঃ-i) ইঞ্জিনিয়ার ডেকে আপনার ঘরটি পরীক্ষা করেনিন।নড়বরে অংশ গুলি আগে থেকে ঠিক করেনিন।ii)Duck Cover and Hold on ভূমিকম্প থেকে বাঁচার ভালো উপায় অর্থাৎ মাটিতে শুয়ে পরে কোনো টেবিল বা কোনো জিনিসের তলায় ঢুকে পরে,হাঁটুর মধ্যে মাথা গুঁজে বসে থাকুন।iii) ভূমিকম্পের সময় বড়ো বাড়ী বা গাছপালা থেকে দূরে থাকুন।
কি করবেন নাঃ-i)ঘরের মধ্যে কোনো ভারী জিনিস উপরে রাখবেন না।ii) ভূমিকম্পের সময় কোনো ইলেক্ট্রিক তার বা পাঁচিলের কাছে দাঁড়াবেন না।iii)ভাঙ্গাচোরা বাড়ীতে ঢুকবেন না।
বন্যাঃ-কি করবেনঃ-i)আগে থেকে উঁচুস্থান গুলি মনে মনে চিহ্নিত রাখুন যাতে প্রয়োজনে আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে।ii)দরকার হলে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হলে জলের গভীরতা বোঝার জন্য সঙ্গে একটা লাঠি রাখা প্রয়োজন।iii)যে সকল অঞ্চল দিয়ে বিদ্যুতের তার গিয়েছে সেই সকল স্থান এড়িয়ে চলুন।iv)জল বাহিত রোগের প্রতিষেধক ঔষুধ সঙ্গে রাখুন।
কি করবেন নাঃ-i)বন্যার মধ্য দিয়ে হাঁটা উচিৎ নয়।
আগুনঃ-কি করবেনঃ-i)বাড়ী এবং বাড়ীর আসে পাশের জায়গাকে যথা সম্ভব অগ্নি নিরোধক রূপে গড়ে তুলুন।ii)ইলেক্ট্রিক লাইনে যতটা লোড নেওয়া সম্ভব ততটায় তড়িৎশক্তি খরচ করুন।iii)আগুন লাগলে বাড়ী থেকে বেরোবার একটি বিকল্প পথ ভেবে রাখুন.iv)পাড়ায় নিয়মিত ফায়ার ড্রিল করুন।
কি করবেন নাঃ-i)আগুন লাগলে কোনো আবদ্ধ স্থানে বসে থাকার চেষ্টা করবেন না।ii)গায়ে আগুন লাগলে ছুটোছুটি না করে মাটিতে গড়াগড়ি দিন।iii) ঘটনাস্থল কে নিরাপদ ঘোষনা করার আগে সেই স্থানে ঢুকবেন না।
ঘূর্ণিঝড়ঃ-কি করবেনঃ-i)বছরের যে সময় টা ঘূর্ণিঝড় আসে তার আগে থেকে জানলা,দরজা মেরামত করেনিন।ii)বাড়ীর আশে পাশে বড়ো গাছ বা ভাঙ্গাচোরা অংশ থাকলে তা সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করুন।iii)জল,খাদ্য,রেডিও,ব্যাটারি,মোবাইল কিছু ওষুধপত্র সব সময় প্রস্তুত রাখুন।
কি করবেন নাঃ-i)ঝড়ের সময় বাইরে বেরোবেন না।ii)দূর্বল পাঁচিল বা বড়ো গাছের কাছে আশ্রয় নেবেন না।iii)ধারালো টিনের দ্রব্য যাতে ঝড়ের সময় ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।
সন্ত্রাসঃ-কি করবেনঃ-i)কোনো সন্দেহ জনক ক্রিয়াকলাপ চোখে পড়লে সন্ত্রাস দমন বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।ii)বাড়ী ভাঁড়া দেওয়ার সময় যাকে ভাঁড়া দিচ্ছেন তার সমস্ত পরিচয় নেওয়া আবশ্যক।কারো মারফৎ খবর পেলে ভালো হয়।iii)পাড়াপরশি সম্পর্কে যথেষ্ঠ খবরাখবর রাখা দরকার।iv)যেখানে বিস্ফোরন ঘটেছে বা সন্ত্রাস মূলক কার্য কলাপ ঘটছে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি সরে যাওয়া উচিৎ।
রাষায়নিক বিপর্যয়ঃ-কি করবেনঃ-i)সাইরেন বা ওই ধরনের ব্যবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিহাল থাকা দরকার।সেই সঙ্গে রেডিও বা টিভির খবর শোনা দরকার।ii)ঘর ছাড়ার নির্দেশ দিলে তা অবিলম্বে পালন করতে হবে।বাড়ীর বাইরে থাকলে ঘটনাস্থল থেকে যথাসম্ভব দূরে সরে যেতে হবে।iii)ঘরের সমস্ত জানলা,দরজা বন্ধ রাখতে হবে।সম্ভব হলে ফাঁকফোকোর প্লাস্টিক বা ট্যাপের সাহায্যে বুজিয়ে দিতে হবে।iv)যে ঘরে বেশি জানলা বা ঘুলঘুলি বা দরজা নেই সেখানে আশ্রয় নেওয়া ভালো। v)সমস্ত AC এবং ঐ ধরনের মেশিন যা বাইরী হাওয়াকে ভিতরে আনে তা বন্ধ করতে হবে। vi)নিজের শরীর আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে।
পারমানবিক বিপর্যয়ঃ-কি করবেনঃ-i) পারমানবিক আক্রমন ঘটলে ঘনআচ্ছাদিত জায়গা যা বিকিরনকে শুষে নিতে পারে সেখানে আশ্রয় নেওয়া দরকার।ii) আশ্রয় স্থলটি ঘটনাস্থল থেকে যতদূরে হয় এবং তার ছাদ ও দেওয়াল যত মোটা হয় ততই ভালো।iii)বিকিরন প্রক্রিয়ার নাগাল বহূদূর পযর্ন্ত বিস্তৃত তাই ঘটনাস্থল থেকে বেশী দূরে থকলেও আশ্রয় হীন অবস্থায় না থাকা ভালো।iv)নিরাপদ সিগন্যাল না পাওয়া পযর্ন্ত ঘর থেকে বাইরে বেরোনো উচিৎ নয়।
উপসংহারঃ-এই সমস্ত বিপর্যয়ের সময় যদি আমরা আমাদের উপস্থিত বুদ্ধি কে কাজে লাগিয়ে উপরের নিয়ম গুলো পালন করতে পারি তাহলে হইতো পুরোটা না হলেও কিছুটা ঐ সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
ভালো খারাপ সমস্ত রকম আপনাদের মন্তব্য পাঠান এবং আমাকে উৎসাহিত করুন। কোনো ভুল থাকলে ক্ষমা করবেন।
আমি ওয়াক্তিয়ার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 113 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মা গো মা,ভয় লাগে গো মা।