আপনি কি অ্যাভেঞ্জার সুপারহিরো -দের ভক্ত? সেক্ষেত্রে ‘অ্যাভেঞ্জারস : ইনফিনিটি ওয়ার ’ ওয়াচলিস্ট -এর একেবারে প্রথমে থাকতে বাধ্য৷ কেন? অনেকেই বলছেন, এই ছবির কোনও প্লট নেই৷ দু’ঘণ্টা ২৯ মিনিটের অ্যাকশন -প্যাকড ছবির গোটাটা না -দেখে শুধুমাত্র শেষটুকু দেখে নিলেই নাকি হল৷ কিন্ত্ত সেই কথাটা বোধহয় সত্যি নয়৷ কারণ নিঃসন্দেহে ‘ইনফিনিটি ওয়ার ’-এর প্লট রয়েছে৷ এবং সেই প্লট -টি রীতিমতো লম্বা৷ এখনও পর্যন্ত অ্যাভেঞ্জার -দের নিয়ে ছবির সংখ্যা ১৯৷ পূর্ববর্তী ১৮টি ছবিকেই সেক্ষেত্রে এই ‘ইনফিনিটি ওয়ার ’-এর প্লট হিসেবে ধরে নিতে হবে৷ গড়পরতা দু’ঘণ্টা করে ধরলে ৩৬ ঘণ্টার প্লট জানা থাকলে এই দু’ঘণ্টা ২৯ মিনিট কোনও ভাবেই ‘প্লট -হীন ’ নয়, বরং এটি একটি লম্বা যাত্রাপথের অন্তবিন্দু৷ তাই অ্যাভেঞ্জার -ভক্তদের এই ছবি দেখতেই হবে৷
ছবির গল্পে না ঢুকে কয়েকটি কথা বলে নেওয়া দরকার৷ সব মিলিয়ে প্রায় ৭৬টি চরিত্র নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবিটি৷ থর, হাল্ক, ব্ল্যাক উইডো, ক্যাপ্টেন আমেরিকার মতো নিয়মিত অ্যাভেঞ্জার -রা ছাড়াও ‘ব্ল্যাক প্যান্থার ’-এর সব চরিত্র এবং ‘গার্ডিয়ান অফ দ্য গ্যালাক্সি ’র চরিত্ররা৷ এই গল্পে নতুন করেও বেশ কিছু চরিত্রের সংযোজন করা হয়েছে মার্ভেলের তরফে৷ যে কোনও মুহূর্তে সিনেমায় তিনটি থেকে চারটি প্লট -লাইন সমান্তরাল গতিতে চলতে থাকে৷ যার সব ক’টির সূত্র শেষ পর্যন্ত সমাপতিত হয় ছবির শেষ ১৫ মিনিটে এসে৷
তবে অ্যাভেঞ্জার -দের নামে ছবির নামকরণ হলেও, আসলে এই ছবি থানোস -এর৷ মার্ভেলের সুপারভিলেন থানোস৷ ‘পিওর ক্যায়োস ’ বলে যদি কিছু কল্পনা করা যায়, তাহলে একমাত্র তার সঙ্গেই তুলনা হতে পারে এই খলনায়কের৷ যে একই সঙ্গে ভয়ঙ্কর, শান্ত একজন সেনাপতি৷ সেনাপতি, ধর্মীয় উন্মাদনায় উন্মত্ত থানোস চায়, ব্রহ্মাণ্ডে ভারসাম্য আনতে৷ যার পথ একটাই, ব্রহ্মাণ্ডের অর্ধেক জীবজগতকে মুছে ফেলা৷ আর এই পথে বাধা একটাই : ‘অ্যাভেঞ্জার ’রা৷
মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের পূর্ববর্তী সমস্ত ছবির খলনায়কের তুলনায় থানোস নিঃসন্দেহে অনেকটাই এগিয়ে বীভত্সতা এবং ত্রাসের নিরিখে৷ যার নিঃসন্দেহে প্রয়োজন ছিল৷ কারণ এটিই যে সিরিজের এক অর্থে শেষ ছবি৷ অ্যাভেঞ্জার -দের পূর্ববর্তী ছবিগুলোর দিকে যদি আমরা তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো, প্রতিটি ছবিই প্রত্যাশার থেকে বেশি কিছু দিয়েছি দর্শককে৷ ‘ভালো ছবি ’ হয়ে থেমে যায়নি৷ সেই বৈশিষ্ট্য ‘ইনফিনিটি ওয়ার ’-এও রয়েছে৷ কিন্ত্ত পূর্ববর্তী প্রতিটি ছবিই যখন সেই সেই গল্পের সুপারহিরোর সত্ত্বাগুলিকে নিক্তিতে মেপে দর্শকের সামনে হাজির করেছিল, এক্ষেত্রে সেই বুনন অনুপস্থিত৷ এ যেন পরিণতির দিকে দ্রুত গতিতে ছোটা৷ কিন্ত্ত এর আগে যারা, সুপারহিরো সত্ত্বার যাবতীয় সংজ্ঞা তৈরি করে দিয়েছে, তাদের থেকে ‘শেষ পর্ব’-এ এসেও সেই প্রত্যাশার পুরোপুরি পূরণ হবে, এমন দাবি করাটা হয়তো বাড়াবাড়ি৷
বর্তমান সময়ে এসে সুপারহিরো সিনেমার গড়ন কেমন হয়েছে? কতটা নাটকীয় হয়ে রয়েছে আর এই ঘরানা? কোনও গল্পে তাদের মৃত্যুও কি সেই নিশ্চয়তা দিতে পারে, যে তারা আবার ফিরে আসবে না? সেই কারণেই ক্রমশ আরও বিস্ময়কর এবং আরও ‘এনগেজিং ’ হয়ে উঠলেও, সুপারহিরো ছবি কি হারিয়ে ফেলছে তার নাটকীয়তা? ‘ইনফিনিটি ওয়ার ’ও যেন সেই বর্মের বাইরে বেরতে পারল না৷ বিস্মিত করে দিল আমাদের৷ কিন্ত্ত আঘাত দিতে পারল না৷ বীভত্স যন্ত্রনা দিতে পারল না৷ কোতয়ালের খড়্গ নেড স্টার্কের গলার কাছাকাছি নেমে এসেও যেন, শেষ পর্যন্ত উঠে গেল৷ দর্শকের অশ্রীসিক্ত চোখের দিকে তাকিয়ে পরিচালকদ্বয় রুসো ভাইরা বলতে পারলেন না, ‘দুঃখিত৷ কিন্ত্ত এটাই হওয়ার ছিল ’৷ কারণ তাঁরা অতটা সাহসী যোদ্ধাও নন৷ তাঁরা শুধুই জাদুকর৷ বিস্মিত করে দিয়ে গেলেন৷ ভীত, আঘাতে জর্জরিত করে দিয়ে যেতে পারলেন না৷
অ্যাভেঞ্জারস: ইনফিনিটি ওয়ার ফ্রিতে ফুল মুভি দেখতে ক্লিক করুন এখানে
আমি ডেল নর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।