বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর মধ্যে অন্যতম হল টিকটক। অ্যাপটি সারা বিশ্বে আনন্দ ও বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভিডিও শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। এর ব্যবহারকারীদের মধ্যে রয়েছে সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর মানুষ।
চীনা এই অ্যাপটি সারা বিশ্বের নজর কাড়ে। কিন্তু এর কার্যকলাপ ও তার ব্যবহারকারীদের অবস্থা বিবেচনায় বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ হয় অ্যাপটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি একসময় বাংলাদেশেও অ্যাপটি নিষিদ্ধের জোড়ালো দাবী ওঠে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে টিকটক অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত বছর ভারত ও পাকিস্তানে টিকটক নিষিদ্ধ হয়। এর আগে ইরানে নিষিদ্ধ করা হয়। এ বছর তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে টিকটককে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। আমেরিকাতেও নিষিদ্ধের আলোচনা চলতে থাকে। প্রত্যেকের দাবী, অ্যাপটির মাধ্যমে নৈতিকতা ও সংস্কৃতি ধ্বংস হচ্ছে। বেহায়াপনা প্রচুর পরিমাণে প্রসারিত করছে টিকটক। অ্যাপটি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়।
২০২১ সালে ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়াই ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করার অভিযোগে অ্যাপটিকে অভিযুক্ত করে কয়েক ডজন মামলা করা হয়। মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য টিকটক ৯২ মিলিয়ন ডলার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ডেটা এক্সেসকৃত ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই নাবালক ও যুবক বয়সী ছিল, তাদের ডেটা চুরি করে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে এটি বিক্রি করে।
২০২০ সালের মার্চে গবেষকরা চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন যে, টিকটক অ্যাপটি সবচেয়ে নিরাপদ অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীদের সংবেদনশীল ডেটা যেমন, পাসওয়ার্ড, ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট, টাকা-পয়সার তথ্য এবং ব্যক্তিগত ম্যাসেজগুলো অ্যাক্সেস করছিল। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে যে আরোও স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তিগত ডেটা অ্যাক্সেস করে তা বুঝাই যায়।
এ কারণে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন।
এফসিসি কমিশনার গুগল এবং অ্যাপলকে টিকটক নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কেননা এটি ব্যবহারকারীর অনেক সংবেদনশীল ডেটা সংগ্রহ করে। গবেষকদের মতে, টিকটক একটি অগ্রহণযোগ্য জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে।
নয়জন টিকটক কর্মচারীদের ১৪ টি বিবৃতি রয়েছে যা থেকে বুঝা যায় যে, চীনের প্রকৌশলীরা কমপক্ষে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যে মার্কিন ডেটা অ্যাক্সেস করেছিল টিকটক অ্যাপের মাধ্যমে।
ফরেন রিলেশনস কাউন্সিলের ডিজিটাল এবং সাইবারস্পেস পলিসি প্রোগ্রামের পরিচালক অ্যাডাম সেগাল বলেছেন যে, "উদ্বেগের বিষয় হবে যে ডেটা এখনও চীনা গোয়েন্দাদের হাতে থাকবে যদি চীনের লোকেরা এখনও অ্যাক্সেস করে থাকে। "
তাই টিকটক অ্যাপ ব্যবহারে একবার ভাবুন যে, কিভাবে আপনি এর মাধ্যমে ভয়ংকর দায়বদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া আগামী বিশ্ব চীনারা হাতে নিতে বিভিন্ন মানুষের ডেটা সংগ্রহে রাখা তাদের জন্য একপ্রকার প্রয়োজন! কেননা এতে লোকদেরকে জিম্মি করে রেখে আধিপত্য বিস্তার করা সহজতর হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করেছে। ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত পরিচয়ের তথ্য যেমন, জন্মদিন, আসল নাম, ই-মেল ঠিকানা ইত্যাদি রয়েছে। এগুলির বাইরেও তেমনই রয়েছে ঘনিষ্ঠ এবং যৌনতা সম্পর্কিত ছবি এবং অডিও রেকর্ডিং ইত্যাদি।
তাই এখন থেকে সাবধান হোন। সময় থাকতে সচেতন হোন।
আমি মুফতি রাকিবুল ইসলাম হোযায়ফী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তি যেন আপনাকে আল্লাহকে ভুলিয়ে না দেয়।
চাইলেই কি এসব প্লাটফরম আসলেই বন্ধ করা যায়? টিকটকের কারণে অনেক এলাকায় কিশোর গ্যাং তৈরি হয়। তাদের যন্ত্রনায় অনেকেই অতিষ্ট। কিন্তু তবু বন্ধ করতে পারে নি অনেক দেশ।