ইলুমিনাটি বা ইলুমিনাতি এমন একটি গুপ্ত সংগঠন। যাদের দ্বারা পরিচালিত হয় সারা বিশ্ব। এদের সদস্যের মধ্যে যারাই আছে এরা সবাই সফল ব্যক্তিবর্গ। এটুকু আমরা সবাই জানি। তবে আজকে আমরা আরো নতুন নতুন তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো, যা আপনি এর আগে হয়তোবা জানতেন না, তাহলে আসুন শুরু
করা যাক।
ইলুমিনাতি জানতে হলে আমাদের যেতে হবে অতীতের জার্মানিতে, যেখানে পহেলা মে ১৭৭৬ সালে adam weishaupt (এডাম ওয়াইশপ্ট) নামে একজন প্রফেসর তার চারজন ছাত্র মিলে একটি গুপ্তদল গঠন করে। যার নাম Perfectabilist (পার্ফেক্টেবিলিস্ট)
এমন নাম রাখার পিছনে কারণ তারা তাদের সমাজে পার্ফেকশন আনতে চেয়েছিলো। কেননা ঐ সময়ে খৃষ্টান ও মিশনারীদের হাতের মুঠোয় ছিলো গোটা সমাজ ব্যাবস্থা। তারা চাইতো তাদের মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন কাহিনি কিংবা কুসংস্কার মানুষ যেন অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। এইসকল কুসংস্কার বন্ধ করার জন্যই প্রোফেসর তার ছাত্র নিয়ে গুপ্ত সংস্থাটি গঠন
করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল যেখানে কোন ধরনের
মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন কাহিনি কিংবা কুসংস্কার থাকবে না। ধর্ম ভেদাভেদ থাকবেনা। মানুষ মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারবে এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্থা কিংবা এর প্রয়োগে সমাজ ব্যাবস্থার সকল ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করাই হচ্ছে এর মুল উদ্দেশ্য। এরপর ১৭৮২ সালে এডাম ওয়াইশপ্ট ফ্রিমেশন নামে একটি গুপ্ত সংগঠনের সাথে সংযুক্ত হন। এবং তাদের
মুল মিশন ছিলো নিউ ওয়ার্ল্ড ওর্ডার যেখানে মানুষের মধ্যে ধর্ম, গোত্র নির্বিশেষে কোন ধরনের বিভেদ থাকবেনা এবং তারা চাইতো সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে। আর সেই সময় ইলুমিনাতিরা ধনী ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতো। যাতে করে সর্ব ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করা যায়। তারা সাধারণ মানুষকে তাদের সদস্য বানাতো না। সদস্য বানাতো
বড় বড় বিজনেস ম্যান, পলিটিক্যাল লিডার, সাইন্টিস্ট, অ্যাক্টর, সিংগার। যারা সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারবে। আর ইলুমিনাতির সিম্বলটি ফ্রিমেশন দল সর্বপ্রথম নিয়ে আসেন।
ইলুমিনাতির সদস্য সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে, একটা সময় তাদের গোপনীয়তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন খৃষ্টান মিশনারি ও কট্টরপন্থীরা তাদের প্রতি অত্যাচার চালায়, নানা ধরনের ভয় দেখায় এবং সকল ধরনের ষরযন্র শুরু করে। ১৭৮৫ নতুন একজন
শাসক Charles Theodor (চার্লস থিওডর) এসে ইলুমিনাতির গুপ্ত সংস্থাটি সম্পুর্নরুপে বন্ধ করে দেয়। কোনো কোনো বইতে আছে ইলুমিনাতি বন্ধ হওয়ার পরেও সেটা আসলে বন্ধ হয়নি কেননা প্রোফেসর ওয়াইশপ্টের একটি জিদ ছিলো সে নিজেই এই সংস্থাকে পুনরায় আবার দার করাবে এবং তিনি নাকি
সেটা করেও ছিলেন। কিন্তু সেটা একেবারেই ডাহা মিথ্যা। গল্পে টুইস্ট আনার জন্যই লেখকরা বইয়ে এসব লিখেছেন। যাতে তাদের বই লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হয়। আর এর উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন সিনেমা তৈরি হয়েছে। সত্যিকার অর্থে ইলুমিনাতি সব ধর্মকে এক করতে চেয়েছিল।
সেই সময় কট্টরপন্থী ও ধর্মাঅবলম্বিদের এটি হজম হয়নি আর ইলুমিনাতিকে এই পর্যায়ে বদনাম করা হয়েছিলো যে ইলুমিনাতি হচ্ছে শয়তানের পুজা করা। কথিত আছে ঐ সময়ে যারা স্রস্টাকে বা ধর্মকে না মানতো তাকে শয়তানের দুত বলা হতো। ইলুমিনাতির
নামে বর্তমান যে সব অপকর্ম ইউটিউবে কিংবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেওয়া হয় তা আসলেই হাস্যকর একটি ব্যাপার যা আপনাকে মিথ্যা ও কুসংস্কারের দিকে ঠেলে দেয়। সুতরাং সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন, পরিবেশ
নিরাপদ রাখুন, ধন্যবাদ।
আমি আহমাদ উল্লাহ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 24 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
সফল হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রতিবার হার মানার আগে আরেকবার চেষ্টা করা।
ধন্যবাদ নুসরাত