৪০০ গিগাবাইটের মেমোরী কার্ড এসে গেছে!

টিউন বিভাগ খবর
প্রকাশিত

মাত্র ৪/৫ বছর আগেও যখন বাংলাদেশে এন্ড্রয়েডের প্রচলণ তেমন একটা শুরু হয় নি তখন পর্যন্ত বাজারে ১ গিগাবাইট বা ২ গিগার মেমোরী কার্ড মানের আমাদের কাছে মনে হতে কি না কি আশ্চর্য্য জিনিস! তথ্য প্রযুক্তি কখনো এক জায়গায় আটকে থাকে না। এক্ষেত্রে মেমোরী কার্ডই বা পিছিয়ে থাকবে কেন? মাইক্রো এসডি কার্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান SanDisk এ বছরের আগষ্টে প্রায় ৪০০ গিগাবাইটের microSD মেমোরী কার্ড বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে এবং তা বর্তমানে বাজারে এসেও গিয়েছে।

৪০০ গিগাবাইট ডাটা মাত্র ৫ স্কোয়ার মিলিমিটারের একটি ছোট্ট কার্ডে! শুনতে আজব হলেও এটা এখন বাস্তব! এখন টেক দুনিয়ায় কথা বার্তা হচ্ছে আমরা কি এই ছোট্ট মেমোরী কার্ডে আরো বেশি ডাটা প্রবেশ করাতে পারবো কি নাকি এখানে শেষ?

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন প্রতিনিয়তই আপডেট হচ্ছে, বিশেষ করে স্মার্টফোনের ক্যামেরা এবং এপ্লিকেশনগুলো। দিন দিন স্মার্টফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটি উন্নত হওয়ায় এর সংরক্ষিত ডাটাগুলো সাইজও দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং তারই সাথে মর্ডান স্মাটফোনের সাথে পাল্লা দিয়ে বড় সড় সাইজে গেমসও বাজারে নিত্যনতুন বের হচ্ছে।

আমরা এখন আমাদের প্রতিদিনের বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর মুহুর্ত্বগুলোকে 4K কোয়ালিটিতে ভিডিও করে থাকি কিংবা ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে দারুণ সহ ছবি তুলে আমাদের সুন্দর সুন্দর স্মৃতিকে সংস্করণ করে থাকি। এই জাতীয় হাই রেজুলেশনের ছবি এবং ভিডিওগুলো অনেক স্টোরেজ ক্যাপাসিটি খেয়ে থাকে। আর তাই এই কথা মাথায় রেখেই SanDisk কোম্পানি তাদের The 400GB SanDisk Ultra microSDXC UHS-I কার্ড বাজারে এনেছে।

এই কার্ডটি কোম্পানি তাদের আগের ২০০ গিগাবাইটের মেমোরী কার্ড বাজারে ছাড়ার প্রায় ২ বছর পর বাজারে এনেছে। ৪০০ গিগাবাইটের স্টোরেজ ক্যাপাসিটির এই মেমোরী কার্ডটি প্রতি সেকেন্ডে ১০০ মেগাবাইটের ডাটা আদান প্রদান করতে সক্ষম! মানে হচ্ছে আপনি প্রতি মিনিটে প্রায় ১২০০টি হাই এন্ড পিকচার মুভ করতে পারবেন। কিন্তু দামের দিক থেকে কম নয় এই বিশাল আকৃতির মেমোরী কার্ডটি। ৪০০ গিগাবাইটের এই কার্ডটি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ২৫০ ডলার বা ২১ হাজার টাকা! ২১ হাজার টাকা দিয়ে মেমোরী কার্ড কিনবেন নাকি?

তাহলে এখন প্রশ্ন থেকে যায় যে কিভাবে এটা সম্ভব? মাত্র হাফ সেন্টিমিটারে ৪০০ গিগাবাইটের ডাটা কিভারে আটানো সম্ভব? সাধারণত হাফ সেন্টিমিটারে তেমন জায়গায় পাওয়া যায় না যদি থিউরিক্যালি বলে থাকি। মাইক্রো এডসি কার্ড নির্মাতা কোম্পানিগুলো এই ছোট্ট জায়গায় মধ্যেই তাদের মেমোরী টান্সসিসটরগুলোকে ফিট করার কৌশল বের করে নিতে হয়। ২০১৩ সালে তাদের এই টান্সসিসটরগুলোর সাইজ ছিল মাত্র ১৯ ন্যানোমিটার। প্রতিটি সিঙ্গেল টান্সসিসটরে ৮ গিগাবাইটের ডাটা সংরক্ষণ করা যেত।

এখন কথা হচ্ছে মেমোরী কার্ডের আয়তন তো আর বছর বছর বেড়ে চলছে না, কিন্তু একই আয়তনে কিভাবে বছর বছর বেশি সাইজের ডাটার আয়োজন করা হচ্ছে? আর তাহলে এই টান্সসিসটরগুলোকে একটার উপর আরেকটিকে বসিয়ে মেমোরী কার্ডের ডাটার সাইজ বাড়ানো হচ্ছে। এক টান্সসিসটরের উপর আরেকটি টান্সসিসটর বসিয়ে transistor layers গঠন করে এই কাজটি করা হয়। এভাবেই ৩২ গিগাবাইটের মেমোরী কার্ড বানানো শুরু হয়।

কিন্তু এর বেশি যেতে হলেই থিউরিক্যালী আর কাজ হয় না, কারণ এর উপরে যেতে হলে আপনার চাই আরো বেশি পরিমানের টান্সসিসটর কিন্তু বেশি পরিমাণের টান্সসিসটরগুলো এই হাফ সেন্টিমিটারের মেমোরী কার্ডে স্থাপন করাটাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো কার্ড নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জন্য।

১৯ ন্যানোমিটার লেভেলে ৬৪ গিগাবাইটের মেমোরীর জন্য ৮টি টান্সসিসটর লেয়ারের প্রয়োজন হতো, এই হিসেবে ৪০০ গিগাবাইট ফিট করার জন্য প্রায় ৫০টি টান্সসিসটর লেয়ারের প্রয়োজন হবে, যেটা ছোট্ট সাইজের কার্ডে বাসানো থিউরিক্যালি অসম্ভব হবে!

এবার এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য কোম্পানিগুলো তাদের টান্সসিসটরগুলোকেই আরো ছোট আকৃতির বানানো এবং গবেষণা করা শুরু করলো! এ বছরের আগস্টে এই টান্সসিসটর লেয়ারের সাইজ ১৯ ন্যানোমিটার থেকে ৫ ন্যানোমিটারে নিয়ে আসা হয় আর যার ফলাফল স্বরুপ আমরা পেয়ে গেছি ৪০০ গিগাবাইটের মেমোরী স্পেস একটি ছোট্ট মাইক্রোএসডি মেমোরী কার্ডে।

এভাবে অদূর ভবিষেৎ এই টান্সসিসটরের লেয়ারের সাইজ ৫ ন্যানোমিটারে নামিয়ে আনা যায় তাহলে আপনি ১ টেরাবাইটের মাইক্রোএসডি কার্ড পেতে যাচ্ছেন! আর আমার মনে হয় না, মাইক্রো এসডি কার্ডে ১ টেরাবাইটের বেশি জায়গার দরকার হবে না! দেখা যাক কি হয়!

বিশাল সাইজের মেমোরী কার্ড তো বাজারে এসে গেল! কিন্তু আমাদের স্মার্টফোনগুলো কি এই সাইজের চাপ নিতে প্রস্তুত?? এখনো অনেক স্মার্টফোন যেগুলো আমরা ব্যবহার করি সেগুলোতে ১২৮ গিগাবাইটের মেমোরী কার্ড সার্পোট করছে না, আর ৪০০ গিগাবাইট তো পরের কথা! যাই হোক আজকের টিউনটি এখানে শেষ করছি! ২১-২২ হাজারে মেমোরী কার্ড না কিনে এই দামে একটি মাঝারী কোয়ালিটির ল্যাপটপ পেয়ে যাবেন আপনি! হাহাহাহা!

Level 10

আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

তাহমিদ ভাইয়ের ব্লগ থেকে এই টিউন আগেই পরেছি………!!