বহু আকাঙ্খিত টেকটিউনস মিটআপ ২০১১ অবশেষ হয়েই গেল। প্রায় ৮০জন টিটি সদস্যদের উপস্থিতিতে রমনা পার্কে ঘাসের উপরে গোল হয়ে বসেই এটি শেষ হয়ে গেল। টেকটিউনসের অনেক রথি মহারথিদের উপস্থিতিতে প্রানবন্ত হয়ে উঠেছিল রমনা পার্কের একটি বিশেষ স্থান। আমাদের অনেকের মনেই স্মরনীয় হয়ে থাকবে এটি বহুদিন। আমরা সবসময় যাদের নিয়ে হিংসা করি যাদের টিউন দেখে মনে হয় ভিন গ্রহের কোন প্রানী, টেকটিউনসের সেই সব নক্ষত্রদের চোখের সামনে পেয়ে আমি এবং আমার মতো অনেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা মেহেদী ভাই, সোহান ভাই (টিনটিন), শাকিল আরেফিন, হাসান যোবায়ের আল ফাতাহ, লাকী এফএম ইত্যাদি টেক ভি.ভি.আই.পি দের সাথে কয়েকটি ঘন্টা পার করেছি।
মেঘ রোদ্দর ভাইয়ের সৌজন্যে কয়েকটি ছবি এখানে দেয়া হলো।
টেকটিউনসের "নাটের গুরু" যারা
আমি বিশেষ করে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্যই সুদুর চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে সকালের ট্রেনে করে এসেছিলাম। আমার মতো আরোও অনেকেই যেমন টিউনার সজীব রহমান এসেছেন ঝিনাইদহ থেকে, রীতিমতো নাকি জেহাদ করে দিনাজপুর থেকে এসেছে টিউনার সাইফুল। আরোও অনেকে হয়তো আসতে চেয়েও আসতে পারেননি। আমি ভেবেছিলাম এতো বড় বড় মানুষগুলো আসবেন। জমকালো অনুষ্ঠান হবে। আমি কমলাপুর ষ্টেশন থেকে পায়ে হেটেই রমনা পার্কে প্রবেশ করি। দুর থেকেই লক্ষ করছিলাম হয়তো সাউন্ড সিষ্টেম থেকে ভেসে আসবে কোন জলদগম্ভীর স্বর। কেউ হয়তো জননেতাদের মতো ভাষন দিবেন। আমি এক কোনায় গিয়ে বসবো। গিয়ে দেখলাম কিছুই নাই। স্রেফ ঘাসের উপরে কয়েকজন মানুষ গোল হয়ে বসে গল্প করছে। আমি মোটামুটি কনফিউশানে পড়ে গেলাম আসলেই কি মিটআপ হবে? কাউকেতো দেখছিনা। আমি সেই গোল মিটিংয়ের কিছুটা কাছাকাছি আসতেই কানে ভেসে আসলো টেকটিউনস শব্দটি। মেহেদী ভাই কথা বলছিলেন। গিয়ে বসলাম। পরিচয় হলো। ভার্চুয়াল জগতে পরিচিত সব মানুষকে বাস্তব চোখে দেখলাম। সেই সব বিখ্যাত মানুষদের সাথে কিছুক্ষনের আড্ডা মনে হচ্ছে চোখের পলকেই শেষ। ঘুরে ফিরে একটাই কথা আসছিলো সার্ভার এর সমস্যা নিয়ে। মেহেদী ভাই অসীম ধৈয্যের সাথে হাসিমুখে এতগুলো মানুষের নানামুখী প্রশ্নাক্রমন দক্ষতার সাথেই সামাল দিলেন। হঠাৎ করেই একজন পাঞ্জাবী পরা মানুষের আগমন। সবাইকে নড়েচড়ে বসতে দেখে মনে হলো ইনি বিশেষ কেউ। সাথে সাথেই পরিচয় পেলাম। ইনি টেকটিউনসের অন্যতম প্রধান প্রানপুরুষ শাহজালাল ভাই। মেহেদী ভাই ঘোষনা দিলেন শীঘ্রই আসছে Techtunes 3 এবং সেইসাথে নতুন সার্ভারে টেকটিউন্স স্থানান্তরের কথা। অনেকে অনেকভাবে টেকটিউনস নিয়ে মনের কথা ব্যক্ত করলেন। কেউ প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্রাউজ শুরু করেন টেকটিউনস দিয়ে। একজনতো বলেই ফেললেন টেকটিউনস না থাকলে মনে হয় তার গার্লফেন্ড হারিয়ে গেছে।
আসলে এগুলো আমাদের সবারই মনের কথা। অবাক লাগলো সেইসাথে গর্ব অনুভব করলাম টেকটিউনসের ভিজিটরের সংখ্যা জেনে। প্রতিদিন নাকি গড়ে ছয়হাজার ভিজিটরের পদচারনায় মুখরিত হয় টেকটিউনস অঙ্গন। কথা ছিলো লাইভ টেলিকাষ্টের । কিন্ত কোন ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। কারো কাছে একটি হ্যান্ডিক্যাম থাকলেও হয়তো ভিডিও করে নেটে আপলোড করা হতো। সেটাও হয়নি। আমি নিজে ক্যামেরা নিয়ে আসিনি। কারন জানতাম ম্যাক্সিমাম সদস্যের কাছেই ক্যামেরা থাকবে। পরে তাদের তোলা ছবিগুলো হাতেপায়ে ধরে কালেকশন করলেই যথেষ্ট। পরিশেষে বলা যায় এই অনুষ্ঠানটির পরিধি আরোও অনেক বড় করা যেত। আমরা যারা অনেক দুর থেকে এসেছি তারা পুরোপুরি উপভোগ করার আগেই চোখের পলকে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়ে গেল।
(আমি অপেক্ষা করে আছি ছবিগুলো পাবার আশায়। ইতিমধেই মেঘ রোদ্দুর ভাইয়ের কিছু ছবি পেয়েছি। আরোও যারা ছবি তুলেছেন তারা দয়া করে কোন কাটছাট না করেই সবগুলো ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করুন। )
{{{ পুনশ্চ : যারা আসতে পারেননি তাদের আফসোসের কোন কারন নাই। আমাদেরকে একেবারে শুকনো মুখে ফিরতে হয়েছে। যদিও শাহজালাল ভাই কোথা থেকে খেয়ে এসে আমাদের সামনে ঢেকুর তুললেন (শুনিয়ে দিলেন)। কিন্তু আমরা আলুর সিঙ্গারা কিংবা লাল চাও পাইনি।}}}
আমি Maruf Hosen। Photocopier Engineer, Rajshahi। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 565 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোই আছি!
চরম পোস্ট। আসলেই আজকে অনেক মজা হয়েছে।