"বান্ধবী" একটি কোরিয়ান ছবির বাংলা নাম৷ শুরুর এই অভিনবত্বেই চমকের শেষ নয়, বরং সেখানে চমকের শুরু৷ শিন ডং ই ছবিটি নির্মাণ করেছেন মূলত কোরিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের অনেক বলা-না-বলা কথা নিয়ে৷ মুভিটিতে অভিবাসী জীবনের ছোট-বড় অনেক সমস্যাই উঠে এসেছে এক জোড়া তরুণ-তরুণীর মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্ককে ঘিরে৷
ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র দুটো৷ কিছুটা ক্ষ্যাপাটে ধরণের কোরিয়ান তরুণী মিন সিও৷ ১৭ বছরের এই তরুণীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগতা বায় জিন হুই৷ কাহিনীর এক বাঁকে তার সঙ্গে পরিচয় এক অভিবাসী বাঙালি যুবক করিমের সাথে৷ ছবির খুব গুরুত্বপূর্ণ এই চরিত্র রূপায়ণ করেছেন অভিবাসী কর্মী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে কোরিয়াতে এলেও পরবর্তীতে তথ্যচিত্র নির্মাণকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়া মাহবুব আলম৷
বায় জিন হুই এমনিতে বেশ কাঠখোট্টা স্বভাবের, স্পষ্ট কথার মেয়ে৷ মেয়েটি মনেপ্রাণে চায় পরিবারের বোঝা হয়ে না থেকে নিজে কিছু করতে৷ সে ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে ইংরেজী শিখতে শুরু করে এবং তার খরচ জোগাড় করতে ঢুকে পড়ে এক খন্ডকালীন চাকরিতে৷ তাতেও যে জীবন খুব ভালো চলছিল, তা নয়৷ একদিন হঠাৎ বাসে মিন সিও পেয়ে গেল একটা ম্যানিব্যাগ৷ টাকাটা খরচ করে ফেলার ইচ্ছে হলো৷ কিন্তু তা করার আগেই ধরা পড়ে গেল ম্যানিব্যাগের মালিক বাঙালি যুবকের হাতে৷ যুবকটি তক্ষুণি মেয়েটিকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে চায়! ভয় পেয়ে যায় মেয়েটি৷একসময় দু'জন একটা সমঝোতায় আসে৷ পুলিশকে না জানানোর প্রতিদান চায় বাঙ্গালী যুবক৷ খুব বড় কোনো চাহিদা নেই তার৷ শুধু তার আগের কর্মক্ষেত্রে বকেয়া বেতন না দিয়ে সটকে পড়া মালিকটিকে খুঁজে বের করে দিতে হবে৷ অনিচ্ছাসত্বেও রাজি হয়ে যায় মেয়েটি৷
সেখানেই কাহিনীর জমাট বাঁধা শুরু৷ এক সঙ্গে চলতে চলতে দুজনের সম্পর্ক নতুন রূপ নেয়৷ একে অন্যকে জানতে শুরু করে৷ দুজন কিন্তু একেবারে দুই মেরুর মানুষ৷ মেয়েটির কাছে জীবন স্বপ্নময়, গোলাপের পাঁপড়ি বিছানো বিছানা৷ অন্যদিকে সামান্য টাকা-কড়ির জন্য দেশান্তরী হওয়া ছেলেটির কাছে জীবন মানে সংগ্রাম৷ বাস্তবতা আর দৃষ্টিভঙ্গীর এই তারতম্যের কারণে মেয়েটি প্রায়ই অবিবেচকের মতো আজব সব প্রশ্ন করে বসে ছেলেটিকে৷ মনের সমস্ত ক্ষোভ মেটাতে মাঝে মাঝে ছেলেটিও কোরিয়ান সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে শুরু করে৷ বাঙালি হলে কী হবে, মাহবুব আলম কিন্তু কোরীয় ভাষাতেও পটু৷ অভিনয়ে তা ফুটেছে বেশ ভাল করে।
গত বছর জুনে মুক্তি পায় ‘বান্ধবী' সিনেমা'টি দক্ষিন কোরিয়াতে, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন শহরে প্রদর্শিত হয়। এর আগে ২০০৭ এ মালয়েশিয়ায়-অভিবাসী বাংলাদেশীকে নিয়ে তাইওয়ানের বিখ্যাত পরিচালক সাই মিং লিয়াং নির্মাণ করেছিলেন 'আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু স্লিপ এলোন'। এবার কোরিয়ান পরিচালক শিন দং ইল নির্মাণ করলেন 'বান্ধবী'।
কোরিয়ান এই সিনেমাটি আপনি চাইলে ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন। ডিভিডি রিপে মোট ৮টি পার্ট। আমার কাছে ভাল লেগেছে, আশা করি আপনাদেরও ভাল লাগবে... কোরিয়ান ভাষায় হলেও ইংরেজীতে সাবটাইটেল আছে আশা করি তেমন সমস্যা হবে না।
আমি নাবিল আমিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 119 টি টিউন ও 738 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
এত কস্ট করে লিঙ্ক গুলি দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।