ঘরের উচ্ছল মেয়েটি নিশ্চল পড়ে আছে লাশঘরে। সেদিকেই অসহায় দৃষ্টিতে অপলক তাকিয়ে আছেন ভাইটি। আর তাঁর কোলে মাথা রেখে নির্বাক পড়ে আছেন মা। বখাটের অত্যাচারে গত ০৩/০৪/২০১০ আত্মাহুতির পথ বেছে নিয়েছে স্কুলছাত্রী ইলোরা
ছবি: সাইফুল ইসলাম
যদিও পুরোনু খবর তারপর টিউন করলাম স্বরন করিয়ে দেবার জন্য। এরখম শত শত মেয়ে জীবন দিচ্ছে, এর জন্য কে দায়ি? সরকার নাকি আইন শৃঙ্কলা বাহিনি নাকি আপনি আমি? আজ ইলোরা বখাটেদের কারনে জীবন দিয়েছে কাল আপনার আমার বোন বা মেয়ে এভাবে জীবন দেবে।
- ‘আমার মেয়েকে কেন তালা মেরে রেখেছো। রাত হয়ে গেছে, ওকে জাগিয়ে দাও। ওকে মশায় খেয়ে ফেলবে, ও তো এখন পড়তে বসবে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের সামনের মেঝেতে আছড়ে পড়ে এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন মা হালিমা নিজাম। তাঁর আদরের ছোট মেয়েটি আর পড়তে বসবে না, স্কুলে যাবে না। বখাটের উৎপাত সইতে না পেরে আত্মাহুতি দিয়েছে সে।
রাজধানীর রামপুরার দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে কুলসুম ওরফে ইলোরা (১৪) গত ০৩/০৪/২০১০ শনিবার বিকেলে খিলগাঁওয়ের মধ্য নন্দীপাড়ার বাসায় বিষ পান করে। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় এক বখাটের অব্যাহত উৎপাত সইতে না পেরে ইলোরা আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। বখাটে রেজাউল করিমকে 03/04/2010 রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে খিলগাঁওয়ে বখাটেদের অত্যাচারে আত্মহত্যা করেছিলেন চারুকলার ছাত্রী সিমি। গত ১৯ মার্চ পশ্চিম নন্দীপাড়ায় ঘরে ঢুকে বড় বোনকে আটকে রেখে ছোট বোনকে ধর্ষণ করেছিল ১০ বখাটে। মিরপুরের টোলারবাগে কিশোরী ফাহিমাও আত্মহত্যা করেছিল বখাটেদের উৎপাত সইতে না পেরে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নন্দীপাড়ার ৫ নম্বর সড়কের ৬৫ নম্বর বাসায় থাকেন মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের নিরীক্ষক (অডিটর) নিজামউদ্দিন মোল্লা। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে ইলোরা সবার ছোট। ০৩/০৪/২০১০ তারিখে দুপুর সোয়া একটার দিকে স্কুল থেকে মায়ের সঙ্গে বাসায় ফেরে ইলোরা। বিকেলে সবার অজান্তে সে বিষাক্ত দ্রব্য পান করে মায়ের শয়নকক্ষে যায়। খারাপ লাগছে বলে জানালে মা তাকে কাছে ডেকে নেন। ইলোরার মুখে বিষের গন্ধ পেলে তিনি দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সঙ্গে যান ইলোরার স্বজনেরা। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইলোরার মা হালিমা নিজাম হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় স্থানীয় বখাটে রেজাউল স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে ইলোরাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কয়েকবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে রেজাউল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। দিনের পর দিন সে ইলোরাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। ইলোরা স্কুলভ্যানে আসা-যাওয়া করত। একপর্যায়ে ইলোরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর মা নিজেই ইলোরাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন।
হালিমা নিজাম জানান, পুরো বিষয় রেজাউলের বাবা বাবর আলীকে জানানো হয়। আট-দশবার জানালেও তিনি আমলে নেননি। উল্টো রেজাউলের মা ও চাচি একদিন বাসায় এসে ইলোরাকে দোষারোপ করেন। তাঁরা নানাভাবে শাসিয়ে যান।
গত বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার সময় রেজাউল ইলোরার পথ আটকায়। জানতে চায়, বাসায় কেন তার বিরুদ্ধে জানানো হয়েছে। ইলোরার পরিবার বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ মহল্লাবাসীকে জানায়। সবাই বখাটে রেজাউলের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। ইলোরার মা জানান, তাঁরা জিডি করার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
ইলোরার বড় ভাই হাফিজ আল ফাহাদ জানান, মাস দেড়েক আগে তাঁদের এক ভাড়াটের মাধ্যমে রেজাউল একটি মুঠোফোন পাঠায় ইলোরার জন্য। মা ফোনটি নিয়ে নেন। এর কয়েক দিন পর বখাটে রেজাউল আরও একটি ফোন পাঠায়।
জানা গেছে, রেজাউল পড়াশোনা করেনি। তার বয়স ১৯-২০ বছর হবে। তার নেতৃত্বে আট-দশজনের একটি বখাটে দল সারাক্ষণ এলাকায় ঘুরে বেড়ায় এবং স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে।
ইলোরার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ০৩/০৪/২০১০ তারিখে রাতে যোগাযোগ করা হলে খিলগাঁও থানার অপারেশন কর্মকর্তা আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মৃত স্কুলছাত্রীর বাবা নিজামউদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে রেজাউল করিমকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। বখাটে রেজাউল গা-ঢাকা দিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে থানার তিনটি দল অভিযানে নেমেছে।
ওই দিন সন্ধ্যার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ইলোরার মা লাশঘরের সামনে বিলাপ করছেন। বলছিলেন, ‘ওকে লাশঘরে একা রেখে আমি যাব না। আমার ঘর শূন্য হয়ে গেল।’ মায়ের কান্নায় উপস্থিত সবার চোখ ভিজে আসে।
এখান থেকে কপি করা হয়েছে
এট
Onek shundor post.. Shorkar kokhono nijer bertotha shikar korbe na, BNP hok ba AWAMI LEAGUE hok…
http://www.bdtechie.com