পশুপাখি কিংবা প্রাণীর শরীর থেকে নানারকম পদার্থ দিয়ে রোগের প্রতিষেধক বা ওষুধ তৈরির প্রথা পৃথিবীতে নতুন নয় । প্রাচীনকাল থেকেই এই সমস্ত বিষয়ে নানা গবেষণা চলছে। কিন্তু ইদানীং চীন দেশে জ্বর , পেটের অসুখ কিংবা লিভার সংক্রান্ত নানা জটিল রোগ নিরাময়ের জন্য শুরু হয়েছে এক অমানবিক ও নৃশংস কাজ । যার বিবরণ শুনলে শিউরে উঠতে হয় । খোদ বেজিং এর বুকেই এই অমানবিক কাণ্ডটি প্রতিদিন ঘটে চলেছে । ঘটনাটি হল ইনজেকশনের মাধ্যমে ভাল্লুকের পিত্তথলি থেকে নৃশংস ভাবে পিত্তরস বের করে নেওয়া ।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষক সম্প্রদায়ের একদল এই অমানবিক কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে চলেছে । প্রাণীর শরীর থেকে নানাভাবেই নানা কিছু সংগ্রহ চলছে নানা গবেষণার কাজে । কিন্তু ভাল্লুকের শরীর থেকে যেভাবে এই কাজটি করা হয় তা অসহ্য । কিন্তু মানুষকে অ্যানিশথেশিয়া ছাড়া দেহের কোনও অংশে বেশ কয়েক ঘণ্টা ছুরী দিয়ে কাটা-ছেঁড়া করলে কি ভয়ংকর অবস্থা হতে পারে তা আমরা সহজেই বুঝতে পারি । ভাল্লুকের পিত্তথলি থেকে তার চাইতেও নৃশংস ভাবে এই পিত্তরস সংগ্রহ করা হয় ।
এই নৃশংস কাজের জন্য চীন দেশে ভাল্লুক পোষা এবং তার প্রতিপালনের ব্যবসা এখন বেশ রমরমা । এমনও দেখা যায় যে কৃষকরা নিজেদের কৃষি কাজের সঙ্গে সঙ্গে দু-চারটে ভাল্লুক পুষে অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থাও করে নিচ্ছে । এরা জানে কি ভয়ংকর ভাবে এই পিত্তরস সংগ্রহ করতে হয় । এরা জানে ভাল্লুক গুলোর শরীর থেকে কয়েকদিন অন্তর অন্তর পিত্তরস সংগ্রহ করার জন্য যে ভাবে ইনজেকশন করতে হয় তা কতটা নৃশংস , কিন্তু সব কিছু জেনেও এরা নির্বিকার ।
যেদিন এই পিত্তথলি থেকে তাঁরা রস সংগ্রহ করে সেদিন এই ভাল্লুকগুলো একেবারেই নির্জীব হয়ে পড়ে । মৃত্যুর যন্ত্রণা নিয়ে নিথর হয়ে থাকে কয়েকদিন । কিন্তু ব্যবসায়ীরা কিছু খাবার খাইয়ে খাইয়ে একটু একটু করে ভাল্লুকগুলোকে আবার চাঙ্গা করে তুলে কয়েকদিন পর সেই একই প্রক্রিয়ায় রস সংগ্রহ করে ।
এই নিষ্ঠুর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে যে দু একজন পশুপ্রেমি সোচ্চার হননি তা নয় । কিন্তু সবটাই সাময়িক । ' কাকস্য পরিবেদনা ' - শেষ পর্যন্ত সবটাই থিতিয়ে গেছে । প্রথমে পিত্তথলি থেকে রস সংগ্রহ করা হয় তারপর সেই তরল রস বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে নিয়ে পাওডারের মতো গুঁড়ো করা হয় এবং তারপর ছোটো ছোটো পাকেট এ ১৪০০ থেকে ২০০০ টাকায় বিক্রি করা হয় । পিত্তথলি থেকে পিত্তরস বের করার জন্য যে ইনজেকশন করা হয় তা মাঝে মাঝেই করার ফলে ভাল্লুকের পিত্তথলিও ঐ নির্দিষ্ট অংশে এক ভয়ংকর ক্ষতের সৃষ্টি করে । একসময় সেই ক্ষত থেকে ঘা হয়ে পুঁজ পর্যন্ত বের হতে থেকে যার অনিবার্য পরিণাম ভাল্লুকগুলির মৃত্যু ।
চিনের প্রান্তে এখন এই ব্যবসা এতোটাই রমরমা যে কোনও কোনও ব্যবসায়ী এর ফলে বহু টাকারও মালিক । কোথাও বা এক সঙ্গে কয়েকশো ভাল্লুক কে প্রতিপালন করে ব্যবসা চালানো হচ্ছে । কিন্তু ভেতরে ভেতরে অমানবিক ও অবৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে । সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি মানবিক সংস্থা এর বিরুদ্ধে ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণের চেষ্টা করলেও আদতে প্রকৃত সমস্যার সমাধান কোনভাবেই হচ্ছে না । সত্যিইতো নিষ্ঠুর এই ব্যাথার ব্যাথী না হলে কোনভাবেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় ।
এই লেখাটার মুল লেখক হলেন ইন্দ্ররাজ চক্রবর্তী । "GUIDANCE NAYDASH" নামক একটি পত্রিকায় এই লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিলো ১ লা এপ্রিল ২০১২ তে ।
এতো কষ্ট করে লিখলাম আপনাদের কেমন লাগল কমেন্ট করে জানাবেন । আবার দেখা হবে । ভালো থাকবেন । ধন্যবাদ । আরও বিস্তারিত জানতে গুগল মামাতে "Bear's Bile" লিখে সার্চ করুন ।
আমি b.raja973। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 178 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Ami class 10 er student.Ami Baghmundi High School e pori.Amar bari Santaldih te.
@টেকটিউনস: ধন্যবাদ , আপনি আমার টিউনটির ব্যাপারে এটি বললেন কিন্তু এই টিউন গুলো https://www.techtunes.io/news/tune-id/170695 , https://www.techtunes.io/news/tune-id/164652 ( দয়া করে কিছু মনে করবেন না যারা টিউন গুলো করেছেন আমি শুধু আমার এই পোস্টটার স্বার্থে বলছি ) এগুলোর মধ্যে আপনি কোথায় প্রযুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন ?