পাইরেসী নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মতামত, পাইরেসী ক্ষতিকর এটা অপ্রিয় সত্য কথা। সফটওয়্যার পাইরেসীতে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান যৌথভাবে দ্বিতীয়।
ইতিপূর্বে আমাদের দেশ স্পর্শকাতর একটি ক্যাটাগরিতে শীর্ষস্থানে ছিল। যাহার অবস্থান ইতিমধ্যে পরিবর্তীত। কিন্তু সফটওয়্যার পাইরেসীর দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান মোটামুটিভাবে পাকাপাকিভাবে অনেকদিন যাবত শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। অন্য ক্যাটাগরিতে অবস্থান পরিবর্তীত হলেও এই ক্যাটাগরিতে অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন। বর্তমানে সফটওয়্যার পাইরেসীতে শীর্ষস্থান দখল করে আছে আর্মেনিয়া ৯৩%। তার পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে যৌথভাবে আছে মলডোভা, আজারবাইজান এবং বাংলাদেশ ৯২%। সর্ব নিম্নে অবস্থান হল আমেরিকা ২০%।
নিম্নের ছবিটি লক্ষ্য করুন, এক ব্যক্তি তার নিজস্ব কিছু জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তা দিয়ে তার গন্ত্যব্যর দিকে এগুচ্ছে, পথিমধ্যে কিছু অসাধু ব্যক্তি তার পথ আটকালো এবং জোড়পূর্বক পথচারীর জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিল, এবং ঐসব অসাধু ব্যক্তিরা তাদের নিজের মনে করে ঐ পথচারীর জিনিসপত্র ব্যবহার করতে লাগলো। তার মানে কি বর্তমানে ঐসব জিনসপত্রের মালিক ঐ অসাধু ব্যক্তিরা, অবশ্যই না। তার কারন কি? তা আমরা সবাই উপলব্ধি করি, কিন্তু বাস্তবে তা মানতে আমরা খুব একটা আগ্রহী না, অন্ততঃ সফটওয়্যার পাইরেসীতে। আমরা যদি আজ আমাদেরকে ঐ পথচরীর অবস্থানে ভাবি তাহলে কি সফটওয়্যার পাইরেসীতে আগ্রহী হবেন? আমার ধারনা, না ।
আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পাইরেসী নিয়ে যথেষ্ট তর্ক- বিতর্ক। আমরা সবাই অবগত আছি পাইরেসী অন্যর স্বত্ব (intellectual property) চুরি করা। কিন্তু বাস্তবে আমরা মানছি না কেন? জেনেশুনে চুরিকে প্রশ্রয় দেয়া কি আরো বড় অন্যায় নয়? আমাদের দেশে পাইরেসীর পক্ষে যুক্তি অনেক বেশী। কিছু কিছু যুক্তি অথনৈতিক প্রেক্ষাপটে অবশ্যই অখন্ডনযোগ্য। তারমানে এই নয় যে আমরা ১০০% পাইরেসীর পক্ষে। তথ্য প্রযুক্তিতে শীর্ষস্থানের দেশ আমেরিকাও পাইরেসী মুক্ত নয়। তবে যে পরিমান সেটা একটা গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে আছে।
Business Software Alliance (BSA) সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী ২০ আগষ্ট ২০০৯ ইং পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের সফটওয়্যার পাইরেসীর অবস্থান।
বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিতে ভবিষ্যতে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এটাই সবার প্রত্যাশা। আমাদের Next Generation যাতে আস্তে আস্তে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের পাইরেসী থেকে মুক্তি পেতে পারে এটাই আমাদের সবার প্রত্যাশা আমি মনে করি। পাইরেসী শুধু যে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে তা নয়, আরো অনেক সেক্টর আছে যেখানে সংক্রামক ব্যধির মত ছড়িয়ে আছে পাইরেসী। আমরা এই সংক্রামক ব্যধি থেকে মুক্তি পেতে চাই।
আমার একটা বিনীত অনুরোধ সবার কাছে, পাইরেসী নিয়ে বিতর্কে না গিয়ে কি ভাবে আমরা এর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারি সে ব্যাপারে সবার গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এর সু্ষ্ঠ সমাধান বের করার চেষ্টা করি। আজ এন্টি পাইরেসী অ্যাক্ট প্রযোজ্য নয় আমাদের দেশের জন্য, কিন্তু যখন এ আইন কড়াকড়ি ভাবে বাস্তবায়ন হবে তখন হুট করে স্বল্প সময়ে কোন পটভূমি পরিবর্তন সম্ভব নয়। আইন ধনী গরীব সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। আসুন আমরা সবাই সম্মিলিত ভাবে চেষ্টা করি আমাদের সবার প্রিয় মাতৃভূমিকে সফটওয়্যার পাইরেসীর শীর্ষস্থান থেকে অন্ততঃ আরো নিম্নস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে কাজ করি। পরবর্তীতে পাইরেসী রোধে প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করেবো।
আমি মোহাম্মদ ইয়াকুব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 42 টি টিউন ও 322 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 16 টিউনারকে ফলো করি।
ICT Specialist & IT Business Entrepreneurship, Course Curriculum expert, eLearning, Education & Industry Partnership expert. Expertise in Cyber Security, Cloud Computing, AI, Big Data, RFID, Technology Project Management, Change management, leadership & the development of comprehensive large scale eHealth programs. Former Asset Professor in University of Kuala Lumpur, Kuala Lumpur,...
নিতে পারলে ভালই হত….. কিন্তু পাইরেসী বন্ধ হবে বলে মনে হয় না….
পাইরেসী চলছে, চলবে……