কাল থেকে চালু হচ্ছে টেলিটকের থ্রিজি। আসুন থ্রি জি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই। (টু-জি, ফোর-জি সম্পর্কেও তথ্য রয়েছে)

টিউন বিভাগ খবর
প্রকাশিত

থ্রি-জি (3-G-3rd Generation) প্রযুক্তি একটি ষ্ট্যান্ডার্ড মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম যা International Telecommunication Union (ITU) কর্তৃক নির্ধারিত International Mobile Telecommunication-2000 (IMT-2000) এর শর্তসমূহ পূরণ করে। IMT-2000 ষ্ট্যান্ডার্ড এর প্রধান শর্ত অনুযায়ী এই প্রযুক্তিতে কমপক্ষে 200kbt/s অর্থাৎ প্রায় .2mbit/s গতিতে ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা থাকতে হবে।

থ্রি-জি মোবাইল মূলত ৪টি ষ্ট্যান্ডার্ডে কাজ করে যা নিম্নরূপ:

* UMTS (Universal Mobile Telecommunications System): UMTS প্রযুক্তি 3GPP (3rd Generation Partnership Project) ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি যা প্রাথমিকভাবে ২০০১ সনে ইউরোপ, জাপান, চায়না প্রভৃতি দেশে চালু হয়। এক্ষেত্রে একই অবকাঠামো ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের radio interface এর সুবিধা দেয়া হয়; যেমন:

-সর্বাধিক ব্যবহৃত Radio interface হচ্ছে W-CDMA

-TD-SCDMA রেডিও ইন্টারফেসটি ২০০৯ সালে শুধুমাত্র চায়নায় চালু করা হয়।

-UMTS সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করন HSPA (Hihg Speed Packet Access) সর্বোচ্চ 56mbit/s ডাউনলিংক গতি সরবরাহ করতে পারে।

* 3PGP2 ভিত্তিক CDMA2000 পদ্ধতি যা ২০০২ সালে প্রথম IS-95 2G ষ্ট্যান্ডার্ডের অবকাঠামো Sharing এর মাধ্যমে উত্তর আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় চালু হয়। সর্বশেষ সংস্করণ EVDO (Evolution Data Optimized) Rev B 14.7Mbit/s ডাউনলিংক গতি প্রদান করে।
* এছাড়াও GSM EDGE মোবাইল ওয়াইম্যাক্স সার্ভিস IMT-2000 এর শর্তাবলী পূরণ করে এবং ITU কর্তৃক থ্রি-জি ষ্ট্যান্ডার্ড হিসাবে স্বীকৃত; তবে এরা প্রচলিত থ্রি জি ব্র্যান্ড নয় বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সিস্টেম।

থ্রি-জি মোবাইল ব্যবহারের সুবিধা
* থ্রি-জি মোবাইল প্রযুক্তি অত্যন্ত উচ্চগতি সম্পন্ন ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা দেয়। ডাউনলিংকের ক্ষেত্রে এই গতি 14mbps এবং আপলিংক এর ক্ষেত্রে 5.8 mbps.
* থ্রি-জি মোবাইলে অত্যন্ত শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভয়েজ আদান প্রদানের পাশাপাশি ভয়েজ মেসেজ, টেক্সট মেসেজ, ছবি তোলা, অডিও ভিডিও রেকর্ডিং, হাইস্পীড ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেমিং ইত্যাদি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। পূর্বে ৩ মিনিটের একটি গান টু-জি মোবাইলের মাধ্যমে ডাউনলোড করতে ৬-৯ মিনিট সময় লাগতো, বর্তমানে থ্রি-জি প্রযুক্তির সাহায্যে তা ১১-৯০ সেকেন্ডেই করা সম্ভব।
* থ্রি-জি মোবাইলের সাহায্যে মোবাইলে টিভি দেখা এবং টেলিকনফারেন্সের সুবিধা ভোগ করা সম্ভব।

কবে চালু হয়
২০০১ সনের ১ অক্টোবর জাপানের NTT Docomo সর্বপ্রথম জাপানে থ্রি-জি মোবাইল উদ্বোধন করে। ইউরোপে সর্বপ্রথম Telenor বাণিজ্যিক ভিত্তিতে থ্রি-জি প্রযুক্তি চালু করে ২০০১ এর ডিসেম্বরে। SK Telecom ২০০২ এর জানুয়ারীতে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ম থ্রি-জি চালু করে। মে ২০০২ এ KT দক্ষিণ কোরিয়ায় ২য় থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু করে। জুলাই ২০০২ এ Verizon Wireless আমেরিকায় সর্বপ্রথম থ্রিজি নেটওয়ার্কের সফল প্রবর্তন করে। পরবর্তী সময়ে AT&T ও যুক্তরাষ্ট্রে থ্রিজি প্রযুক্তি চালু করে। জুন ২০০৩ এ Hutchinson Telecommunications অষ্ট্রেলিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে থ্রিজি প্রচলন শুরু করে।

আফ্রিকায় প্রথম থ্রিজি নেটওয়ার্ক চালু করে Emtel. ২০০৭ সালের জুনের মধ্যে ২০ কোটি গ্রাহক বিশ্বব্যাপী থ্রিজি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হয়। তবে ৩০০ কোটি মোবাইল গ্রাহকের তুলনায় এই সংখ্যা একেবারেই নগন্য। জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় থ্রিজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ, প্রায় ৭০ শতাংশ। অন্যান্য যেসব দেশ থ্রিজি ব্যবহারে এগিয়ে আছে সেগুলো হচ্ছে ইটালী, ইংল্যাণ্ড, অষ্টিয়া, অষ্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুর।

চায়না ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর থ্রিজি মোবাইলের আনুষ্ঠানিক প্রচলন শুরু করে।

দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল সর্ব প্রথম থ্রিজি মোবাইল চালু করে। পাকিস্তান ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে, ভারত ১১ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে, আফগানিস্তান ২০১২ সালের ১৯মার্চ থ্রিজি প্রযুক্তির প্রবর্তণ করে। বাংলাদেশে City Cell একটি নেশনওয়াইড থ্রিজি মোবাইল ব্রডব্যাণ্ড সার্ভিস চালু করে; কিন্তু ভয়েস নেটওয়ার্ক না থাকায় প্রকৃত পক্ষে বাংলাদেশ এখনও টুজি যুগেই অবস্থান করছে; এক্ষেত্রে সরকারি কিছু বিধিনিষেধ ও সিদ্ধান্তহীনতা আমাদের টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমকে পিছিয়ে দিচ্ছে।

টু-জি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন এবং ফোর-জি সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

Level 0

আমি শাহীন শিমুল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 30 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া । অনেক কিছু জানা হল ।

পাকিস্তান এ ৩জি?? ভাই আপনি এই খবর কোথায় পেয়েছেন?? একটু ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখবেন। পাকিস্তান এ এখনো ৩জি স্পেকট্রাম বিক্কিরি হই নি। বরং পাকিস্তান এর আগে আপনাদের বাংলাদেশ ৩জি পরিসেবা পাচ্ছে। আর কলকাতায় এখন ৪জি পরিসেবা দিচ্ছে এয়ারটেল ১০ এপ্রিল থেকে। আর আমাদের ছোট শহর গুলতেও এখন ৩জি আছে। আমি যে শহর এ থাকি (কৃষ্ণনগর, নদীয়া, পশ্চিম বঙ্গ) এখানে ৪ টার ৩জি আছে – রিলায়েন্স, ভোডাফোন, এয়ারটেল আর বিএসএনএল। আর এয়রসেল খুব তাড়াতাড়ি আসবে। আর ভাল করে জেনে রাখুন পাকিস্তান এ কন ৩জি নেই। EVDO থাকলে থাকতে পারে কিন্তু ওটা CDMA সার্ভিস। আর ৩জি GSM।

3G chalu hole ki shudhu 3G mobile e internet er speed beshi pawa jabe naki 2G mobile er net er speed o barbe??

Level 2

good

একটা জিনিশ বুজতে পারলাম যে বাংলাদেশ এর সব মোবাইল কোম্পানি গুলা অন্যান্য দেশ এর ভুক্ত ভুগি । ওরা অন্য দেশ এর 3G দিয়া দেখে যে ওরা আর মোবাইল এ কথা কয় না । বেশির ভাগি ইন্টারনেট দিয়া কথা কয় । আর যেখানে London এ মোবাইল দিয়া কথা কইলে মিনিটে ২৫ টাকা লাগে সেইখানে ইন্টারনেট দিয়া কথা কইলে প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সা ও লাগে না । তাই এত জলদী ৩জি ভাল ভাবে আর কম খরছে পাচ্ছি বলে মনে হচ্ছে না । এতে সরকার এর কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে । নেটের বিল কমাতে হবে প্রতি জিবি ১০০ টাকা করতে হবে । আর ৩জি স্পিড ১৫০ টাকা করতে হবে । আর সবচেয়ে বড় কথা হোল BTRC থেকে ঘুশ খর দের সরাতে হবে ।

অনেক কিছুই জানলাম। শেয়ার করার জন্য হাজারো ধন্যবাদ @শাহীন শিমুল

ধন্যবাদ

ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য 🙂

Nice tune, sundor kore upostapon korat jonno thanks Bhaia. Keep it up..

Cool , keep it up

ভালো।