১৯৮৬ সালের এপ্রিলের ২৬ তারিখে সারা বিশ্বের মানুষ প্রত্যক্ষ করে ইতিহাসে বৃহত্তম দুর্ঘটনা । যা কিনা চারনোবিলের দুর্ঘটনা নামে পরিচিত । এই দুর্ঘটনায় ইউক্রেনের ৫০% এলাকা দূষিত হয় । আনুমানিক ২০০,০০০ মানুষকে স্থানান্তর করা হয় । ১.৭ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি এ দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয় । চারনোবিলের বিষাক্ত রেডিয়েশনে ক্যান্সার হয়ে মারা যায় আনুমানিক ১২৫.০০০ জন, । পরিষ্করণ, পুনর্বাসন ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ সহ মোট খরচের প্রায় $২০০ বিলিয়ন ডলার । শুধুমাত্র চারনোবিল নিউক্লিয়ার প্লান্টের জন্য ইস্পাতের (Quarantine) নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতে খরচ হয় $ ২০০ বিলিয়ন ডলার ।
মহাকাশ কলম্বিয়া ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে টেক্সাসের ধ্বংস হয় । শাটলটির মূল খরচ ১৯৭৮ সালে $২ বিলিয়ন. যে 'আজকের ডলার ৬.৩ বিলিয়ন । তদন্ত ব্যয় হয় $ ৫০০ মিলিয়ন । যা কিনা ইতিহাসের বৃহত্তম বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত । অনুসন্ধান এবং পুনরুদ্ধারের খরচ $ ৩০০ মিলিয়ন । দুর্ঘটনার কারন ছিল পাখা নিচে ছোট্র্ একটা ছিদ্র । মোট খরচের পরিমান $ ১৩ বিলিয়ন । যার পুরোটাই বহন করে আমেরিকান ইন্সটিটিউট এরোনটিক্স ও আস্ট্রোনটিক্স ।
২০০২ সালে নভেম্বর ১৩, তারিখে প্রেস্টিজ তেল ট্যাংকার ৭৭,০০০ টন ভারী জ্বালানী তেল বহন করছিল । স্পেনের সমুদ্র সীমার উপর দিয়ে যওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে বিস্ফোরণ হয় । জাহাজের ক্যাপ্টেন স্প্যানিশ উদ্ধার কর্মীদের থেকে সাহায্যের আবেদন জানায়। তবে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাপের কারণে জাহাজ উপকূলে আসতে ব্যর্থ হয় । পরবর্তীতে ক্যাপ্টেন ফরাসি ও পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষ থেকে সাহায্য পেতে চেষ্টা করে, কিন্তু তারা উক্ত জাহাজকে তাদের জলসীমানায় আসতে নিষেধ করে । ২০ মিলিয়ন গ্যালন তেল সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ে । পুনটেভেড্রা অর্থনীতিবিদ বোর্ডের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট পরিষ্করণ $ ১২ বিলিয়ন খরচ।
১৯৮৬ সালের ২৮ শে জানুয়ারীতে স্পেস শাট্ল চ্যালেঞ্জার উড্ডয়নের ৭৩ সেকেন্ডের পর লিকেজ এর কারনে ধ্বংস হয় । মহাকাশ ফেরির প্রতিস্থাপন খরচ $২ বিলিয়ন ১৯৮৬ সালে (বর্তমানে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার)। তদন্ত খরচ, সমস্যা সংশোধন, এবং হারানো সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন ১৯৮৬-১৯৮৭ (বর্তমানে ১ বিলিয়ন) থেকে $৪৫০ মিলিয়ন খরচ.
১৯৮৮ সালের ৬ ই জুলাই সমুদ্র উপকুল বর্তী দুর্ঘটনা হলোপাইপার আলফা অয়েল রিগ । এটা ছিল পৃথিবীর একক বৃহত্তম তেল উৎপাদক, প্রতিদিন তেল ৩১৭.০০০ ব্যারেল তেল উৎপাদন হত । নিরাপত্তার অংশ হিসেবে মেইনটেনেন্স টেকনিশিয়ানরা ১০০ টি নিরাপত্তা ভাল্বস্ সংস্কার করেন । ভুল বশত: ০১ টি ভাল্বস্ প্রতিস্থাপন করতে ভুলে যায় । ঐ দিন রাত ১০.০০ টার সময় তেল উৎপাদন শুরু করলে ২.. ঘন্টার মধ্যে ৩০০ ফুট লম্বা এই Oil Rig ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয় । ক্ষতির পরিমান ১৬৭ কর্মীদের প্রাণনাশ এবং $৩.৪ বিলিয়ন ডলার
The Exxon Valdez তেল স্পিল ছিল বিশ্বের বৃহত্তম তেল স্পিল এবং ব্যয় বহুল । কারণ এটি ছিল একটি দুর্গোম এলাকায় (Prince William Sound) (শুধুমাত্র হেলিকপটার এবং বোট দ্বারা ব্যবহারযোগ্য). ১৯৮৬ সালের ২৪ শে মার্চ তেল ১০.৮ মিলিয়ন গ্যালন তেল নিয়ে জাহাজের মাস্টার, Joseph Hazelwood নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কোরাল রিফে আঘাত করে । পরিষ্কার খরচ ২.৫ বিলিয়ন ডলার
২০০৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারী Guam air base থেকে উড্ডয়নের পর পর কম্পিউটারের সমস্যার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয় । মোট ক্ষতির পরিমান ১.৪ বিলিয়ন ডলার ।
২০০৮ সালে ১২ই সেপ্টেম্বর ঘটে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা । মেট্রোলিংক কমিউটার এবং ইউনিয়ন প্যাসেফিক ফ্রেইট এর মুখোমুখি সংঘর্ষে কারনে এটা ঘটে । কন্ডাকটর টেক্সট মেসেজে এ ব্যস্ত থাকার কারনে লাল সংকেত দেখতে পায়নি । মোট ক্ষতির পরিমান ৫০০ মিলিয়ন ডলার, নিহত ২৫ জন।
২০০৪ সালের আগষ্ট মাসের ২৪ তারিখে একটি প্রাইভেট কার জামার্নীর Wiehltal Bridge এর উপর ট্যাংকার ট্রাককে আঘাত করে । ট্যাংকার ট্রাক সিড়ির রেলিং ভেংগে ৯০ ফুট নিচে পড়ে যায় , এবং বিশাল এক বিষ্ফোরণ হয় । ব্রিজ টি মেরামত সংস্কার হয় $৪০ মিলিয়ন ডলার এবং পরবর্তিতে নতুন নির্মান খরচ $৩১৮ মিলিয়ন । মোট ক্ষতির পরিমান ৩৫৮ মিলিয়ন ।
টাইটানিকের এর দুঘর্টনা সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত দুর্ঘটনা । কিন্তু ব্যয়বহুল তালিকায় এর স্থান ১০ নম্বর । ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল এটি ধ্বংস হয় । বরফের সাথে ধাক্কা খেয়ে এর সলিল সমাধি হয় । ক্ষতির পরিমাণ ১৯১২ সালের ৭ মিলিয়ন যা বর্তমানে ১৫০ মিলিয়ন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ১৫০০ ।
আমি এই মেঘ এই রোদ্দুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 42 টি টিউন ও 315 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
টাইটেনিকের ক্ষতির পরিমান জানার পরই বুঝলাম উপরের গুলা কত বড় ব্যায়বহুর দুর্ঘটনা 😛