গেল ২৮ শে আগস্ট বাংলাদেশের বাজারে লঞ্চ করা হয় রিয়েলমি নাজরো থার্টি। কিছুদিন হলো বাংলাদেশের বাজারে এটি অফিশিয়াল লঞ্চ করা হয়েছে। ৬/১২৮ জিবি ভেরিয়েন্ট আর এই স্মার্টফোনটি বাংলাদেশের বাজারে লঞ্চ করা হয়েছে কেবল মাত্র একটি ভ্যারিয়েন্ট যার দাম(realme narzo 30 price in bangladesh) নির্ধারণ করা হয়েছে 20000 টাকা!
রিয়েল মির প্রত্যেকটি স্মার্টফোন নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে আলাদা এক ধরনের আগ্রহ কাজ করে। এমনকি সেটার রিয়েল মি লাভার নন, তারাও কিন্তু ইউটিউব ঘেটে অথবা গুগল করে এই ফোনের স্পেসিফিকেশন এবং রিভিউটি দেখে নিতে ভোলেন না।
আর যদি সেটা হয় না নাজরো সিরিজের কোন স্মার্টফোন তাহলে তো কথাই নেই। আর তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের বাজারে অফিশিয়াল লঞ্চ হওয়া রিয়েলমি নাজরো থার্টি স্মার্টফোন নিয়ে!
তাহলে আর দেরি কিসের! দেখে নেওয়া রিয়েল মির অন্যতম সফল স্মার্টফোন নাজরো ৩০ সম্পর্কে স্পিসিফিকেশন এবং ছোট্ট একটা রিভিউ!
তাহলে চলুন শুরু করা যাক …
বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোনের মূলত লঞ্চ করা হয়েছে দুইটি কালারে একটি ব্লু এবং অপরটি সিলভার। অলমোস্ট পুরোটাতেই ফ্ল্যাট একটি ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে! বাম পাশে এরো শো ডীজাইন ব্যবহার করা হয়েছে, যেখান থেকে লাইট রিফ্লেক্ট করে!অসাধারন!
পেছনে রেয়ারে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিক বিল্ড। খুব সহজেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট বসে যায়, কাজে একটা পরামর্শ থাকবে, এর গ্লোরিয়াস ডিজাইন টি অক্ষুন্ন রাখতে চাইলে অবশ্যই একটি কভার ব্যবহার করুন।
সামনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে গ্লাসবিল্ড! সুতরাং বুঝতেই পারছেন সামনের দিকে একটা গ্লাস প্রটেক্টর ব্যবহার করা কতটুকু জরুরী।
স্পোর্টস এবং বাটনগুলো রিয়েল মির আর বাদবাকি ফোন গুলোর মতই! খুব একটা পরিবর্তন আনা হয়নি! তবে অন্য ফোনগুলোর তুলনায় কিছুটা ইউনিকনেস রয়েছে ডিজাইনে!
এখানে মূলত ব্যবহার করা হয়েছে সাড়ে ছয় ইঞ্চির একটি আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। অনেকে হয়তো বলবেন এই বাজেটে অন্য স্মার্টফোনগুলো সাধারণত সুপার এমোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করছে। তবে এখানে রিফ্রেশ রেট প্যানেল ব্যবহার করার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে রিয়েলমি নাজরো থার্টি। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে 90 হার্জ রিফ্রেশ রেট প্যানেল! ফোনের পিপিআই যথেষ্ট ভালো। কালার ব্রাইটনেস শার্পনেস ডিটেইলস সবকিছু বাজেট অনুযায়ী একদম অসাধারণ।
একদম ডাইরেক্ট সানলাইট এ কিছুটা অসুবিধা করতে পারে! যেটা কিনা অলমোস্ট সব ফোনেই হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য জায়গায় ব্রাইটনেস নিয়ে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হবে না আশাকরি।
টাচ রেসপন্স এক কথায় অসাধারণ।
মোবাইলটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে সাইট বাটন ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার। ঠিকঠাক মতো আংগুল পৌঁছতে পারলে বেস যথেষ্ট ভাল রেসপন্স করেন।
এবার কথা বলা যাক এই ফোনটির প্রসেসর নিয়ে!
ব্যবহার করা হয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও ৯৫ এসিসি। সাধারণত 20 হাজার টাকা বাজেটের ফোন গুলোতে মিডিয়াটেক হেলিও 95 এসিসি প্রসেসরটাই বেস্ট বলে মনে হয়! গেমিং এর ক্ষেত্রে অসাধারণ।
এর সাথে থাকছে অ্যান্ড্রয়েড ইলেভেন এবং রিয়েল মি ওয়াই টু পয়েন্ট জিরো। সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ল্যাক লক্ষ করা যাবে না।
এখানে ব্যবহার করা হয়েছে 6 জিবি রেম এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজ! 20 হাজার টাকা বাজেটের ফোন গুলোতে 6 জিবি রেম থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক!
এখানে পাবজি খেলা যাবে এইচডি হাই ফ্রেম রেটে!যদিও পাবজি সম্প্রতি সময় বাংলাদেশ থেকে ব্যান করে দেওয়া হয়েছে।
পাবজি ব্যতীত এই ধরনের অন্য যে সকল সমগোত্রীয় গেম রয়েছে সেগুলো বেশ স্মুথ ভাবে খেলা যাচ্ছিলো।
টানা 2 ঘন্টা খেলেও বিন্দুমাত্র ফ্রেম ড্রপ লক্ষ করা যায়নি। কোন খুব একটা গরম হয়নি!
সুতরাং বুঝতেই পারছেন. বাজেট অনুযায়ী গেমিং এর ক্ষেত্রে এই ফোনটি আপনাকে বিন্দুমাত্র হতাশ করবে না, করার অবকাশ অব্দি নেই।
পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে তিনটি ক্যামেরা। ফোকাস সেন্সরটি 48 মেগাপিক্সেল এর। সাথে ব্যবহার করা হয়েছে দুই-মেগাপিক্সেল আরো দুইটা সেন্সর।
ফ্রন্টে ব্যবহার করা হয়েছে 16 মেগাপিক্সেল এর একটি সেলফি ক্যামেরা।
20 হাজার টাকা বাজেট অনুপাতে এর ফোকাস সেন্সর এক কথায় অসাধারণ ছিল।
ব্রাইটনেস- ডিটেলস- শার্পনেস সবকিছুই বেশ ভালোভাবে ধরে রাখতে পারছিল। রিয়েলমির প্রায় অধিকাংশ ফোন কালার কিছুটা বাুস্ট আপ করে দেয়। ব্যাতিক্রম কিছু হয়নি এই ফোনের বেলায়।
লো লাইটে ছবি তোলার সময়য় কিছুটা ডিটেলস ড্রপ করে। তবে আমার মনে হয় না সেটা বড় কোন ইস্যু।
বাকি দুইটি সেন্সর বাজেট অনুযায়ী বেশ ভালো!
তবে আমার একটা সাজেশন থাকবে, এখানে যেকোনো একটা সেন্সর কম দিয়ে আল্ট্রাওয়াইড ব্যবহার করার!
সামনের সেলফি ক্যামেরাটা এভারেজের কাতারে বলা চলে! শোশীয়াল মিডিয়া রেডিমেড ছবি পেয়ে যাবেন খুব সহজে!
যদি স্পিকার কোয়ালিটির কথা বলি তাহলে বলতে হয়! বেশ যথেষ্ট ভালো! ফুল ভলিউমেও কোনো ধরনের ডিস্ট্রাক্ট পাওয়া যায়না। যদিও স্টেরিও ব্যবহার করলে পার্ফর্ম্যান্স আরো ভালো হতো। স্পিকার এক কথায় বেশ লাউড এন্ড ক্লিয়ার!
ব্যাটারি হিসেবে থাকছে 5 হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার একটু হিউজ ব্যাটারি ব্যাকআপ। বক্সে দেয়া থাকবে 30 ওয়াটের একটি চার্জার, যেটি কিনা অবশ্যই ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজি সম্পন্ন।
সাধারণত ফোনটা ফুল চার্জ করতে এক ঘণ্টার বেশি সময় প্রয়োজন হয়। আপনি যদি ৯০ হার্জ রিফ্রেস রেট অন রাখেন, তবুও প্রায় ১ দিনের ব্যাটারী ব্যাকাপ পেয়ে যাবেন!
রেগুলার ইউজার হলে আরো ১ দিন ব্যাকাপ পেয়ে যাবেন!
বলতে গেলে রিয়েলমির এই স্মার্টফোনটি প্রায় প্রত্যেকটি সেক্টরে বেশ ভালোই পার্ফর্ম্যান্স করে!তবে ফোনের মূল আকর্ষণ ছিলো এই রিফ্রেশ রেট প্যানেল এবং অসাধারণ একটি প্রসেসর!
গেমারদের জন্য বেশ ভালো! হ্যাভি ইউজে খুব একটা সমস্যা, বা ল্যাক বা পার্ফর্ম্যান্স ড্রপ যাই বলি না কেনো, সমস্যা হবার কথা নয়!
সব মিলিয়ে রিয়েলমি নাজরো থার্টি দেবে আপনাকে একটা পার্ফেক্ট কম্বিনেশন এবং সুপার এক্সপেরিয়েন্স!
আমি ইসতিয়াক উল্লাস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।