গ্রামীণফোন সম্বন্ধে নতুন করে বলার কিছু নেই। দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এটি। ০১৭ কোড ব্যবহার করা এই কোম্পানিটি সেই ১৯৯৭ সালের ২৬শে মার্চ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৫০% এরও বেশি মোবাইল ফোন মার্কেট দখল করে আছে। গ্রামীণফোন মোবাইল নাম্বারগুলোতে ০১ এর পর “৭” থাকলেও এটি লাকি সেভেন হিসেবে ভাবার কোন অবকাশ নেই। বরং ওখানে “৭” এর বদলে অন্য যেকোন ডিজিট থাকলে আপনি কম রেটে বেশি সেবার অফার পাবেন। গ্রামীণফোনের একমাত্র প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে এর নেটওয়ার্ক। আর এ কারণেই অনেকে একবার জিপি সিম কিনে বিভিন্ন কারণে আর নম্বর পরিবর্তন করতে পারেননা।
আমি জানি, অনেকেরই “গ্রামীণফোন” শব্দটির প্রতি অনেক বিরক্তি এমনকি এলার্জিও আছে। আমার নিজেরও আসলে এর প্রতি বিশেষ কোন “টান” নেই। সবারই ঐ এক কথা, “অতিরিক্ত চার্জ”।. হ্যাঁ ঘটনা সত্যি। এই কোম্পানিটি সব জায়গায় সবার থেকে বেশি চার্জ করে। আর এই কারণে বর্তমানে অনেকেই এদের থেকে শিফট করার প্রক্রিয়ায় আছেন।
যাই হোক, এবার আসল কথায় আসি। এত কিছুর পরেও আমি গ্রামীণফোন ব্যবহার করি। বাস্তবতা হচ্ছে এখনও ভাল বিকল্প না পাওয়ায় ওদের “বড়লোকি” চার্জের সেবা নিতে আমি বাধ্য। আমি জানি, শুধু আমি না, আরো অনেকেই এই দলে আছেন।
আমাদের গ্রামের বাড়িতেও (শুধুমাত্র) গ্রামীণফোনের ফুল-নেটওয়ার্ক এক্সেস পাওয়া যায়। ইন্টারনেট স্পীডও গড়ে ২২ কিলোবাইট পাই। বেশ কয়েক বছর আগে সেখানে ওদের বিটিএস স্থাপন করে যদিও তারো আগে তেমন কোন অসুবিধা ছাড়াই আমরা জিপি নেটওয়ার্ক পেতাম। দেশে তো এখন বেশ কয়েকটি মোবাইল কোম্পানি যার মধ্যে সরকারি মালিকানাধিনও একটি রয়েছে, কই তাদেরকে তো সেখানে দেখছি না! শুধু টিভিতে টাওয়ারের এড দিয়ে তো আর সেবা হয় না, কিছু কাজও করা লাগে। ২ পয়সা কম কলরেট দিয়ে কি হবে যদি নেটওয়ার্কের অভাবে কলই করা না যায়? তোমার সেবা তুমিই নাও। রং-বেরংয়ের মডেল দিয়ে নাচানাচি করিয়ে এড দিলে তার ফল টিভি স্ক্রিন পর্যন্তই দেখা যায়, মোবাইল পর্যন্ত আর পৌঁছায় না।
এখন পর্যন্ত দেশে যত ওয়্যারলেস ইন্টারনেট প্রভাইডার থাকুক না কেন, বেশিরভাগ এলাকায়ই তাদের সেবা পাওয়া যাবেনা। তার মানে কি এই যে অন্যরা এটা পাওয়ার যোগ্য না? ইন্টারনেট এখন খুব দরকারি সেবা। আমার জিপি ব্যাবহারে পেছনে এটাই ৮৫% দায়ী। আমার ক্যাম্পাসে (পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) এয়ারটেল বাদে সব মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। কি অবাক কান্ড! দক্ষিণবংগের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও এয়ারটেল আসতে পারেনি। এটা ওদের ব্যর্থতা নাকি অন্য কিছু আল্লাহ্ই জানেন!
ইন্টারনেট প্যাকেজে জিপির চেয়ে অন্যরা একটু বেশি ছাড় দিয়ে থাকে। কেউ দেয় ২৫ টাকা আবার কেউ দেয় ৫০ টাকা ছাড় (১ জিবি তে) আরও অনেক কিছু আছে যা আমার চেয়ে আপনারাই ভাল জানেন। তো, কিছুদিন জিপি বাদ দিয়ে কম দামে অন্য একটা কম্পানির নেট নিলাম। কিন্তু তার স্পীড দেখে ২৫ টাকা বাঁচানোর আনন্দ চরম বিরক্তিতে পরিণত হল। জিপি পোস্টপেইডের ডেইলি নেট প্যাকেজে ৯ টাকায় রাত ১২ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত নেট সুবিধা থাকায় ডাউনলোডেও তেমন চিন্তার কিছু নেই।
এতদিনে জিপি ছাড়া বাকি সবই ট্রাই করা হয়ে গেছে। আসলে জিপির কাছে আমার মত গ্রাহক কানে দড়ি লাগিয়ে বাঁধা- ছেড়ে যাবার উপায় আপাতত নাই। অন্যসব কোম্পানি যেখানে নিত্য নতুন মডেল দিয়ে নাচানাচি করে এড দেয় কিন্তু বিশাল গ্রাহকের প্রতি সামান্য দায়িত্ববোধ অনুভব করেনা, আমার দরকার নেই তাদের ২ পয়সা কম কলরেট। প্রয়োজনীয় কথা বলতে তোমাদের ভাঙ্গা নেটওয়ার্কের এক সেকেন্ড পালস দিয়ে কি হবে যদি কথাই না শোনা যায়? সেখানে ইন্টারনেটের কথা তো বাদই দিলাম।
অনেকেই হয়ত বলবেন “এই লোক জিপির মার্কেটিং করতেছে নাকি?”। .আসলে আমি কোম্পানিগুলোর উপর বিরক্তির কারনে এই পোস্টটা দিলাম- যারা মুখে বড় বড় কথা বলে কিন্তু কাজের বেলায় শূণ্য।
আমি আরাফাত বিন সুলতান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 197 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আপনার যুক্তি ঠিক আছে কেননা জিপি এর নেটওয়ার্ক খুব ভালো। এজন্য তারা অনেক এগিয়ে যেতে পারবে। তবে আমি বাংলালায়নে খুশি, মাসিক ১১৫০৳, প্রতিদিন ৪+ গিগাবাইট ডাউনলোড। কারণ বিটিসিএল, রবি, গ্রামীনফোন, ওয়ারিদ [বিশ্রী ইন্টারনেট ছিল] আর টেলিটক [জিপিআরএস] সবই ব্যবহার করে দেখেছি।