মোবাইল, ট্যাবলেট এবং কম্পিউটার যেন আমাদের জীবনের সাথে মিশে গেছে। এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা যে মোবাইল ব্যবহার করেনা। ব্যাংকমাইসেলের তথ্যমতে ২০২২ সালে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারির সংখ্যা ৭.২৬ বিলিয়ন এবং ২০২৫ সালে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে ৭.৪৯ বিলিয়ন।
প্রতিটা মোবাইল ফোন অথবা ইলেক্ট্রনিক পণ্যের একটা লাইফ টাইম থাকে। ঠিক একটা সময় পর এটার কোন কোন ত্রুটি দেখা দিবে। তাছাড়া আমরা অনেকেই অসাবধানতার কারনে ফোন ফেলে দিই বা পড়ে যাই। নতুন ফোন কেনা সবসময় সবার পক্ষে সম্ভব না। আবার পুরাতন ফোনে আমাদের অনেক ছবি বা প্রয়োজনীয় জিনিস থাকে যেগুলো দরকার লাগে তাই রিপেয়ার করার কোন বিকল্প থাকেনা।
যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। তবে প্রতিটা ব্যবসার জন্য আলাদা কিছু নিয়ম থাকে। তো আসুন আমরা জেনে নেই কি কি ধাপ ফলো করতে হবে।
মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসায় আপনাকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনের বিভিন্ন জিনিস মেরামত করতে হবে অথবা সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর এই ব্যবসা কখনোই সম্ভব না যদি রিপেয়ারিং জানা না থাকে।
সাধারনত আপনি দুই ভাবে ফোন রিপেয়ারিং শিখতে পারেন।
অফলাইনঃ বাংলাদেশের অনেকেই আছে যারা টাকার বিনিময়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আপনি তাদের থেকে শিখতে পারেন। তবে সাবধান থাকবেন প্রতারণায় যেন না পড়েন।
আবার চাইলে আপনার এলাকায় বা পাশের কোন রিপেয়ারিং দোকানে বড় ভাইদের সাথে কাজ করতে পারেন। বেশিরভাগ লোক এইভাবেই কাজ শিখে থাকে। এতে আপনার সময় বেশি লাগে কিন্তু আপনি ভালোভাবে শিখতে পারবেন।
অনলাইনঃ আমরা এখন চাইলে প্রায় সবকিছুই অনলাইনে শিখতে পারি। অনলাইনে রিপেয়ারিং শেখার অনেক জায়গা আছে। ইউটিউব ব্যবহার করে আপনি রিপেয়ারিং শিখতে পারেন। আপনি যদি দ্রুত এবং ভালোভাবে শিখতে চান তবে Udemy থেকে শিখতে পারেন। তবে এখানে আপনাকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে।
ফোন রিপেয়ারিং ব্যবসার জন্য মূলধন কত লাগে? আসলে এই ব্যবসার কোন নির্দিষ্ট খরছ নাই। এখানে কোন কিছু নির্ভর করে ব্যবসা করার সময়। যেমন আপনি যদি কোন ভালো জায়গায় আপনার দোকান নেন তাহলে আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হবে। আবার আপনার যত বেশি যন্তপাতি লাগবে তার উপরেও এটা নির্ভর করে।
মূলধন জোগাড় করতে আপনাকে আপনার নিজের টাকা বা কারোর সহযোগিতা নিতে পারেন। প্রথম ধাপে বাংলাদেশের কোন ব্যাংক আপনাকে লোন দিবেনা সাধারনত। তবে ব্যবসা শুরু করার পর আপনি চাইলে কোন ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। তবে আপনাকে তাদের সব শর্ত পুরন করতে হবে।
আপনার ব্যবসার জায়গা যদি ভালো না হয় তবে আপনি ভালো করতে পারবেন না। এমন অনেককেই দেখেছি তার দোকানের জায়গা ভালো তাই তার ব্যবসা ভালো। সবসময় চেস্টা করবেন এমন কোন জায়গায় দোকান নেবার যেখানে মানুষের আসা যাওয়া বেশি অথবা যেখানে আপনার চাহিদা আছে।
মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসায় আপনার অনেক যন্ত্রপাতি লাগবে। শুধু কিছু টুলস দিয়েও আপনি ব্যবসা চালিয়ে দিতে পারবেন কিন্তু ভালোভাবে যদি করতে চান তাহলে আপনাকে অনেক নতুন যন্তপাতি কিনতে হবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে। আপনি বাংলাদেশের লোকাল দোকান থেকে অনেক যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন আপনার দোকানের জন্য।
সময়ের সাথে সাথে আপনার দোকানের যখন চাহিদা বাড়বে তখন আপনার আরো লোক লাগবে। সেক্ষেত্রে চেস্টা করবেন কয়েকজন টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেবার।
বাংলাতে একটা কথা আছে প্রচারণায় প্রসার। আপনি যত বেশি প্রচারণা চালাবেন আপনার ব্যবসা তত বেশি প্রসার হবে। আপনি অনেকভাবে আপনার ব্যবসার প্রচারণা চালাতে পারেন। ফেসবুক বা গুগলে আপনার বিজ্ঞাপণ দিতে পারেন। যেটা বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
আপনি আপনার লোকাল এরিয়ার ক্যাবল টিভিতে বিজ্ঞাপণ দিতে পারেন। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মোবাইল রিপেয়ারিং ব্যবসাগুলো এলাকা ভিত্তিক হয়ে থাকে তাই লোকাল টিভিই সবচেয়ে ভালো উপায়।
মোবাইল টেকনোলজি সবসময় নতুন কিছু নিয়ে আসতে ব্যস্ত। তাই আপনাকে নতুনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার নতুন নতুন রিপেয়ারিং যন্ত্রপাতি লাগবে যেগুলো আপনার ব্যবসাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে যেসব যন্তপাতি আপনি তার বেশিরভাগই চায়না থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। আপনি চাইলে যেকোন দেশ থেকেই রিপেয়ারিং যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে পারেন। কিন্তু দিনশেষে আপনাকে মনে রাখতে হবে সঠিক পণ্য কম দামে কেনার।
আপনি চায়নার বড় মার্কেট আলিবাবা বা Rewa Technology থেকে নতুন রিপেয়ারিং যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন।
ব্যবসা বাড়ার সাথে সাথে আপনাকে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
প্রতিটা ব্যবসায় সুনাম খুব বড় একটা বিষয়। আপনি হয়তো এখানে অনেক কিছুই উল্লেখ করিনি। যেমন সকলের সাথে মিষ্টভাষী হওয়া। আপনি শুধু ভালো পারেন বলেই মানুষ আপনার কাছে আসবেনা। আপনাকে সবার সাথে সুন্দর ভাবে কথা বলতে হবে এবং কাস্টমারদেরকে খুশিও করতে হবে।
সবার জন্য শুভকামনা রইল। যদি কোন কিছু জানার থাকে টিউমেন্ট করতে ভুলবেন না।
আমি তারিকুর রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 23 টি টিউন ও 60 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।