স্যামসাং গ্যালাক্সী ট্যাবটা হাতে আসার পর এটা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েই যাচ্ছি। কিছু দিন বাদে হয়তো উৎসাহ হারিয়ে ফেলব (বরাবর যা হয় আর কি)। তাই, দেরি না করে ভাবলাম লিখে ফেলি ঝটপট।
শুরুতেই বলে রাখি, এই লেখা এনড্রয়েড বা লিনাক্স গুরুদের জন্য নয়। আম জনতার জন্য বলা কিছু কিছু কথা গুরুদের কাছে হাসির ব্যাপার হতে পারে। তাই লিনাক্স গুরুসকল! আপনারা সময় নষ্ট করবেন না।
রুটিং বা এধরনের কোন কাজ করার আগে একটু ভাল করে জেনে নেবেন। কোনরকম ত্রুটির কারণে আপনার মূল্যবান ফোন বা ট্যাবলেট পিসিটি মূল্যহীন ‘ইট’ (brick) হয়ে যেতে পারে। আমার এই লেখা আপনার এনড্রয়েড ডিভাইসের জন্য সম্পূর্ণ বা নির্ভুল নয়। তাই এই ধরনের কাজ আপনাকে নিজ ঝুঁকিতে করতে হবে। ডিভাইস রুটিং করলে আপনার ওয়ারেন্টি অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। তাই সাবধান!
গ্যালাক্সী ট্যাব আর এনড্রয়েড নিয়ে গুগল করতেই কয়েকটা নতুন টার্ম চোখে পড়ল। যেমনঃ রুট করা, রুটিং, ফ্ল্যাশ করা, কাস্টম রম, স্টক রম, ব্রিক-আনব্রিক ইত্যাদি।
রুটিং মানে একটি ডিভাইসের রুট-লেভেল এক্সেস পাওয়া। লিনাক্স গুরুরা এটা ভাল বুঝবেন, আমি উইন্ডোজ ব্যবহার করি - তাই আমার মত আম জনতার কাছে এটা হলঃ আমার ডিভাইসটির উপর আমার সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। যদিও এনড্রয়েড ওপেন সোর্স, কিন্তু বিভিন্ন এনড্রয়েড ফোন ও ডিভাইস নির্মাতারা এনড্রয়েডের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ব্যবহারকারীকে দেয় না।
রম বলতে যদিও আমরা রিড অনলি মেমরী বুঝি - এখানে রম বলতে এনড্রয়েডের বিভিন্ন ভার্সনের অপারেটিং সিস্টেম বোঝায়।
ফ্ল্যাশ করা মানে হল ডিভাইসটির মধ্যে অপারেটিং সিস্টেম বা রমকে সরিয়ে আপনার পছন্দের অপারেটিং সিস্টেম বা রম ইন্সটল করা।
স্টক রম মানে ডিভাইসটির নির্মাতা যে অপারেটিং সিস্টেম সরবরাহ করে থাকে।
কাস্টম রম মানে ওপেন সোর্স জগতের মানুষের তৈরি করা মনের মাধুরী মেশানো কাস্টমাইজড রম বা অপারেটিং সিস্টেম।
ব্রিক (brick) মানে হল আপনার ডিভাইসটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাওয়া - যাকে বলা যায় মূল্যহীন ‘ইট’ হয়ে যাওয়া (এটা মূলতঃ ত্রুটিপূর্ণ ফার্মওয়্যার ইন্সটলেশনের কারণে হয়ে থাকে)। আনব্রিক(unbrick) করা মানে আপনার ডিভাইসটিকে মূল্যহীন ইটের অবস্থা থেকে ফিরিয়ে এনে কার্যকরী ফোন বা ট্যাবলেট পিসি করে তোলা।
ভালই তো চলছে, কেন ঝামেলা করে রুটিং করব? এই প্রশ্নের উত্তর হলঃ আপনার ডিভাইসটিকে কি সম্পূর্ণ আপনার নিয়ন্ত্রণে আনতে চান না? যদি চান, তাহলে বাকিটা পড়ুন, না হলে দরকার নেই। রুটিং এর মাধ্যমে আমরা যা পেতে পারিঃ
- রুটিং আপনাকে এনড্রয়েড এর সুপার-ইউজার এক্সেস দেয়।
- আপনার এনড্রয়েড ডিভাইসে কি থাকবে আর কি থাকবে না তা নিশ্চিত করা। ডিভাইস নির্মাতারা ডিফল্ট হিসেবে অনেক সফটওয়্যার দিতে পারে যা আপনার পছন্দ নয়। রুটিং ছাড়া আপনি এগুলো আন-ইন্সটল করতে পারবেন না।
- এনড্রয়েড মার্কেটে বা অন্য এনড্রয়েড সফটওয়্যার সাইটে পাওয়া অনেক দারুণ দারুণ সিস্টেম সফটওয়্যার থাকে যা দিয়ে বিভিন্ন টুইক করা যায়। এ সমস্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হলে ডিভাইসটকে রুটিং করতে হয়।
- বিশেষজ্ঞরা অনেকেই বলেন, রুটিং করলে অনেক ডিভাইসের পারফর্মেন্স বাড়ে। ওভারক্লকিং করতে রুটিং লাগে।
- ধরুন আপনি আপনার মোবাইলটিকে একটি এলইডি টর্চ হিসাবে ব্যবহার করবেন। রুটিং করা না থাকলে এই ধরনের কোন ইউটিলিটি সফটওয়্যারই কাজ করবে না। ঠিক তেমনি আপনার ডিভাইসটির ১০০% কে কাজে লাগাতে এমন অনেক সেটিং প্রয়োজন হবে যার জন্য রুট এক্সেস থাকতে হবে।
- অনেক ইনবিল্ট ফিচার - যা একটি ডিভাইসে সাপোর্ট করে অথচ অন্য ডিভাইসে সাপোর্ট করে না - রুটিং এর মাধ্যমে ঠিক করে দেয়া যায়। যেমন ধরুন লাইভ ওয়ালপেপার এনড্রয়েডের একটা চমৎকার ফিচার। Samsung Galaxy Spica এর এই ফিচারটি চালানোর ক্ষমতা থাকলেও বাই-ডিফল্ট লাইভ ওয়ালপেপার এই ফোনে চলে না। রুটিং করে ফেলুন - চমৎকার কাজ করবে।
- আপনার ডিভাইসটির ওয়াই-ফাই/ব্লু-টুথ সংযোগকে মাধ্যমে সহজেই ইন্টারনেট সংযোগ শেয়ার বা ডাটা ট্রান্সফার জাতীয় কাজ করতে লাগবে ওয়াই-ফাই/ব্লু-টুথ টেথারিং যা একমাত্র রুটেড ডিভাইসেই সম্ভব।
- বাংলা ফন্ট ইন্সটল করবেন। রুটিং লাগবে।
‘অনেক কিছুই তো জানলাম, এবার রুটিংটা করব কিভাবে?’
এই উত্তরের জন্য “এনড্রয়েড সমাচার - এনড্রয়েড রুটিং-২” এ যেতে হবে। লিখাটা শুরু করেছি - একটু সময় লাগবে।
আমি মোহাম্মদ ইউসুফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 1053 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ অনেক কিছু জানলাম চালিয়ে যান ……।