আপনি অবশ্যই ব্রডব্যান্ড এর দুর্মারগতি পেতে ভালোবাসেন। কিন্তু সবচাইতে অসুবিধা হলো—এই লাইনটি আপনার ঘরের টেলিফোন লাইনের সাথে বাঁধা থাকে। অর্থাৎ আপনি যখন বাসে কিংবা ট্রেনে ভ্রমন করছেন কিংবা যখন আপনি ঘর থেকে বাহিরে রয়েছেন—তখন ব্রডব্যান্ড আপনাকে খুব একটা সাহায্য করবে না। এই অবস্থায় যেকোনো স্থানে ব্রডব্যান্ড পেতে আপনাকে কি করতে হবে? ধন্যবাদ দিন, আজকের চরম উন্নতি প্রাপ্ত সেলফোন নেটওয়ার্ককে—যার ফলে যেখানে ইচ্ছা সেখানে মোবাইল ব্রডব্যান্ড, ওয়্যারলেস ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পাওয়া সম্ভব তাও আবার আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। তো কীভাবে এই মোবাইল ব্রডব্যান্ড কাজ করে? চলুন বন্ধুরা, একদম নিকট দৃষ্টিপাত করে আসে সম্পূর্ণ বিষয়টির উপর।
মোবাইল ব্রডব্যান্ড মূলত অনেক সহজ একটি আইডিয়ার উপর কাজ করে, কিন্তু এটি বর্ণনা করা একটু মুশকিল। তাই এই টিউনে সাধারণ বিষয় এবং টেকনিক্যাল বিষয় উভয়ের উপরই ধারণা প্রদান করার চেষ্টা করবো। আর আপনি যদি এখনো না জানেন যে, সেলফোন কীভাবে কাজ করে বা ইন্টারনেট কীভাবে কাজ করে—তবে তার উপরে বিস্তারিত টিউন গুলো পড়ে নিতে পারেন।
মোবাইল ফোন ল্যান্ড লাইনের উপর অনুপ্রানিত করে তৈরি করা। আপনি যখন ল্যান্ড লাইনে কথা বলেন, তখন আপনার ফোন সেট এবং আপনার কলারের ফোন সেটের মধ্যে একটি সরাসরি কানেকশনের সৃষ্টি হয়—যা সার্কিট সুইচিং নামে পরিচিত। আপনি যখন ল্যান্ড লাইনে কথা বলতে থাকেন তখন আপনার লাইন সম্পূর্ণ ব্লক অবস্থায় থাকে—এবং আপনি তা আর অন্য কোন কাজে ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু আপনার টেলিফোন লাইনে যদি ব্রডব্যান্ড লাইন থাকে, তবে এটি সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে আপনার টেলিফোন লাইন দুইভাগে বিভক্ত থাকে। একটি লাইনে সার্কিট সুইচিং এর মাধ্যমে আপনি কল করতে পারেন, যা আগে করতেন এবং আরেকটি লাইন সর্বদা কম্পিউটার ডিজিটাল ডাটা আদান প্রদান করতে পারে, আর এখানে প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে। প্যাকেট সুইচিং এবং সার্কিট সুইচিং এর মধ্যে পার্থক্য জানতে আমার লেখা ইন্টারনেট সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
পূর্বের সেলফোন গুলো সার্কিট সুইচিং প্রযুক্তিতে মোবাইল ব্রডব্যান্ড প্রদান করে থাকতো, যা অনেক অদক্ষ পদ্ধতি ছিল এবং অনেক ধীর গতির ইন্টারনেট পাওয়া যেতো। কিন্তু পরে সার্ভিস প্রভাইডাররা তাদের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিতে উন্নতি নিয়ে আসেন এবং প্যাকেট সুইচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আরম্ভ করেন, এর ফলে উদ্ভাবিত হয় তৃতীয়-প্রজন্ম মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ৩জি এর। ৩জি তে ডাটা স্পীড ছিল স্লো স্পীড ল্যান্ড লাইন ব্রডব্যান্ড লাইনের মতো (৩৫০কেবিপিএস—২এমবিপিএস)। কিন্তু সময়ের সাথে ইঞ্জিনিয়াররা মোবাইল নেটওয়ার্ক এর আরো উন্নতি সাধিত করে, এবং প্যাকেট সুইচিং প্রযুক্তিকে আরো দক্ষ এবং আরো বেশি ডাটা প্রবাহ করার উপযোগী করে গড়ে তোলে।
তাই ৩জি রুপ পেয়ে যায় “HSDPA” (High-Speed Downlink Packet Access) তে, যা ৩.৫জি নামেও পরিচিত। এই মোবাইল নেটওয়ার্ক ৩জির তুলনায় প্রায় ৫গুন বেশি দ্রুতগতি সম্পন্ন। যাই হোক, বর্তমানে ৪জি চলে এসেছে এবং অনেক দেশে এই প্রযুক্তির সুবিধাও নেওয়া শুরু হয়ে গেছে। ৪জি কে মোবাইল ওয়াইমাক্স (Mobile WiMAX) বা এলটিই LTE (Long-Term Evolution) বলা হয়ে থাকে। ৪জি দিয়েই কিন্তু শেষ নয়, ৫জি প্রযুক্তি বর্তমানে উন্নতিকরণ করা হয়ে গেছে এবং আশা করা যায় ২০২০ সালের মধ্যে আমরা তা ব্যবহার করতে পারবো।
মোবাইল ব্রডব্যান্ড আপনি দুইভাবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার কাছে যদি একটি নতুন সেলফোন বা স্মার্টফোন থাকে তবে আপনি সেখানে অতি সহজে মোবাইল ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করতে পারবেন—যেখানে মিউজিক ডাউনলোড, ভিডিও ডাউনলোড, চ্যাট, ইমেইল ইত্যাদি সবকিছু করা সম্ভব। এখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রভাইডার রা আপনার কাছে নির্দিষ্ট পরিমানের ডাটা অর্থাৎ মেগাবাইট বা গিগাবাইটের জন্য নির্দিষ্ট কিছু চার্জ করে থাকে।
অনলাইন হওয়ার আরেকটি মাধ্যম হলো আপনার ল্যাপটপে ছোট্ট একটি “ডঙ্গল” (Dongle) ব্যবহার করে—এতে আপনি যেখানেই যান সর্বদা ব্রডব্যান্ডের সাথে যুক্ত থাকতে পারবেন। আপনাকে ব্যাস একটি মোবাইল ডঙ্গল কিনতে হবে (ডঙ্গল হলো ছোট এবং হালকা ওজনের মোডেম, যা ল্যাপটপের ইউএসবি পোর্টের সাথে সম্পর্ক যুক্ত করা হয়)। এই মোডেমটি আপনার পিসিতে চলার জন্য এর ভেতরে আগে থেকেই একটি সফটওয়্যার দেওয়া থাকে যা পিসিতে কানেক্ট করার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্সটল হয়ে যায় এবং কাজ করতে আরম্ভ করে দেয়।
আপনি যেখানেই যান বা থাকুন না কেন, সেখানে যদি ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করার চিন্তা করে থাকেন তবে এটি আপনার জন্য একটি আদর্শ উপায় হতে পারে, আর এতে কোন সন্দেহ নেই। আপনি যেকোনো স্থানে ৩.৫জি বা ৪জি সিগন্যাল পেয়ে যাবেন এবং ভালো স্পীডের ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করতে পারবেন। যেখানে ৩.৫জি বা ৪জি সিগন্যাল নেই সেখানে কমপক্ষে ৩জি সিগন্যাল পেয়ে যাবেন। ৩জি সিগন্যালে হয়তো ৩৫০কেবিপিএস—২এমবিপিএস গতিতে ইন্টারনেট চলবে, কিন্তু তারপরেও এটি ডায়াল আপ ল্যান্ড লাইন কানেকশন থেকে প্রায় ৭ গুন বেশি দ্রুত গতির। যদিও এই গতি গুলো নির্ভর করে থাকে আপনি কোন দেশে বা কোন জায়গাতে অবস্থান করছেন তার উপরে।
মোবাইল ব্রডব্যান্ডে অনেক সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা ও রয়েছে, যা আপনাকে ফেস করতে হতে পারে। এই প্রযুক্তি সেলফোন নেটওয়ার্ক কে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। তাই আপনি যখন ট্রেনে বা বাসে কোথাও ভ্রমন করবেন তখন আপনার ইন্টারনেট লাগাতার কানেক্ট ডিসকানেক্ট হতে পারে। তাছাড়া আপনার লোকেশনে যদি ভালো সিগন্যাল না পাওয়া যায় তবে বারবার ৩.৫জি থেকে ৩জি বা ৩জি থেকে ২জি তে নেটওয়ার্ক সুইচ করতে থাকতে পারে। এতে আপনি নিয়মিত ইন্টারনেট স্পীড পাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন।
তো এতক্ষণে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সম্পর্কে সকল সাধারন তথ্য নিশ্চয় আপনি জেনে গেছেন। যদি আরো বিস্তারিত করে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চান তবে আপনার পছন্দের প্যারাগ্রাফ শুরু হয়ে গেলো এখন থেকে। এবার চলুন ২জি, ৩জি, ৩.৫জি, ৪জি, ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১৯৭০ সালের দিকে মোবাইল টেলিফোন প্রযুক্তি বাজারে চলে এসেছিলো। মানুষ তখন যেখানে ইচ্ছা সেখান থেকে তার মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে একে অপরের সাথে কথা বলতে পারতো। এখন যদি একই ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করে সকলে কল করে তাহলে সকলের কল গুলো একে অন্যের সাথে গুলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিল এবং কল ব্যর্থ হতো। তাই প্রত্যেকটি কলকে আলাদা আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডে বিভক্ত করা হয়েছিলো যাতে আলাদা আলাদা ব্যক্তি সম্পূর্ণ আলাদা লাইন ব্যবহার করে কল করতে পারে।
আর এই সিস্টেমকে বলা হতো—ফ্রিকুয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস (Frequency-division multiple access) বা এফডিএমএ (FDMA)। আর এই পদ্ধতিতেই আগের ফোন গুলো কাজ করতো। এফডিএমএ এর সাধারন অর্থ হলো এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ প্রত্যেকটি কলের জন্য আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করে তাদের কলকে আলাদা রাখবে। এফডিএমএ ফোন গুলো অনেকটা ল্যান্ড লাইন ফোনের মতোই কাজ করতো এবং একে বলা হতো প্রথম-প্রজন্মের ফোন বা ১জি ফোন।
এফডিএমএ প্রযুক্তিতে সবচাইতে বড় অসুবিধা হলো যদি এক এলাকায় একসাথে অনেক মানুষ কথা বলতে শুরু করে তবে প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা ব্যান্ড সরবরাহ করা সম্ভব ছিল না। তাই ইঞ্জিনিয়ারগন আরেকটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন, আর তারা সম্পূর্ণ সিস্টেমটিকে অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির দিকে টেনে নিয়ে আসলেন। এই প্রযুক্তিতে মানুষের ভয়েসের স্যাম্পল নেওয়া হয় এবং ভয়েসকে নাম্বারিক কোডে পরিবর্তন করানো হয়ে থাকে।
এফডিএমএ তে প্রত্যেকটি কলকে আলাদা আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডে বিভক্ত করে পাঠানো হতো। কিন্তু এবার ইঞ্জিনিয়াররা সম্পূর্ণ একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভবন করলেন। তারা প্রত্যেকটি কলের জন্য আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার না করে, আলাদা আলাদা ব্যান্ডে একটি কলকে কিছু সময়ের জন্য প্রচার করার পদ্ধতি নিয়ে আসলো। একটি কল কিছু সময়ের জন্য আলাদা আলাদা ব্যান্ডে একই ফ্রিকুয়েন্সি প্রচার হয়, এতে একসাথে অনেক কল সরবরাহ করা সম্ভব হয়ে উঠে। আর এই প্রযুক্তিকে বলা হয়ে থাকে “টাইম-ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস” (Time-divison multiple access) বা টিডিএমএ (TDMA)। জিএসএম (GSM) নির্ভর মোবাইল নেটওয়ার্ক গুলো প্রত্যেকে টিডিএমএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আর এই ফোন গুলোকে ২জি ফোন বলা হয়ে থাকে।
টিডিএমএ প্রযুক্তিকে একদম পারফেক্ট বলা যাবে না—কেনোনা যদি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী অনেক দ্রুতগতিতে বেড়ে যায় তাহলে এই প্রযুক্তিতেও কল কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যাবে এবং অসংখ্য কল সরবরাহ করতে গিয়ে নেটওয়ার্ক ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই এবার ইঞ্জিনিয়াররা আবারো ভাবতে আরম্ভ করলো যে, কীভাবে আরো ইউজারকে একসাথে সিস্টেমের আয়তায় আনা যায়। আর এবার তারা যে সিস্টেম তৈরি করলো তার নাম হলো “কোড-ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাক্সেস” (Code-divison multiple access) বা সিডিএমএ (CDMA)। সিডিএমএ আসলে সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি নয়, এটি এফডিএমএ এবং টিডিএমএ এর উপকরন দিয়েই তৈরি।
এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি কলকে একটি আলাদা কোডে পরিণত করে ছেড়ে দেওয়া হয়, এবং এই কোডে—কলটি কোথা থেকে আসছে বা কলটি কোথাই যাচ্ছে ইত্যাদি সকল তথ্য দেওয়া থাকে। এই সিস্টেমটি প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কাজ করে, যা যেকোনো কানেকশন তৈরির জন্য উপযোগী একটি পদ্ধতি। সাধারন সিডিএমএ আরেকটি সিস্টেমের সাথে জড়িত হয়ে আরেকটি উন্নত সিস্টেম তৈরি করেছে যাকে ওয়াইড ব্যান্ড সিডিএমএ বা (WCDMA) বলা হয়ে থাকে। WCDMA হলো তৃতীয়-প্রজন্ম মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ৩জি এর উদাহরণ। ৩জি নেটওয়ার্ক কে UMTS বলা হয়ে থাকে।
সাধারন সিডিএমএ কল করা, এসএমএস সেন্ড করার জন্য আদর্শ নেটওয়ার্ক। কিন্তু এটি ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার জন্য তেমন একটা আদর্শ নয়। যাই হোক, ইন্টারনেট অ্যাক্সেসে কিন্তু একসাথে দুইটি কাজ হতে থাকে। যেমন আপনার কম্পিউটার সর্বদা সার্ভারকে রিকোয়েস্ট করতে থাকে এবং সার্ভার থেকে পেজ নিতে থাকে। এবং প্রত্যেক সময় আপনি যতটা তথ্য সার্ভারের কাছে আপলোড করেন তার চেয়ে বেশি তথ্য আপনি সার্ভার থেকে ডাউনলোড করেন।
আপনার ঘরের দ্রুতগতির ল্যান্ড লাইন ব্রডব্যান্ডে একসাথে দুইটি কানেকশান থাকে, একটি দিয়ে আপনি কোথা বলেন আর আরেকটি সর্বদা ডাটা আপলোড আর ডাউনলোড করতে থাকে। যেহেতু দুই কাজের জন্য আলাদা লাইন ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাই এর গতি এবং দক্ষতা বেশি হয়ে থাকে। তবে চিন্তার কোন কারন নেই সিডিএমএ তে এই সমস্যাটি দূর করার জন্য চলে আসে HSDPA যা দ্রুতগতির মোবাইল ব্রডব্যান্ড নামে পরিচিত। এই নেটওয়ার্ক কে মূলত দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করার জন্য উন্নতি করা হয়েছে।
৩.৫জি কে বিভিন্ন পথে কাজ করার জন্য অপটিমাইজ করা হয়েছে। প্রথমটির নাম হলো “এডিএসএল” (ADSL)—এটি অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন একটি ডাউনলোড চ্যানেল HS-DSCH (High Speed Downlink Shared Channel) এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, যেটি একসাথে একই সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমানের ইউজারকে ডাটা ডাউনলোড করার সুবিধা প্রদান করে। এছাড়াও HSDPA এর আরো গুরুত্বপূর্ণ তিনটি ফিচার রয়েছে। তারা যথাক্রমে, AMC (adaptive modulation and coding), Fast basestation scheduling (BTS), এবং Fast retransmissions with incremental redundancy. তো এগুলো কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
যাই হোক, এই সকল ফিচার গুলো একত্রে নিয়ে একসাথে অনেক ইউজারকে অনেক বেশি ডাটা অনেক বেশি গতিতে সরবরাহ করা সম্ভব। আর যেহেতু এই প্রযুক্তি ৩জি থেকে উন্নত তাই একে ৩.৫জি বলা হয়।
HSDPA অলরেডি 24–42 Mbps ডাটা সরবরাহ করতে সক্ষম, কিন্তু লেটেস্ট ৪জি প্রযুক্তি 50Mbps–100Mbps ডাটা সরবরাহ করতে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। সুতরাং ৪জি হলো ৩জি থেকে প্রায় ১০–৫০ গুন বেশি দ্রুতগতি সম্পন্ন। কিন্তু কোন প্রযুক্তির ব্যবহারে ৪জি কে ৩.৫জি বা ৩জি থেকে উন্নত করে তুলেছে? অনেক গুলো ব্যাপার রয়েছে যা ৪জি কে এতো উন্নত করে তুলতে সাহায্য করেছে, এর মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হলো সিডিএমএ কে পরিবর্তন করে ওএফডিএমএ (OFDMA) Orthogonal frequency-division multiple access আনা হয়েছে। যা আরো বেশি দক্ষ একটি প্রযুক্তি এবং এটি আরো ভালো ফ্রিকুয়েন্সি স্পেকট্রাম তৈরি করতে পারে।
এই প্রযুক্তিতে প্রত্যেকটি সিগন্যালকে আলাদা বিটে এবং আলাদা কোডে বিভক্ত করে পাঠানো হয়, এবং অবশ্যই ভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করে পাঠানো হয়ে থাকে। এটি অতি দ্রুতগতিতে প্যাকেট সেন্ড ও রিসিভ করতে পারে। আর এই উন্নত প্রযুক্তির ফলেই একে বানিয়েছে পৃথিবীর সবচাইতে উন্নত নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি।
অবশ্যই আমরা সারাজীবন ৪জি নিয়ে পড়ে থাকবো না। সেলফোন প্রস্তুতকারী কোম্পানিরা প্রত্যেক বছর তাদের নতুন স্মার্টফোনে নতুন নতুন পরিবর্তন নিয়ে আসছে। যার জন্য আমাদের ভালো, আর আরো উন্নত ডাউনলোড গতি আর ইন্টারনেট সেবা পেতে নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকেও উন্নতি করানো প্রয়োজন। ৫জি প্রযুক্তির প্রদান লক্ষ্য হলো একসাথে অত্যাধিক মানুষ এবং ইন্টারনেট অফ থিংগস গুলোকে একত্র করানো, ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে।
৫জি প্রযুক্তি ৪জি বা ৩জি থেকে আরো বেশি দক্ষ এবং দ্রুতগতির হবে, এতে কোনই সন্দেহ নেই। এই প্রযুক্তিকে আরো উন্নত বানানোর জন্য এর রেডিও সিগন্যালের ওয়েভলেন্থ কমানো হবে এবং ফ্রিকুয়েন্সি অনেক গুন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে রাডার এবং মেলিটারিতে যে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেই ফ্রিকুয়েন্সি ৫জি প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হবে। এই অবস্থায় ৫জি আসলে ঠিক কীভাবে কাজ করবে তা ঠিকঠাক বলতে পারা মুশকিল, কেনোনা এই প্রযুক্তির এখনো অনেক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। আমি যখনই জানতে পারবো, এখানে তা যুক্ত করে দেবো।
আশা করছি বন্ধুরা মোবাইল ব্রডব্যান্ড এবং বিভিন্ন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সম্পর্কে আপনারা একদম গোঁড়া থেকে অ্যাডভান্স লেভেল পর্যন্ত জেনেছেন—এবং পরিষ্কার হয়েছেন যে, এরা কীভাবে কাজ করে আর কীভাবে এরা একে অপরের চেয়ে উন্নত হতে পারে। আশা করছি আজকের সকল তথ্য গুলো আপনাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আপনাদের যেকোনো মতামত প্রকাশের জন্য অবশ্যই আমাকে নিচে টিউমেন্ট করে জানাবেন, এবং টিউনটি অবশ্যই শেয়ার করবেন। আপনার ব্লগে বা ওয়েবসাইটে শেয়ার করার সময় ক্রেডিট দিতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ
পূর্বে প্রকাশিত- https://bn.techubs.net
আমি তাহমিদ বোরহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 177 টি টিউন ও 680 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 43 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি তাহমিদ বোরহান। টেক নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে ভালোবাসি। টেকটিউন্স সহ নিজের কিছু টেক ব্লগ লিখি। TecHubs ব্লগ এবং TecHubs TV ইউটিউব চ্যানেল হলো আমার প্যাশন, তাই এখানে কিছু অসাধারণ করারই চেষ্টা করি!
সুন্দর একটি টিউন । ধন্যবাদ